তাসকিনের আফসোসের জায়গা যেখানে

ঘটনা ২০১৮ সালের মে মাসের। সেদিন ওয়ানডে ক্রিকেটে অভিষেক হয়েছিল তাসকিন আহমেদের। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের প্রথম ম্যাচেই বল হাতে কাঁপিয়ে দিয়েছিলেন এই পেসার। তাসকিন দুর্দান্ত বোলিং করেছেন, কিন্তু বাংলাদেশ দল ভারতের বিপক্ষে বিব্রতকর হার নিয়ে মাঠ ছেড়েছে।

আজ আবুুধাবির শেখ জায়েদ স্টেডিয়ামে আরেকটি লজ্জাজনক হার সঙ্গী হয়েছে বাংলাদেশের। এখানে মঞ্চ আলাদা, সংস্করণ টি-টোয়েন্টি এবং প্রতিপক্ষও ভিন্ন। প্রতিপক্ষ ভারতের জায়গায় দক্ষিণ আফ্রিকা এবং সংস্করণ ওয়ানডের স্থলে টি-টোয়েন্টি। কিন্তু অন্য দুইটা ছবি ঠিক আগের মতোই আছে।

বাংলাদেশ নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ করেছে এবং তাসকিন চোখ ধাঁধানো বল করেছেন। প্রায় সাড়ে তিন বছর আগের হারটা চাপা পড়ে গেছে ফুটবল বিশ্বকাপের জ্বরে। কিন্তু এবারেরটা আড়াল করার উপায় নেই। এবারের মঞ্চটা টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের। সবার চোখ এখানেই থাকল। চলতি আসরে বাংলাদেশ যে ভুগছে সেটার যেন চূড়ান্ত পরিণতি দেখা গেল প্রোটিয়াদের বিপক্ষে।

ভয়ঙ্কর ব্যাটিং বিপর্যয়ে ইনিংসের দশ বল বাকি থাকতে বাংলাদেশ গুটিয়ে গেছে ৮৪ রানে। জবাবে ছয় উইকেট ও ৩৯ বল হাতে রেখে জয় তুলে নেয় দক্ষিণ আফ্রিকা। মামুলি রান তাড়া করতে অবশ্য প্রোটিয়াদের বেগ পেতে হয়েছে তাসকিনের কারণে। শুরুতেই দক্ষিণ আফ্রিকার টপ অর্ডার কাঁপিয়ে দিয়েছিলেন ডানহাতি পেসার।

চার ওভারে ১৮ রান খরচায় দুই উইকেট নিয়েছেন গতিময় পেসার। ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সে তাসকিন তৃপ্ত। কিন্তু দলের ব্যর্থতায় সেটা মাটি হয়ে গেছে। ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে তাই আফসোস ঝরল তাসকিনের কণ্ঠে, 'আসলে বল ভালো হয়েছে। কিন্তু দিন শেষে ম্যাচ জিততে না পারলে তো খারাপ লাগে। দুর্ভাগ্যজনক দলীয় পুঁজিটা বড় ছিল না।'

ব্যাটিং ব্যর্থতায় আসরজুড়ে ভুগছে বাংলাদেশ। তার ওপর ইনজুরি নিয়ে আসর থেকে ছিটকে গেছেন মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন ও সাকিব আল হাসান। অনিয়মিত একাদশ নিয়ে ব্যাটিংয়ে দৈন্যদশা যেন ভালোভাবেই ফুটে উঠল। তাসকিনের মতে সংগ্রহটা বড় হলে ম্যাচটায় ইচিবাচক কিছু পাওয়া যেত। কিন্তু কেন ব্যাটিংটা হচ্ছে না আর সংগ্রহ কত হলেই জিততে পারতো বাংলাদেশ?

উত্তরে তাসকিন বলেছেন, 'আমরা কয়েকটি ম্যাচ হারায় ব্যাটিংয়ে আত্মবিশ্বাস খুঁজে পাচ্ছি না। তাই (ব্যাটিং) হচ্ছে না। ওরা ভাল বোলিং করেছে। বেশি রান করতে না পারায় আমরা হেরে গেছি। বাংলাদেশ যোগ্যতা অনুযায়ী ক্রিকেট খেলতে পারছে না। দল আরো ভালো ক্রিকেট খেলবে এমনটাই আশা ছিল। আমরা কয়েকটা সহজ ম্যাচ হেরেছি। তাই হচ্ছে না।'

তাসকিনের মতে, ১২০ রান হলেই দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটিংয়ে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেওয়া যেত। তিনি বলেছেন, 'আমার মনে হয়, ১২০-১২৫ হলে ভিন্ন কিছু হতে পারতো। আমাদের আরো ভালো ব্যাটিং করতে হতো। আমরা রান করতে পারলে ওরা চাপে থাকতো। ওরাও কিন্তু সমস্যায় পড়েছে। ওদের ৮৫ রান করতে প্রায় ১৪ ওভার লেগেছে। ১৪০-১৫০ করলেও ফাইটিং স্কোর হতো।'