আড়াই দিনের টেস্টে হার ও ব্যাটিংয়ের ব্যাখ্যা

পাকিস্তানের সঙ্গে ঢাকা টেস্টেও হেরেছে টাইগাররা। এ নিয়ে আজ বুধবার, ৮ ডিসেম্বর, সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে নানা প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন বাংলাদেশ টেস্ট দলের অধিনায়ক মুমিনুল হক। এর আগে চট্টগ্রাম টেস্টেও হেরে যায় বাংলাদেশ।

মুমিনুল হক

এদিন টাইগার অধিনায়ক বলেন, আমার কাছে মনে হয়, পুরো হতাশার। বিশেষ করে ১-৪ ব্যাটাররা, মানে এক কথায় বলব- খুবই বাজে দিন ছিল গতকাল। এক সেশনে ৭ উইকেট হারিয়েছি। এখানে অজুহাত দেয়ার কিছু নেই। আমরা খুব বাজে ব্যাট করেছি। এ রকম অবস্থায় ফিরে আসা কঠিন। কিন্তু দ্বিতীয় ইনিংসে মুশফিক-সাকিব ভাই ও লিটন-মিরাজ খুব ভাল চেষ্টা করেছে।

অ্যাপ্রোচ প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে টেস্ট অধিনায়ক বলেন, এটা যদি প্রথম ইনিংসের কথা বলেন, দেখেন আমারটাই সিলি মিসটেক ছিল, আমার হয়তো তাড়াহুড়ো করে রান নেয়া উচিত হয়নি। কিন্তু সবাই মারতে গিয়ে আউট হয়নি। কারণ ওই উইকেটে মুশফিক ও লিটনকে সমর্থন করবো। কারণ তখন উইকেটে বল ঘুরছিল অনেক। ওই উইকেটে ওরা যে টার্গেটটা নিয়েছিল যেমন- মুশফিক ভাই স্কয়ার অব দ্যা উইকেটে মেরেছিল দুর্ভাগ্যবশত সংযোগ হয় নাই। আসলে এসব উইকেটে বেশি রক্ষণাত্মক খেললে কঠিন হয়ে যায়। বাকিদের না মনে হয়, আমার উইকেটটা বেশি বাজে ছিল। ওই সময় এসব রান না নেয়াটা বেটার।

আজও রান আউট এবং সিঙ্গেল দেয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যে ফরম্যাটেই খেলেন। সবসময়ই রানটা গুরুত্বপূর্ণ। আমি যদি শুধু রক্ষণাত্মক খেলি…রানটা তো নিতে হবে। এতে মাঝে মাঝে একটু ভুল বোঝাবুঝি হয়। মুশফিক ভাইয়ের রানটা আনলাকি ছিল। ব্যাটটা নিচে থাকলে সে বেঁচে যেত।

মিরাজের আউট প্রসঙ্গে অধিনায়ক বলেন, এটা চাপের কিছুটা, সাকিব-মিরাজ চাপটা কাটিয়ে উঠেছিল। এখানে হয়তো শট সিলেকশনে সমস্যা ছিল। আমার কাছে মনে হয়, রাইট আর্ম স্পিনারকে বেশি ডিফেন্সিভ খেলতে গিয়ে আউট হয়েছে। একটু পজিটিভ হয়ে মারলে ঠিক ছিল।

টেস্টে এমন ব্যর্থতার দায়ভারের যন্ত্রনা বা অধিনয়কত্ব কঠিন কি না— এমন প্রশ্নের জবাবে মুমিনুল বলেন, কঠিন না। চ্যালেঞ্জিং। আমি এই চ্যালেঞ্জটা নিতে পেরেছি বলে এই সিটে বসে আপনাদের সঙ্গে কথা বলতে পারছি। এটা সবাই নিতে পারে না। এটা আমার মনে হয়, এক ধরনের প্র্যাকটিক্যাল এক্সপেরিয়েন্স। আর দল যখন এ রকম অবস্থার মধ্যে দিয়ে যায় তখন সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলো এটা আপনি কীভাবে দেখেন। আমি এখনও আশা রাখি, এটা চ্যালেঞ্জিং এবং সামনেও চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে। আমি এটাকে ইতিবাচক হিসেবে নিচ্ছি, আর চাপ পেয়ে বসেনি। আমাদের ভাল জিনিস নিয়ে সামনে এগোতে হবে।

জাতীয় লিগ থেকে জাতীয় দলে খারাপ করা প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, ব্যর্থ ও রকম কেউ না। কার কথা বলছেন বুঝতেছি না, যার কথাই বলেন না কেন, ঘরোয়া ক্রিকেটের সঙ্গে প্রথম শ্রেণির পার্থক্য আছে, সহজ না। যারা নতুন আসে তাদের তো সময় দিতে হবে। একটু ধৈর্য্য ধরেন, একটু সময় দিতে হবে।

পাকিস্তানের ইনিংস শেষে ভাবনা কী ছিল অথবা সিদ্ধান্ত কে নিয়েছে— এমন প্রশ্নের জবাবে টাইগার অধিনায়ক বলেন, না কেউ আক্রমণাত্মক খেলেনি। প্রশ্ন শুনে অবাক হয়েছি। বলের মেরিট অনুযায়ী যদি রক্ষণই করেন তাহলে রান করবেন কোন সময়। ওরা ৩০০ রান করেছে, আপনি যদি রক্ষণই করেন তো রান করবেন কখন। যারা আউট হয়েছে তারা ক্যালকুলেটেড রিস্ক নিয়েই শট খেলেছে, যেখানে বল বেশি টার্ন করেন সেখানে রিস্ক নিয়ে না মারলে হয় না। এটা মনে হচ্ছে কারণ ওই সময়ে আউট হয়ে গেছে। তো স্কোরিং শট যেগুলো সেখানে তো রান করতে হবে। অ্যাগ্রেসিভ ছিল না, হয়তো আমাদের উপর দিকে রানটা করতে পারিনি। ১-৪ ভাল জুটি গড়লে নিচের জন্য সহজ হতো। এই টেস্টে এটা আমার অবজার্ভেশন।