বিপিএল টিম রিভিউ: ঢাকার পকেটভরা 'ডায়নামাইটস'

আর মাত্র দুদিন। এরপরই মাঠে গড়াতে যাচ্ছে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) পঞ্চম আসর। নামতে থাকা শীতের সময়ে উত্তাপ ছড়াতে এরই মধ্যে বিপিএলের দলগুলো সম্পন্ন করেছে তাদের প্রস্তুতি। দেশের ক্রিকেটাররা তো বটেই, বিদেশি ক্রিকেটাররাও চরম উত্তেজনা নিয়ে অপেক্ষা করছেন বিপিএলের জন্য। বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে থাকা ক্রিকেট সমর্থকরাও চোখ মেলে আছেন বাংলাদেশের দিকে।

বিপিএলে এবার খেলছে সাতটি দল। অন্য যে কোনো আসরের তুলনায় এবারের বিপিএল হতে যাচ্ছে অনেক বেশি প্রতিদ্বন্দিতাপূর্ণ। কারণ প্রথমবারের মতো এমন কিছু তারকা ক্রিকেটার আসছেন বিপিএলে, যারা আগে আসেননি। আসর শুরুর আগে দেখে নেয়া যাক কেমন হলো দলগুলো। এই লেখায় থাকছে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ঢাকা ডায়নামাইটসের হালচাল।

বিপিএলের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ঢাকা ডায়নামাইটস এবার গড়েছে ভারসাম্যপূর্ণ দল। যা নিঃসন্দেহে গতবারের চেয়ে বেশি শক্তিশালী। অন্তত কাগজে-কলমে তাদের মতো শক্তিশালী দল এবার একটা বা দুইটার বেশি নেই। সুতরাং এ কথা বলা মোটেও বাড়াবাড়ি হবে না যে, ঢাকার ধামাকা এবার তাদের ভারসাম্যে।

গত আসরে ঢাকাকে চ্যাম্পিয়ন করার পথে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন তাদের অধিনায়ক কুমার সাঙ্গাকারা। এবারও তিনি আছেন দলে। আছেন সাকিব আল হাসানও। মূলত এ দুজনকে কেন্দ্র করেই আবর্তিত হতে পারে ঢাকার সাফল্য-ব্যর্থতা।

গত আসরে যে কজন ব্যাটসম্যান ৩০০-এর উপরে রান তুলেছিলেন, তাদের মধ্যে তিনজনই আছেন ঢাকার এবারের দলে। গতবার ব্যাট হাতে নিয়মিত পারফর্ম করে যাওয়া ক্রিকেটারদের ছাড়েনি ঢাকা কর্তৃপক্ষ। তারা হলেন কুমার সাঙ্গাকারা, মেহেদি মারুফ ও মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত।

এদের মধ্যে মোসাদ্দেকের এবারের বিপিএল খেলা অনিশ্চিত ছিলো। চোখের রেটিনায় ভাইরাস সংক্রমণজনিত অসুস্থতার কারণে দীর্ঘদিন ধরে মাঠের বাইরে ছিলেন তিনি। তবে খুশির খবর হলো কুমার সাঙ্গাকারা ও মেহেদি মারুফের সঙ্গে খেলার জন্য এখন প্রস্তুত এই ব্যাটসম্যান।

এদের সঙ্গে এবার যোগ দিচ্ছেন এভিন লুইস ও কেভন কুপারের মতো বিধ্বংসী ব্যাটসম্যানরা। আছেন নাদিফ চৌধুরীর মতো স্থানীয় হার্ডহিটার। আছেন ঘরোয়া ক্রিকেটের অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান জহুরুল ইসলাম অমি। 

গত আসরে ঢাকাকে বল হাতে অনেক দূর এগিয়ে দিয়েছিলেন ডোয়াইন ব্রাভো। কিন্তু দুর্ভাগ্যবসত এবার তাকে পাচ্ছে না ঢাকা। ডোয়াইন ব্রাভো ঢাকাকে চ্যাম্পিয়ন করানোর পথে নিয়েছিলেন ২১ উইকেট। ব্রাভো না থাকলেও ঢাকা গত আসরের মতো এবারও পাচ্ছে মোহাম্মদ শহিদ ও সাকিব আল হাসানকে। গত আসরে এ দুজন ছিলেন ঢাকার দ্বিতীয় ও তৃতীয় সেরা বোলার।

