শিশুর অটিজম প্রতিরোধে করণীয়

নতুন সন্তানের ক্ষেত্রে বাচ্চার সুস্থতা নিয়েই বাবা-মায়ের অনেক ভীতি কাজ করে। সবারই কাম্য থাকে সুস্থ-সবল বাচ্চার। বাংলাদেশে প্রতি একশ শিশুর মধ্যে একটি শিশু অটিজমে আক্রান্ত হয় বলে ধারণা করেন ডাক্তাররা। এতে দিন দিন অটিজমে আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা বাড়ছে। মেয়েদের তুলনায় ছেলে শিশুরা প্রায় চার গুণ বেশি অটিজমের সমস্যায় ভোগে। 

মারাত্মক স্নায়ু বিকাশজনিত অসুখ অটিজম। অটিজমে আক্রান্ত শিশুদের অটিস্টিক বলা হয়। সাধারণত জন্মের পর প্রথম তিন বছরের মধ্যে এই সমস্যা দেখা দিয়েথাকে। অটিস্টিক শিশুদের সামাজিক যোগাযোগ, ভাষাগত বিভিন্ন সমস্যা, প্রতিক্রিয়া, আচরণে সমস্যা হয়ে থাকে। মস্তিষ্কের অস্বাভাবিক বায়োলজি এবং কেমিস্ট্রি অটিজমের কারণ। এখন পর্যন্ত অটিজমের সঠিক কোন কারণ খুঁজে পাওয়া যায়নি।

বিজ্ঞানীদের ধারণা, অটিজমের জন্য জেনেটিক একটি গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর। অটিস্টিক শিশুদের শারীরিক গঠন স্বাভাবিক হয়। ফলে সমস্যা নির্ণয় করাও অনেক সময় জটিল হয়ে পড়ে। এর জন্য কোন ধরণের মেডিকেল টেস্ট নেই। কেবল বাবা-মা ও পরিবারের অন্য সদস্যদেরকে শিশুর বৈশিষ্ট্যগুলো দেখে দেখে বুঝে নিতে হয়। আবার জন্ম থেকেই শিশুর অটিজম হতে পারে। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দুই বছর বয়সের পর থেকে অটিজমের লক্ষণ প্রকাশ পায়।

বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অটিজমের সম্পূর্ণ নিরাময় সম্ভব নয়। তবে সমন্বিত চিকিৎসা যেমন, আচরণগত, ভাষাগত, শিক্ষাগত ও শারীরিক বিশেষ থেরাপির মাধ্যমে স্বাভাবিক ও কার্যক্ষমের মাধ্যমে শিশুকে প্রায় আশি ভাগ সুস্থ করে তোলা সম্ভব। এক্ষেত্রে বাবা-মায়ের ধৈর্য এবং ভালোবাসাই সবচেয়ে বড় হাতিয়ার।

যেহেতু অটিজমের নিরাময় নেই, তাই সচেতনতাই এটি প্রতিরোধের সর্বোত্তম পন্থা। পরিবারে কারো অটিজম বা কোন মানসিক বা আচরণগত সমস্যা থাকলে, পরবর্তী সন্তানের ক্ষেত্রে অটিজমের ঝুঁকি থাকে। এক্ষেত্রে পরিকল্পিত গর্ভধারণ খুবই জরুরি। গর্ভাবস্থায় দুশ্চিন্তা কমানো, মৃগী রোগ, ঘুম বা অপ্রয়োজনীয় যে কোনো ওষুধ বর্জন করতে হবে। শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানো, নিবিড় সম্পর্ক স্থাপন এবং অপ্রয়োজনীয় টিকা না দেওয়ার মত বিষয়গুলো অটিজম প্রতিরোধে ভূমিকা রাখতে পারে।

আপনি আরও পড়তে পারেন

শিশুর হাড় মজবুত হওয়ার সাথে মায়ের নাড়ীর সম্পর্ক

নতুন মায়ের যত্ন

প্রেগন্যান্ট হলে কসমেটিক্স ব্যবহারে সর্তক থাকুন

শিশুর দাঁতে ক্যাভিটি

বাচ্চার যখন সাইনোসাইটিস