কেমন হবে মাশরাফি- ওয়ালশের জুটি?

একজন নিজের সময়ের সেরা পেসার। আরেকজনও কি তাই নয়? প্রথমজন ক্যারিবিয়ান কিংবদন্তী কোর্টনি ওয়ালশ। পরেরজন মাশরাফি বিন মর্তুজা। তুলনাটা কি একটু বেমানানই হয়ে গেলো? হতে পারে! কিন্তু মাশরাফির ক্যারিয়ারটা যদি চোট-জর্জর না হতো, কিংবা তিনি যদি আরো খেলার সুযোগ পেতেন, তবে তার ক্যারিয়ার পরিসংখ্যানটি খুব ফ্যাকাশে হতো?

যা হোক, মাশরাফি কী পারতেন, তার দ্বারা কতো কী সম্ভব হতো; সেই সব কথা এখন অবান্তর। এখন বরং আলোচনা করা যেতে পারে, মাশরাফি ও ওয়ালশের নতুন জুটি নিয়ে।

২০১৪ সালের শেষ দিকে বাংলাদেশ অধিনায়কের দায়িত্ব পেয়ে দলের খোলনলচেই বদলে ফেলেন মাশরাফি। একের পর ম্যাচ ও সিরিজ হারতে থাকা দলকে ব্যর্থতার অন্ধকারাছন্ন সূড়ঙ্গ থেকে আলোর পথে নিয়ে আসেন তিনি। সেই আলোর পথ ধরে ধরা দেয় বিশ্বকাপ কোয়ার্টার ফাইনাল, পাকিস্তান- ভারতকে সিরিজ হারানো এবং দক্ষিণ আফ্রিকার মতো দলকেও নাকানিচুবানি খাওয়ানোর সাফল্য।

সময় এখন সেই সাফল্য আরো সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার। এমন সময়েই বাংলাদেশ দলের কোচিং স্টাফে যোগ দিলেন গত একশ বছরে যে সব ক্রিকেটারদের তুমুল আলোচনা হয়েছে, তাদের অন্যতম কোর্টনি ওয়ালশ। কোচিংয়ের কোনো অভিজ্ঞতা নেই বললেই চলে, তারপরও বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড নির্ভর করলো তার উপর।

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড কোচিংয়ের অভিজ্ঞতাহীন ওয়ালশকে কেনো বোলিং কোচ হিসেবে নিয়োগ দিলো, তা নিয়ে আলোচনা হোক পরে। তার আগে কথা হোক, মাশরাফি- ওয়ালশ জুটির সম্ভাবনা নিয়ে।

ক্যারিবীয়দের স্বাভাবিকতাই হলো তারা দারুণ বন্ধুত্বপূর্ণ। কলকাতা নাইট রাইডার্সে খেলতে খেলতে কলকাতার ‘ঘরের ছেলে’ হয়ে যাওয়া সাকিবকে একবার জিজ্ঞেস করা হয়েছিলো, কলকাতা নাইট রাইডার্সে তার প্রিয় বন্ধু কে। প্রায় কোনো কিছু না ভেবেই সাকিব বলে দেন- আন্দ্রে রাসেল। কেনো? সাকিব জানান, ক্যারিবীয়দের দারুণ বন্ধুত্বপূর্ণ মেজাজের কারণেই রাসেল তার প্রিয় বন্ধুদের একজন হয়ে গেছেন।

ওয়ালশও নিশ্চিতভাবেই ওই রকম বন্ধুত্বপূর্ণ। আর মাশরাফির বন্ধুভাবাপন্ন মন নিয়েও নিশ্চয় কম লেখালেখি হয়নি! সব মিলিয়ে এই দুজন মানুষের জুটিটা খুব সম্ভবত বাংলাদেশ ক্রিকেটকে আরো একবার ‘কাঁপিয়ে’ দিবে।

সোমবার প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ দলের অনুশীলনে যোগ দেন ওয়ালশ। প্রথম দিনই তাকে দেখা গেছে প্রাণবন্ত। মাশরাফির সঙ্গে খুনসুটিতেও দেখা গেছে তাকে দারুণ ব্যস্ত। এরপর দলের অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গেও মিশেছেন হৃদ্যতা নিয়েই।

বোলিং কোচ হিসেবে ওয়ালশের নিয়োগ চূড়ান্ত হওয়ার পরই উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছিলেন মাশরাফি। বলেছিলেন, তার সঙ্গে কাজ করার জন্য মুখিয়ে আছেন তিনি। ক্যারিয়ারের পড়ন্ত বেলায় এসেও মাশরাফি চাইছেন, ওয়ালশের কাছে কিছু শিখতে। মাশরাফির মতো শেখার তাড়না দলের অন্য তরুণদের মধ্যেও দেখা গেছে প্রথম দিনের অনুশীলনে।

মাশরাফির ছোঁয়ায় এমনিতেই বাংলাদেশ এখন বদলে যাওয়া দল। এর মধ্যে ওয়ালশের জাদুকরি ছোঁয়া বাংলাদেশকে কি আসলেই নতুন কোনো উচ্চতায় নিয়ে যাবে? এমন প্রশ্নের উত্তর আপাতত সময়ের হাতে। তবে মাশরাফি- ওয়ালশের জুটিটা যে অসাধারণ হবে, সেটা আন্দাজ করাই যাচ্ছে!

আপনি আরো পড়তে পারেন

মাশরাফিদের অনুশীলনে 'কিংবদন্তী'

ঈদুল আযহায় টানা ৬ দিনের ছুটিতে দেশ

প্রস্তুত সানি-তাসকিন, ব্রিসবেন যাচ্ছেন আজ

মেয়ের বাবা হলেন আশরাফুল

ওয়ালশ: বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য ভালো কিছু করতে চাই