আরও একবার ত্রাতার ভূমিকায় আফিফ

অভিষেকের হিসাব ধরলে চার বছর। তবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পা রেখে প্রথম ম্যাচ খেলার পরই দল থেকে বাদ পড়েছিলেন আফিফ হোসেন ধ্রুব। ফিরেছেন এক বছর পর। সেদিক থেকে ক্যারিয়ারটা তিন বছরের। এই সময়ে বাংলাদেশের হয়ে ৪১ টি- টোয়েন্টি ও ১২ ওয়ানডে খেলেছেন। দুই ফরম্যাটে হাফ সেঞ্চুরি করেছেন তিনটি।

আফিফ হোসেন ধ্রুব

পুরো ক্যারিয়ারে গভীরভাবে দৃষ্টিপাত করলে স্পষ্ট হয়ে যাবে, আফিফ বরাবরই বিপদের বন্ধু। দল যখন বিপদের অগ্নিগর্ভে তখনই সেরা মুডে বাঁহাতি এ ব্যাটসম্যান। দলের বিপর্যয়ে তার সেরাটা বের হয়ে আসে।

আফিফের ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচ, ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর মাস, মিরপুরে প্রতিপক্ষ জিম্বাবুয়ে। ১৪৫ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে বাংলাদেশ হারিয়েছিল ৬০ রানে ৬ উইকেট। হার যখন দুয়ারে কড়া নাড়ছে তখন বুক চিতিয়ে দাঁড়িয়ে গেলেন আফিফ। মোসাদ্দেককে নিয়ে ৮২ রানের জুটি গড়েন, তুলে নেন প্রথম হাফ সেঞ্চুরি। ২৬ বলে তার বিস্ফোরক ৫২ রানের ইনিংসে জয় পায় বাংলাদেশ।

বিপদগ্রস্ত দলের ত্রাতা আফিফ, এমন আরেকটি উদাহরণ মঞ্চস্থ হয়েছে কিছুদিন আগেই। চট্টগ্রামে আফগানিস্তানের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডেতে ২১৬ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে বাংলাদেশ ৪৫ রানে হারায় ৬ উইকেট। পরাজয় নিশ্চিত ধরে নিয়েছিলেন অনেকে। তখনই প্রতিরোধের সুর তোলেন আফিফ। মিরাজকে নিয়ে সপ্তম উইকেটে ১৭৪ রানের রেকর্ড জুটি গড়েন। অবিশ্বাস্য জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে বাংলাদেশ। আফিফ ১১৫ বলে অপরাজিত ৯৩ রান করেন।

মিরপুর, চট্টগ্রামের সঙ্গে একই সুঁতোয় বেঁধে ফেলা সম্ভব ওয়ান্ডারার্সকে। রোববার দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ৩৪ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে বসে বাংলাদেশ। এবারও ত্রাতার ভূমিকায় আফিফ। মাহমুদউল্লাহ, মিরাজদের নিয়ে দলকে সম্মানজনক স্কোর এনে দিলেন এ বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। যেখানে ১০০ রান নিয়েই শঙ্কায় পড়ে গিয়েছিল গোটা দল, সেখানে বাংলাদেশ তুলেছে ৯ উইকেটে ১৯৪ রান।

মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে ৬০, মিরাজের সঙ্গে ৮৬ রানের জুটি গড়েন আফিফ। ১০৭ বলে দৃষ্টিনন্দন ৭২ রানের ইনিংস খেলে আউট হয়েছেন এ তরুণ। যা তার ওয়ানডে ক্যারিয়ারে দ্বিতীয় হাফ সেঞ্চুরি। দারুণভাবে ইনিংসটা সাজিয়েছেন তিনি। মেরেছেন ৯টি চার। প্রোটিয়া বোলারদের সামলেছেন নিপুণ দক্ষতায়।

তিনটি হাফ সেঞ্চুরিই প্রমাণ করে দল যখন বিপদে, আফিফ তখন ভরসার প্রতীক।