আপনি পড়ছেন

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আফগানিস্তানের সঙ্গে আবারো বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন। তিনি যদি যুক্তরাষ্ট্রের সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণা না দিতেন, তাহলে রাজধানী কাবুল তো দূরের কথা, একটি জেলাও দখল করতে পারতো না তালেবান। বাইডেন এই বলে দায়িত্ব এড়াতে চেয়েছিলেন যে, আফগান বাহিনী যুদ্ধ করতে অস্বীকার করেছে।

us president joe bidenমার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন

কিন্তু পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন সিনেটে সাক্ষ্য দিয়েছিলেন যে, মার্কিন ঠিকাদাররা ছাড়া সবাই চলে গিয়েছিলেন। এ কারণে অস্ত্রসম্ভার অকার্যকর হয়েছিল। তাই এখন আফগানদের দোষারোপ করে বা যুদ্ধের উপায় অস্বীকার করার জন্য কৃতিত্ব চেয়ে- এই দুইটির কোনওটিই করতে পারে না হোয়াইট হাউস।

বাস্তবতা হচ্ছে, আফগানিস্তানে থাকা আমেরিকানদের সহায়তা করতে কয়েক হাজার আফগান জীবনের ঝুঁকি নিয়েছিলেন, তারা পদ্ধতিগতভাবে তালেবানের হাতে বন্দি হয়েছেন, এখনো তাদের বিশেষ অভিবাসন ভিসা প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়নি। এখন স্টেট ডিপার্টমেন্টের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রতিরক্ষা দপ্তর বা যুক্তরাষ্ট্রের ঠিকাদাররা সরবরাহ করতে পারছে না।

বাইডেন এখন আবার আফগানদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করছেন। তালেবানের জয়ের আগে আফগানিস্তানের বেশিরভাগ রিজার্ভ যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাংকগুলোতে জমা রাখা হয়েছিল। গত বছরের আগস্টে ক্ষমতায় আসার পর এই ৭ বিলিয়ন ডলার চেয়েছে তালেবান। চলতি বছরের ১১ ফেব্রুয়ারি বাইডেন ঘোষণা দিয়েছেন, ওই রিজার্ভের অর্ধেক অর্থ ৯/১১ এর সন্ত্রাসী হামলার ভুক্তভোগীদের ক্ষতিপূরণ হিসেবে দেওয়া হবে। বাকি অর্থ আফগান জনগণের কল্যাণে ট্রাস্ট ফান্ডে দেবেন তারা।

সমস্যাটা ঠিক এখানে, ৯/১১ এর ভুক্তভোগীদের জন্য এই সাড়ে ৩ বিলিয়ন ডলার দেওয়ার মানে স্রেফ জোচ্চুরি। নিশ্চিতভাবে আল কায়েদার সন্ত্রাসবাদের ভুক্তভোগীরা ক্ষতিপূরণের দাবি রাখেন। তবে আফগানিস্তানের রিজার্ভই কেবল আফগানদের প্রাপ্য, যারা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে থেকে আল কায়েদা ও তালেবানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছেন।

৯/১১-এর জন্য সব আফগানকে দায়ী করার জন্য বাইডেনের ইচ্ছা বর্ণাবাদী না হলে বাস্তবে ভুল। একইভাবে ট্রাস্ট ফান্ডটা মহৎ মনে হলেও এটি সমস্যাযুক্ত। তালেবানকে সহায়তা দিলে তারা তা ঘুরিয়ে তাদের সমর্থকদের দিকে দেবে এবং শ্রমের জন্য আফগানদের পরিশোধ করতে এটি ব্যবহার করবে। উভয়ক্ষেত্রে যারা আগের সরকারের হয়ে কাজ করেছেন বা আমেরিকানদের সহায়তা করেছেন, তাদের আবেদনের সুযোগ থাকছে না। এমন বিচ্যুতির নিন্দা করার পরিবর্তেও নীরব থাকছে হোয়াইট হাউস।

ট্রাস্ট ফান্ড গঠনের ক্ষেত্রে জাতিসংঘের ওপর নির্ভর করা কি বাইডেনের উচিত হবে? এর পরণতি আরও খারাপ হতে পারে। জাতিসংঘের মানবিক ট্রাস্ট ফান্ড গঠনের অভিজ্ঞতা ইরাকের ওয়েল ফর ফুড কর্মসূচি দুর্নীতির বন্দোবস্তে পরিণত হয়েছিল। এখন জাতিসংঘের মাধ্যমে কাজ করা মানে আফগানিস্তানের অর্থ নষ্ট করা।

আফগানিস্তান মানবিক সংকটের সম্মুখীন হওয়ায় এখন জাতিসংঘের অবস্থান সঠিক। তবে এখন তালেবানকে উদ্ধার না করে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত, তাদের পদত্যাগের জন্য চাপ দেওয়া। এখন অর্থ দিয়ে আফগানিস্তানের মানবিক বিপর্যয়ের জন্য তালেবানের দায় থেকে অব্যাহতি দেওয়া কেবল তাদের শাসনকে রক্ষা করবে না বরং তাদের সন্ত্রাসবাদকেও সহায়তা করবে। তাহলে এখন যুক্তরাষ্ট্রের কী করা উচিত?

আফগানিস্তানের রিজার্ভের মালিক কেবলই দেশটির জনগণ। প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি পালিয়ে গেলেও নির্বাচিত আফগানিস্তান সরকারই কেবল স্বীকৃত সরকার। যুক্তরাষ্ট্রের উচিত, সরাসরি আফগানিস্তানের ট্রাস্ট ফান্ড দিয়ে ঘানির ভাইস প্রেসিডেন্টের কর্তৃত্বকে সহায়তা করা, তালেবান আধিপত্যের বাইরের শরণার্থীদের সমর্থন, বিদেশে পালিয়ে থাকা আফগানদের জন্য কনস্যুলার পরিষেবার জন্য তহবিল দেওয়া এবং তালেবানদের প্রতিরোধে সংগঠিত শক্তিকে সহায়তা করা। আফগানিস্তান যে মানবিক বিপর্যয়ের মুখোমুখি, সেই তালেবান নিয়ন্ত্রিত এলাকার জন্য এখন অর্থ ছাড় কেবলই তাদের শক্তিশালী করবে, কয়েক দশক ধরে তাদের চালানো সহিংসতা ও সন্ত্রাসকে পুরস্কৃত করবে এবং ট্র্যাজেডিকে জটিল করবে।

লেখক: মাইকেল রুবিন, ওয়াশিংটন পোস্ট

গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...

খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর

Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.

Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.