পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা এড়াতে ক্রিপ্টোকারেন্সির আশ্রয় নিচ্ছে রাশিয়া!

পশ্চিমা বিশ্বের কঠোর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার জাল ছিন্ন করে চীন ও ভারতের সঙ্গে তেল বাণিজ্য চালিয়ে যেতে ক্রিপ্টোকারেন্সির ব্যবহার শুরু করেছে রাশিয়া। আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের চারটি সূত্রের বরাত দিয়ে এই তথ্য জানানো হয়েছে। এই পদক্ষেপ রাশিয়ার অর্থনীতিতে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার প্রভাবকে কিছুটা হলেও প্রশমিত করতে সহায়তা করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

রাশিয়ার তেল বাণিজ্যে ব্যবহার করা হচ্ছে ক্রিপ্টোকারেন্সি

যদিও রাশিয়া গত গ্রীষ্মে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে ডিজিটাল মুদ্রার ব্যবহার অনুমোদন করে একটি আইন পাস করেছিল, তেল বাণিজ্যের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ খাতে এর ব্যবহার এর আগে দেখা যায়নি। বিষয়টির সংবেদনশীলতার কারণে সূত্রগুলো নাম প্রকাশে অনিচ্ছা প্রকাশ করেছে।

সূত্রগুলো জানিয়েছে, বেশ কিছু রাশিয়ান তেল কোম্পানি চীনের ইউয়ান এবং ভারতীয় রুপিকে রাশিয়ান রুবলে রূপান্তর করতে বিটকয়েন, ইথার এবং টেদারের মতো স্টেবলকয়েন ব্যবহার করছে। বর্তমানে রাশিয়ার সামগ্রিক তেল বাণিজ্যের একটি ছোট অংশে ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যবহৃত হলেও এর ব্যবহার ক্রমশ বাড়ছে। আন্তর্জাতিক শক্তি সংস্থা (আইইএ) এর তথ্য অনুযায়ী, গত বছর রাশিয়ার তেল বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল প্রায় ১৯২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।

একইভাবে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার মুখে থাকা ইরান ও ভেনিজুয়েলার মতো দেশগুলোও তাদের অর্থনীতি চালু রাখতে এবং বৈশ্বিক তেল বাজারে ডলারের ব্যবহার এড়াতে ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যবহার করে আসছে। রাশিয়া ভেনিজুয়েলার পদাঙ্ক অনুসরণ করছে, যারা ওয়াশিংটনের পুনর্নিষেধাজ্ঞার পর তেল ও জ্বালানি রপ্তানিতে ডিজিটাল মুদ্রার ব্যবহার শুরু করে।

নিষেধাজ্ঞা এড়াতে ক্রিপ্টোকারেন্সির ব্যবহার অনুসন্ধানকারী একটি সংস্থার গবেষক জানিয়েছেন, রাশিয়া ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যবহারের বিভিন্ন কৌশল উদ্ভাবন করেছে এবং টেদার (ইউএসডিটি) সেগুলোর মধ্যে অন্যতম। রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।

এই বাণিজ্য কীভাবে কার্যকর হয় তার একটি উদাহরণ হলো: রাশিয়ান তেলের একজন চীনা ক্রেতা একটি ট্রেডিং কোম্পানিকে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে অফশোর অ্যাকাউন্টে ইউয়ান প্রদান করে। মধ্যস্থতাকারী এই ইউয়ান ক্রিপ্টোকারেন্সিতে রূপান্তর করে এবং অন্য একটি অফশোর অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করে। সেখান থেকে এটি রাশিয়ার আরেকটি অ্যাকাউন্টে পাঠানো হয় এবং অবশেষে রুবলে রূপান্তরিত হয়।

একটি সূত্র জানিয়েছে, একটি রুশ তেল কোম্পানির চীনের সাথে তেল বাণিজ্যে প্রতি মাসে দশ কোটি ডলারেরও বেশি ক্রিপ্টো লেনদেন হচ্ছে।