নিজ রাজ্যেও পকেট কাটছে আদানি
- Details
- by আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আদানি গ্রুপের বিদ্যুতের ব্যবসা শুরু হয় গুজরাটে। নরেন্দ্র মোদি মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালে গুজরাটে কুইক রেন্টাল বিদ্যুত বিক্রির চুক্তি করে আদানি পাওয়ার। দুই বছরে বিদ্যুতের দাম বাড়িয়ে তিনগুণ করা এবং চড়া ক্যাপাসিটি চার্জ আদায়ের কারণে এবার সেই আঁতুড়ঘরেও প্রশ্নের মুখে পড়েছে প্রতিষ্ঠানটি। খবর ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।
দুই বছরের ব্যবধানে তিনগুণ হয়েছে গুজরাটে আদানির বিদ্যুতের দাম
আদানি গ্রুপের বিদ্যুতের দাম এবং প্রতিষ্ঠানটিকে বিদ্যুতকেন্দ্রের ক্যাপাসিটি চার্জ বাবদ রাজ্য সরকারের দেওয়া অর্থের পরিমাণ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন রাজনীতিকরা। অন্যান্য কুইক রেন্টাল বিদ্যুতকেন্দ্রের তুলনায় দাম বেশি হওয়া সত্ত্বেও কেন আদানি গ্রুপ থেকে বিদ্যুত কেনার পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে, তা জানতে চেয়েছে বিরোধীদল।
গুজরাট বিধানসভায় বিজেপি-দলীয় রাজ্য সরকারের দেওয়া জবাবে জানা যায়, ২০২১ সালের জানুয়ারি মাসে আদানি পাওয়ার থেকে কেনা প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম ছিল ২ রুপি ৮৩ পয়সা। ২০২২ সালের ডিসেম্বর নাগাদ আদানির প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম আদায় করা হয় ৮ রুপি ৮৩ পয়সা। এ হিসাবে দুই বছরে তিনগুন হয়েছে আদানি পাওয়ারের বিদ্যুতের দাম।
আম আদমি পার্টির এমএলএ হেমন্ত আহিরের এক প্রশ্নের জবাবে বিজেপি সরকার জানিয়েছে, ২০২১ সালের তুলনায় ২০২২ সালে আদানি পাওয়ার থেকে বিদ্যুত কেনার পরিমাণ ৭ দশমিক ৫ শতাংশ বেড়েছে। ২০২১ সালে আদানি পাওয়ার থেকে কেনা হয় ৫ হাজার ৫৮৭ মিলিয়ন (৫৫৮ কোটি ৭০ লাখ) ইউনিট বিদ্যুত। ২০২২ সালে একই প্রতিষ্ঠান থেকে কেনা হয় ৬০০ কোটি ৭০ লাখ ইউনিট বিদ্যুত।
বিধানসভায় প্রশ্নোত্তর পর্বে বেরিয়ে এসেছে যে, আদানি গ্রুপ গুজরাট সরকারের সঙ্গে স্বাক্ষরিত ২৫ বছরের বিদ্যুত ক্রয় চুক্তিতে (পিপিএ) উল্লিখিত মূল্যের চেয়ে বেশি দাম আদায় করছে। গুজরাট সরকার বিষয়টি স্বীকার করেছে।
রাজ্যের বিদ্যুত মন্ত্রী জানিয়েছে, ২০০৭ সালে আদানি পাওয়ার যে চুক্তি করেছে তাতে ২৫ বছর প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম ২ রুপি ৩৫ পয়সা থেকে ২ রুপি ৮৯ পয়সার মধ্যে থাকার কথা ছিল। তবে পরবর্তীতে চুক্তিতে পরিবর্তন এনে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়।
এক প্রশ্নের লিখিত জবাবে গুজরাট সরকার বলেছে, আদানির বিদ্যুতকেন্দ্র ইন্দোনেশিয়া থেকে কেনা কয়লার ওপর নির্ভরশীল ছিল। ২০১১ সালের পর কয়লার দাম অপ্রত্যাশিতভাবে বেড়ে যাওয়ায় আদানি পাওয়ার বিদ্যুত উৎপাদন করতে পারছিল না। বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে রাজ্য সরকার একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিটি গঠন করে। ওই কমিটি বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধির সুপারিশ করে।
কমিটির সুপারিশ আমলে নিয়ে গুজরাট সরকার বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির অনুমোদন দিয়ে একটি প্রস্তাবনা জারি করে। এরপর ২০১৮ সালের ৫ ডিসেম্বর রাজ্য সরকার আদানি পাওয়ারের সঙ্গে একটি সম্পূরক চুক্তি করে। এরইমধ্যে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করলে প্রতি ইউনিট বিদ্যুত ৪ রুপি ৫০ পয়সা ফিক্সড দরে কেনার এবং কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী ক্যাপাসিটি চার্জ পরিশোধের সিদ্ধান্ত হয়।
রাজ্য সরকার দাবি করেছে, আদানি পাওয়ার থেকে বেশি দামে বিদ্যুত কেনা হলেও ভোক্তাদের কাছ থেকে আগের দামই আদায় করা হচ্ছে। সেক্ষেত্রে সরকার অতিরিক্ত খরচ কিভাবে পুষিয়ে নিচ্ছে, জানতে চাইলে একজন বিশেষজ্ঞ বলেন, সরকার ফুয়েল অ্যান্ড পাওয়ার পারচেজ প্রাইস অ্যাডজাস্টমেন্ট (এফপিপিপিএ) মাশুল বাড়িয়ে মানুষের পকেট থেকেই অতিরিক্ত অর্থ আদায় করে নিচ্ছে।
তিনি বলেন, বিদ্যুতের ট্যারিফে সবার নজর থাকে বলে সেখানে হাত দেওয়া হচ্ছে না। তবে আবাসিক গ্রাহকদের প্রতিবারের বিলে যে এফপিপিপিএ মাশুল থাকে, সেটা বারবার নিরবে বাড়িয়ে চলেছে সরকার। ২০২১ ও ২০২২ সালের মধ্যে এফপিপিপিএ আটবার বাড়ানো হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, সর্বশেষ গত জানুয়ারি মাসে বিধানসভা নির্বাচন শেষের পর আবারও এফপিপিপিএ মাশুল বাড়ানো হয়েছে। ২০২১ সালের এপ্রিলে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতে এফপিপিপিএ মাশুল ছিল ১ রুপি ৮০ পয়সা। এখন প্রতি ইউনিটে এফপিপিপিএ মাশুল আদায় করা হচ্ছে ২ রুপি ৮৫ পয়সা।
গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...
খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর
Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.
Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.