সাত সিরিজ পর ফের হোয়াইটওয়াশের লজ্জা

২০১৪ সালের আগস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে গিয়ে হোয়াইটওয়াশের লজ্জা পেয়েছিলেন মুশফিকুর রহিমরা। তারপর একে একে খেলা হয়েছে সাতটি সিরিজ। দেশের মাটিতে হওয়া সিরিজগুলোর ছয়টিতেই জিতেছে বাংলাদেশ। এর মধ্যে প্রতিপক্ষকে হোয়াইটওয়াশ করার কীর্তিও আছে। এবার মাশরাফি ও তার দলকে পেতে হলো হোয়াইটওয়াশের লজ্জা- সাত সিরিজ পর।

নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে আজ ওয়ানডে সিরিজের শেষ ম্যাচে আট উইকেটে হেরেছে বাংলাদেশ। তামিম- ইমরুলদের করা ২৩৭ রানের লক্ষ্য ৪১.২ ওভারে পেরিয়ে গেছে স্বাগতিকরা। সর্বোচ্চ ৯৭ রান করেছেন নিল ব্রুম। গত ম্যাচে তিনি ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি করেছিলেন। আজ পেয়ে যেতে পারতেন দ্বিতীয়টি। কিন্তু মোস্তাফিজের কাটারে তা আর সম্ভব হয়নি। কিউইদের পতন হওয়া দুই উইকেটের উভয়টি নিয়েছেন মোস্তাফিজই।

২৩৭ রান তাড়া করতে নেমে দলীয় ১০ রানেই প্রথম উইকেট হারায় নিউজিল্যান্ড। মোস্তাফিজের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফেরেন প্রথম ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান টম ল্যাথাম। তখন মনে হয়েছিলো মোস্তাফিজের ফেরার দিনে হয়তো হোয়াইটওয়াশের লজ্জা এড়াবে বাংলাদেশ। কিন্তু তা হলো না।
দ্বিতীয় উইকেটে কেন উইলিয়ামসন ও নিল ব্রুম ১৭৯ রানের জুটি গড়েন। বাংলাদেশ ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় এ দুইজনের কৃতিত্বের কারণেই। ব্রুম ৯৭ করে আউট হন আর উইলিয়ামসন অপরাজিত থাকেন ৯৫ রান করে।

এর আগে ওপেনিং জুটিতে সেঞ্চুরি করেন তামিম ও ইমরুল। যা কিউইদের বিপক্ষে বাংলাদেশের দ্বিতীয় ওপেনিং জুটির সেঞ্চুরি। তামিম- ইমরুলের জুটিতে বড় স্কোরের স্বপ্ন দেখছিলো বাংলাদেশ। কিন্তু ১০১ রানে জুটি ভাঙার পর ৭৮ রানের মধ্যে পড়ে যায় মোট সাত উইকেট। এক সময় মনে হচ্ছিলো ২০০ রানই হবে না।

কিন্তু মুশফিকের বিকল্প হিসেবে দলে আসা সোহান ৩৯ বলে ৪৪ রানের ইনিংস খেলে দলকে মোটামুটি মাঝারি মানের একটি স্কোর এনে দেন। একই সঙ্গে মুশফিকের বিকল্প হিসেবে কতোটা যোগ্য, এই প্রশ্নটাও আপাতত আড়াল করে দেন সোহান।

এ দিন ব্যাট হাতে আবার ব্যর্থ হন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। সাব্বির বড় কিছুর ইঙ্গিত দিলেও আউট হন ১৪ বলে ১৯ রান করে। সাকিব- মোসাদ্দেক করতে পারেননি কিছুই। তানভির হায়দার আরো একবার ব্যর্থ হন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিজের জাত চেনাতে। ব্যাট হাতে কিছু না করতে পারা তানভির ব্যর্থতার বৃত্ত ভাঙতে পারেননি বোলিংয়েও। দুই ওভারে ২০ রান দেয়ায় তাকে আর বোলিংই দেননি মাশরাফি।

সব মিলিয়ে ওয়ানডে সিরিজটা বাংলাদেশের জন্য ছিলো বিভীষিকাময়। ব্যাটিং- বোলিং বা ফিল্ডিং; কোনো বিভাগেই বাংলাদেশ নিজেদের স্বাভাবিক পারফর্ম করতে পারেনি। আজই যেমন স্লিপে সহজতম ক্যাচ ছেড়েছেন ইমরুল কায়েস। যে ভুলের বিশাল মাশুল দিতে হয়েছে বাংলাদেশকে।

ওয়ানডে সিরিজ শেষে মাশরাফিদের পরবর্তী লক্ষ্য টি-টোয়েন্টি সিরিজ। জানুয়ারির তিন, ছয় ও আট তারিখে তিন টি-টোয়েন্টিতে মাঠে নামবে দুই দল। তারপর দুই দল লড়াই করবে টেস্টে। এই সিরিজে মোট দুটি টেস্ট অনুষ্ঠিত হবে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর
বাংলাদেশ ২৩৬/৯, ওভার ৫০; তামিম ইকবাল ৫৯, নুরুল হাসান সোহান ৪৪; মিচেল স্যান্টন্যার ২/৩৮
নিউজিল্যান্ড ২৩৯/২, ওভার ৪১.২; নিল ব্রুম ৯৭, কেন উইলিয়ামসন ৯৫*; মোস্তাফিজ ২/৩২
ফল: নিউজিল্যান্ড আট উইকেটে জয়ী এবং ৩-০ সিরিজ জয়ী। ম্যাচসেরা: কেন উইলিয়ামসন (৯৫*)।