আকরাম খান: দোষারোপের সংস্কৃতি চাপে ফেলছে ক্রিকেটারদের

দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে দুই টেস্টে বাংলাদেশ দলের ভরাডুবি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা অব্যাহত রয়েছে। স্পিনের বিপক্ষে ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতা সবাইকে পোড়াচ্ছে।

আকরাম খান, ফাইল ছবি

ওয়ানডে সিরিজ জয়ের পর টেস্টে এমন নাজুক পারফরম্যান্সের কারণ খুঁজছেন সবাই। বিসিবির পরিচালক আকরাম খান বুধবার বলেছেন, সিরিজ চলাকালীন বাইরের মন্তব্য ক্রিকেটারদের চাপে ফেলে দিচ্ছে। চালু হয়েছে দোষের সংস্কৃতি। হারলেই কাউকে না কাউকে দোষ দেওয়া হচ্ছে। যা ক্রিকেটারদের উপর চাপ বাড়াচ্ছে।

দক্ষিণ আফ্রিকা টেস্টে বাজে পারফরম্যান্সের কারণ সম্পর্কে বিসিবির এ পরিচালক বুধবার মিরপুর স্টেডিয়ামে বলেছেন, ‘কারণ অনেক চাপ। অনেক ধরনের আলাপ-আলোচনা হয় একটা ম্যাচ হেরে গেলে, একজন আরেকজনকে দোষ দেয়। এই রেওয়াজটা কিন্তু বাংলাদেশ ছাড়া আর অন্য কোথাও নেই, এই সিস্টেমটা নাই। আপনি দেখবেন, খেলার বাইরে আমরা বেশি চিন্তা করি, বেশি কথা বলি।’

ডারবানে প্রথম টেস্ট হারের পর খোদ বিসিবি সভাপতিই টস জিতে আগে বোলিং করার সিদ্ধান্তে সিনিয়রদের ভূমিকার কথা বলেছেন। সিনিয়রদের চাপেই মুমিনুল আগে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন।

সাবেক এ অধিনায়ক বলেছেন, দোষের এই সংস্কৃতি দলের জন্যই খারাপ। আজ তিনি বলেন, ‘আপনি তো একটা ম্যাচ হারতেই পারেন। প্রথম টেস্ট হারার পর দল নিয়ে অনেক নেতিবাচক কথা বলা হয়েছে, শুনতে হয়েছে। এগুলো কিন্তু পরেরটাতে প্রভাব ফেলেছে। আপনি দেখেন, ব্যাটাররা কিন্তু সবাই জানে কি জিনিস করতে হবে, কি জিনিস করতে হবে না। কিন্তু ওখানে গিয়ে যেটা করার না, সেটা করছে। কারণ চাপ, পুরো চাপে পড়ে গিয়েছিল ক্রিকেটাররা। এ জিনিস থেকে আমাদের বের হতে হবে।’

সবাইকে ক্রিকেটে মনোযোগী হতে পরামর্শ দিয়েছেন আকরাম খান। সঙ্গে দুই ধরনের উইকেটে খেলার প্রস্তুতি নিতে বলেছেন ক্রিকেটারদের। বিসিবির এ পরিচালক বলেন, ‘আমার মনে হয়, আমাদের দলে যেসব ক্রিকেটার আছে সবারই মনযোগ দিতে হবে যে কীভাবে আমাদের ক্রিকেটকে এগিয়ে নেওয়া যায়। আমার মনে হয় যে, আমরা ক্রিকেটের চাইতে ক্রিকেটের বাইরের ব্যাপারগুলো নিয়ে বেশি চিন্তিত। কারণ আপনাকে দক্ষ হতে হবে দুই ধরনের উইকেটেই, পেস বোলিং ও টার্নিং উইকেট দুটোতেই। ভাবতে হবে কীভাবে আমাদের দলটাকে উন্নত করবো।’

টেস্টে উন্নতি করতে হলে ওয়ানডের মতোই দলগত পারফরম্যান্স প্রয়োজন। আকরাম খান বলেছেন, ‘দেখেন ওয়ানডে কিন্তু আমরা দল হিসেবে খেলছি। আমরা কিন্তু একজন দুইজনের উপর নির্ভর করি না। সবাই মিলে ভাল, বোলিং, ফিল্ডিং করলে আমরা ফলটা পাই। একই জিনিস আমাদেরকে টেস্টেও করতে হবে। স্বভাবিকভাবেই আপনি একটা ম্যাচে ভালো করতে পারেন, খারাপ করতে পারেন। কিন্তু আমার কাছে মনে হয়, বাইরের কথাগুলো বেশি খেলোয়াড়দের উপর চাপ হয়ে যাচ্ছে। আমার মনে হয়, সবাই যদি খেলায় মনযোগ দেয় তাহলে কিন্তু চাপ পড়বে না। এসব উইকেটেই আমাদের খেলোয়াড়রা ভালো খেলেছে, আবার খারাপ করেছে।’