আপনি পড়ছেন

ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণের শর্ত হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে দুটি জিনিস চায় সৌদি আরব। প্রথমত- সৌদি আরবে বেসামরিক পারমাণবিক কর্মসূচি উন্নয়নে যুক্তরাষ্ট্রকে সহযোগিতা করতে হবে। পাশাপাশি মার্কিন সরকারকে সৌদি আরবের নিরাপত্তার গ্যারান্টি দিতে হবে। ওয়াশিংটন ও রিয়াদের মধ্যকার যোগাযোগ সম্পর্কে ওয়াকিবহাল সূত্রগুলো এ তথ্য জানিয়েছে। খবর নিউইয়র্ক টাইমস।

joe biden and mohammed bin salman
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান

সৌদি আরবের শর্ত পূরণ করলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আরব বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী দেশটির সঙ্গে ইসরায়েলের সম্পর্ককে নতুন চেহারা দেওয়ার নাটকীয় সুযোগ পাবেন। একইসঙ্গে তিনি ট্রাম্প আমলের আব্রাহাম চুক্তিকে এগিয়ে নেওয়ার যে প্রতিশ্রুতি নির্বাচনী প্রচারণায় দিয়েছিলেন, তা পূরণ করতে পারবেন।

সৌদির সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণ হলে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনজামিন নেতানিয়াহু সবচেয়ে কট্টর বৈরী ইরানের বিরুদ্ধে হাত মেলানোর কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যটি পূরণ করতে পারবেন।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, সৌদির সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক হলে ইসরায়েলের আঞ্চলিক জোট জোরদার হবে এবং ফিলিস্তিনি ইস্যু তুলনামূলক কম গুরুত্বের জায়গায় চলে যাবে।

সৌদি কর্মকর্তারা বিভিন্ন সময়ে বলেছেন যে, একটি ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র হবার আগে তারা ইসরায়েলের সঙ্গে স্বাভাবিক সম্পর্ক, যার মধ্যে আনুষ্ঠানিক কূটনৈতিক যোগাযোগ প্রতিষ্ঠা, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সংক্রান্ত চুক্তির মতো বিষয় রয়েছে, তেমন সম্পর্কে জড়াতে পারবেন না। তবে আলোচনার বিষয়ে অবহিত সূত্রগুলো জানিয়েছে, সৌদিরা, যারা ইসরায়েলের সঙ্গে অনানুষ্ঠানিকভাবে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তুলছে, তারা এর (ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র) চেয়ে কমেও রাজি হতে পারে।

ইসরায়েলে সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্টিন ইন্ডিক বলেন, বেশ কয়েকটি কারণে এটা ইন্টারেস্টিং। নেতানিয়াহু তীব্রভাবে সৌদির সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণ চান। তবে কেবল বাইডেন সাহায্য করলেই তিনি এটা পেতে পারেন। এতে করে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হচ্ছে যেখানে বাইডেন নেতানিয়াহুকে বলতে পারেন যে তিনি (নেতানিয়াহু) যদি পশ্চিম তীর ও ও পূর্ব জেরুজালেমে বিস্ফোরক অবস্থা তৈরি করেন, তাহলে সৌদিদের সঙ্গে কিছুই হবে না।

ইন্ডিক আরও বলেন, ইসরায়েল ও সৌদি আরবের সম্পর্কের পূর্ণ স্বাভাবিকীকরণকে বাইডেন মার্কিন স্বার্থ হিসেবেও দেখতে পারেন। বিশেষত এতে করে মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের প্রভাব মোকাবেলা করা সহজ হবে।

তবে সৌদি আরবের শর্তে কিছু সমস্যাও আছে। প্রথমত, মার্কিন কর্মকর্তারা বহুদিন ধরে সৌদি আরবের বেসামরিক পারমাণবিক কর্মসূচির প্রয়াস নিয়ে চিন্তিত। তাদের ভয় হলো, বেসামরিক পারমাণবিক কর্মসূচি সৌদি আরবের লক্ষ্যের প্রথম ধাপ হতে পারে। কেননা, সম্ভাব্য পারমাণবিক শক্তিধর ইরানের বিরুদ্ধে নিশ্চয়তা হিসেবে সৌদিরা একপর্যায়ে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির পথে এগোতে পারে।

এছাড়া সৌদিরা কি ধরনের নিরাপত্তা গ্যারান্টি চায়, নিরাপত্তা চুক্তিতে কি কি শর্ত থাকবে, তা এখনো স্পষ্ট নয়। তবে সূত্রগুলো বলছে, সৌদিরা যে নিরাপত্তা গ্যারান্টি চুক্তি চায় সেটা ন্যাটো দেশগুলোর মতো পারস্পরিক নিশ্চয়তা চুক্তি হবে না।

সৌদিদের শর্তের বিষয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়ে মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের একজন মুখপাত্র বলেছেন, বাইডেন প্রশাসন সবসময় ইসরায়েল ও তার আঞ্চলিক প্রতিবেশীদের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক চায়, যার মধ্যে সৌদি আরবও রয়েছে।

এ বিষয়ে ওয়াশিংটনের ইসরায়েলি দূতাবাসের কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে দেশটির প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু প্রায়শ সৌদির সঙ্গে সম্পর্কের আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। গত মঙ্গলবার ইতালির দৈনিক রিপাবলিকার সঙ্গে সাক্ষাৎকারেও তিনি বলেছেন, আমি নিশ্চিতভাবে বিশ্বাস করি যে আমাদের সঙ্গে সৌদিদের শান্তিচুক্তি ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে চুক্তির পথ সুগম করবে।

আলোচনার বিষয়ে জানতে চাইলে ওয়াশিংটনে সৌদি দূতাবাস কোনো প্রশ্নের জবাব দিতে রাজি হয়নি। তবে একজন সৌদি কর্মকর্তা বলেছেন, যে চেকলিস্ট দেওয়া হয়েছে, সেটাকে সিরিয়াসলি নিতে হবে, যদিও সৌদি আরব এখনো ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণকে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার শর্তাধীন মনে করে।

পুরো বিষয়টি সম্পর্কে অবহিত দুটি সূত্র বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রের তরফ থেকে আলোচনা করছেন জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকা বিষয়ক সমন্বয়ক ব্রেট ম্যাকগার্ক ও জো বাইডেনের বৈশ্বিক জ্বালানি বিষয়ক শীর্ষ সহযোগী ইসরায়েলি বংশোদ্ভূত আমোস হচস্টাইন।

অন্যদিকে সৌদি আরবের পক্ষে আলোচনায় যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান সরাসরি ভূমিকা রাখলেও তার চেয়ে সক্রিয় যোগাযোগ রক্ষাকারী হিসেবে রয়েছেন ওয়াশিংটনে সৌদি রাষ্ট্রদূত প্রিন্সেস রীমা বিনতে বন্দর আল সউদ।

গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...

খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর

Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.

Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.