শহিদ ও সাকিবের সঙ্গে ঢাকার বোলিং লাইনে ঝড় তোলার জন্য স্থানীয়দের মধ্যে আছেন আছেন আবু হায়দার রনি, সাকলাইন সজিবরা। রনি ২০১৫ সালে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকে চ্যাম্পিয়ন করানোর পথে বল হাতে চমকে দিয়েছিলেন সবাইকে। বিদেশিদের মধ্যে পাকিস্তানি পেস সেনসেশন মোহাম্মদ আমির ও ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান স্পিন জাদুকর সুনিল নারিনও ঢাকার বোলিং আক্রমণে যোগ করেছেন বাড়তি মাত্রা।

এদের বাইরে আছেন শেন ওয়াটসন, শহিদ আফ্রিদি, ক্যামেরন ডেলপর্ট, গ্রায়েম ক্রেমাররাও। শেন ওয়াটসনের বিপিএল খেলা অবশ্য পড়ে গেছে সংশয়ের মধ্যে। ইনজুরির কারণে হয়তো শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশে আসতে পারবেন না তিনি। সব মিলিয়ে শক্তির বিচারে ঢাকা ডায়নামাইটস এবার যথেষ্ট ভারসাম্যপূর্ণ দল। সব মিলিয়ে 'ডায়নামাইটসে' ভরপুর এক দলই পেয়েছেন কোচ খালেদ মাহমুদ সুজন। 

বিপিএল ২০১৭-এ ঢাকা ডায়নামাইটসের স্কোয়াড

সাকিব আল হাসান, কুমার সাঙ্গাকারা, ক্যামেরন ডেলপর্ট, শেন ওয়াটসন, এভিন লুইস, কেভন কুপার, রোভমান পাওয়েল, রনসফোর্ড বিটন, সুনিল নারিন, শহিদ আফ্রিদি, গ্রায়েম ক্রেমার, মোহাম্মদ আমির, শিহান আফ্রিদি, মেহেদি মারুফ, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, আবু হায়দার রনি, মোহাম্মদ শহিদ, জহুরুল ইসলাম অমি, নাদিফ চৌধুরী, সাকলাইন সজিব, জো ডেনলি, আকিল হোসেন, খালেদ আহমেদ ও নুর হোসাইন।

ঢাকার খেলা কবে কখন

চার নভেম্বর, বেলা দুইটা। প্রতিপক্ষ: সিলেট সিক্সার্স, ভেন্যু: সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়াম, সিলেট।
পাঁচ নভেম্বর, সন্ধ্যা সাতটা। প্রতিপক্ষ: খুলনা টাইটান্স, ভেন্যু: সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়াম, সিলেট। 
১১ নভেম্বর, সন্ধ্যা সাতটা। প্রতিপক্ষ: সিলেট সিক্সার্স, ভেন্যু: শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়াম, ঢাকা। 
১৪ নভেম্বর, বেলা দুইটা। প্রতিপক্ষ: খুলনা টাইটান্স, ভেন্যু: শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়াম, ঢাকা। 
১৫ নভেম্বর, সন্ধ্যা সাতটা। প্রতিপক্ষ: চিটাগং ভাইকিংস, ভেন্যু: শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়াম, ঢাকা। 
৮ নভেম্বর, বেলা দুইটা। প্রতিপক্ষ: রাজশাহী কিংস, ভেন্যু: শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়াম, ঢাকা।
২০ নভেম্বর, বেলা দুইটা। প্রতিপক্ষ: কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স, ভেন্যু: শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়াম, ঢাকা। 
২১ নভেম্বর, সন্ধ্যা সাতটা। প্রতিপক্ষ: রংপুর রাইডার্স, ভেন্যু: শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়াম, ঢাকা।
২৭ নভেম্বর, বেলা দুইটা। প্রতিপক্ষ: চিটাগং ভাইকিংস, ভেন্যু: জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়াম, চট্টগ্রাম।
২৯ নভেম্বর, সন্ধ্যা সাতটা। প্রতিপক্ষ: কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স, ভেন্যু: জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়াম, চট্টগ্রাম।
দুই ডিসেম্বর, সন্ধ্যা সাতটা। প্রতিপক্ষ: রাজশাহী কিংস, ভেন্যু: শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়াম, ঢাকা।
ছয় ডিসেম্বর, বেলা দুইটা। প্রতিপক্ষ: রংপুর রাইডার্স, ভেন্যু: শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়াম, ঢাকা।