রিজওয়ানের ক্যারিয়ারটা যেন ফিনিক্স পাখির মতো!

মোহাম্মদ রিজওয়ানের নামটা গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে খুব একটা শোনা যায়নি। বাবর আজম, শাহিন শাহ আফ্রিদি, ফখর জামানদের ভিড়ে নামটি খুব একটা উচ্চারিত হতো না। কিন্তু বিশ্বকাপ যেমন বদলে দিয়েছে পাকিস্তান দলকে, তেমনি লাইমলাইটে চলে এসেছেন রিজওয়ানও।

পাকিস্তান দলের দুই কাণ্ডারি বাবর আজম ও রিজওয়ান

আপাত নিরীহ চেহারার এই উইকেট-কিপার ব্যাটার প্রায় প্রতি ম্যাচে প্রতিপক্ষ বোলারদের ওপর চড়াও হয়ে দলের জন্য রেখে যান বড় এক সঞ্চয়। ফলও পেয়েছেন হাতে নাতে। প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে গত বছরে করেছেন দুই হাজার রান। জিতেছেন আইসিসির সেরা টি-টোয়েন্টি খেলোয়াড়ের পুরস্কার।

তারপরও ভুলে যাননি তিনি পেছনের কথা। কদিন আগেও ‘ব্র্যাডম্যান’ ‘স্যার’ শব্দগুলো ক্রিকেট দুনিয়ায় সম্মানের হলেও রিজওয়ানকে উপহাস করে ডাকা হতো এসব নামে। বড় কষ্ট করে পরিস্থিতি পাল্টেছেন তিনি। এখন কেউ তাকে দেখলেই বলে ওঠে, ওই যে রিজওয়ান! অন্যসব অর্জনের পাশে এটাকেই এখন জীবনের সবচেয়ে বড় পাওয়া হিসেবে মানেন পাকিস্তানের এই ওপেনিং ব্যাটার।

মাঠে যে কোনো অর্জনে প্রভুর শুকরিয়া আদায় করেন রিজওয়ান

২০২০ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচেই ব্যর্থ হন রিজওয়ান। চারদিকে আওয়াজ ওঠে, টি-টোয়েন্টির জন্য যোগ্য না এই উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান। সবদিক থেকে চাপে থাকা রিজওয়ান তৃতীয় ম্যাচে মাঠে নামার আগেই ভেবেছিলেন, এটাই হতে যাচ্ছে টি-টোয়েন্টিতে তার শেষ ম্যাচ।

ওই সময়ের কথা মনে করে রিজওয়ান বলেন, ২০২১ সালের আগে আমি বেশিরভাগ ম্যাচেই বেঞ্চে বসে থাকতাম। সুযোগ পেলেও ছয় কি সাত নম্বর পজিশনে। সব মিলিয়ে টি-টোয়েন্টিতে নিজের ভবিষ্যত নিয়ে শঙ্কায় ছিলাম। এখনো মনে আছে, তৃতীয় ম্যাচের আগে ইফতি ভাইকে বলছিলাম, এটাই টি-টোয়েন্টিতে আমার শেষ ম্যাচ। সেখান থেকেই ফিনিক্স পাখির মতো ঘুরে দাঁড়ান রিজওয়ান। এরপর ২০২১ সালটি কেটেছে স্বপ্নের মতো।

দুদিন আগেও যে রিজওয়ানকে দেখলে সবাই উপহাস করত, আজ সেই রিজওয়ানই সকলের মধ্যমণি। পাকিস্তানের খেলা থাকলে স্টেডিয়ামে তার নামে ব্যানার দোলে। তার নামে স্লোগান ওঠে। রিজওয়ান নিজেই ভাবেন, সেই রিজওয়ান আর এই রিজওয়ানের মধ্যে কতই না পার্থক্য!

রিজওয়ানের এখন একটাই চাওয়া, করতে চান এমন কিছু যেটা করেননি কেউই। তিনি বলেন, আমি সবসময়ই এমন কিছু করতে চেয়েছি যা কেউ করছে না, কেউ করেনি।