বোলারদের কাঁধে মান বাঁচানোর দায়িত্ব

চলমান টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে হারানোর কিছু ছিল না। তবে পাওয়ার ছিল। অথচ আনুষ্ঠানিকতার ম্যাচেও বাংলাদেশ থাকল খোলসবন্দী। অনুমিতভাবেই দক্ষিণ আফ্রিকার বোলারদের সামনে দাঁড়াতে পারেনি টাইগাররা। প্রোটিয়াদের তোপে ইনিংসের ১০ বল বাকি থাকতে বাংলাদেশ গুটিয়ে গেছে ৮৪ রানে।

বাংলাদেশ শিবিরে ছিল শুধুই আসা-যাওয়ার মিছিল

এ নিয়ে নয়বার হলো কুড়ি ওভারের ক্রিকেটে তিন অংকে যেতে পারল না বাংলাদেশ। এমন বিপর্যয়ের আশঙ্কা অবশ্য আগে থেকেই ছিল। ইনজুরি নিয়ে মাঠের বাইরে ছিটকে গেছেন মূল একাদশের তিন ক্রিকেটার তথা সাকিব আল হাসান, নুরুল হাসান ও মোস্তাফিজুর রহমান।

টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে কখনোই পায়ের তলার মাটি শক্ত করতে পারেনি বাংলাদেশ দল। আসলে এই সংস্করণের মেজাজেই থাকে না টাইগার ব্যাটাররা। প্রায় সব ম্যাচেই মন্থর গতির আর প্রস্তর যুগের ব্যাটিং দেখা যায়। আজ দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষেও ব্যতিক্রম হলো না। বরং ভয়ঙ্কর বিপর্যয়ে ধসে পড়ল।

পাওয়ার-প্লে সমস্যাটা এই ম্যাচেও প্রকট আকারে দেখা গেল। অন্য দলগুলো যখন শুরুর ছয় ওভারের সুবিধা নিতে মরিয়া থাকে সেখানে উল্টো পথে হাঁটেন বাংলাদেশের ব্যাটাররা। টি-টোয়েন্টি সংস্করণে তারা ব্যাটিং করেন টেস্ট মেজাজে। তাদের ব্যাটিং দেখে বোঝার উপায় নেই খেলাটি কোন সংস্করণের।

এবারের আসরের শুরু থেকেই ওপেনিং ব্যর্থতা ভুগিয়েছে বাংলাদেশ দলকে। আজ আবুধাবিতে এই বিপর্যয়ের পথটাও দেখিয়েছেন দুই ওপেনার। বাউন্ডারি মারার কোনো তাড়নাই নেই তাদের। অন্যরাও তাদের পথেই হাঁটলেন। দিন শেষে সংবাদ সম্মেলনে কেবল আফসোস করে বলতে হয়, 'আমাদের দলে রাসেল, পোলার্ডদের মতো কেউ নেই।'

এই বিশ্বকাপে টস জেতা দলগুলোর প্রায় সবকটিই ম্যাচ জিতে মাঠ ছেড়েছে। ব্যতিক্রম বাংলাদেশ। দুটো ম্যাচ টস জিতেও কাজে লাগাতে পারেনি টাইগাররা। তাই আজকের ম্যাচে টস নিয়ে খুব একটা মাতামাতি ছিল না এবং বাংলাদেশ অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ হেরে বসেছেন টস।

‌অবধারিতভাবেই বল হাতে তুলে নেয় দক্ষিণ আফ্রিকা। বল হাতে বাংলাদেশের টপ অর্ডার ধসিয়ে দেয় প্রোটিয়ারা। ৩৫ রানের মধ্যে টাইগাররা হারায় পাঁচ উইকেট। অথচ বিনা উইকেটে ২২ রান ছিল দলের। নয় রানে মোহাম্মদ নাঈমের বিদায়ে ছন্দ পতনের শুরু। এরপর ব্যাটারদের আসা-যাওয়ার মিছিল।

লিটন দাস টিকে থাকলেন বটে, কিন্তু ব্যাট করেছেন ধীরে সুস্থে। ৩৬ বলে ২৪ রানে আউট হন তিনি। ৪৫ রানে দলের ষষ্ঠ ব্যাটার হিসেবে ফেরেন ডানহাতি ওপেনার। টি-টোয়েন্টি সংস্করণে নিজেদের সর্বনিম্ন রানের রেকর্ড ভাঙার আশঙ্কায় পড়েছিল বাংলাদেশ। শেষ দিকে মেহেদি হাসানের ব্যাটে চড়ে শঙ্কা এড়ায় দল।

২৪ বলে ২৭ রানে আউট হন মেহেদি। শামীম হোসেন ১১ রান করতে খরচ করেছেন ২০ বল। বাংলাদেশের বাকি আট ব্যাটারের কেউ যেতে পারেননি দশকের ঘরে। চার ওভারে কুড়ি রানে তিন উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের টপ অর্ডারে ধস নামান পেসার কাগিসো রাবাদা। আরো ভয়ঙ্কর অ্যানরিচ নর্তজে।

৩ দশমিক ২ ওভারে আট রানে তিনটি শিকার করেন তিনি। এ ছাড়া টি-টোয়েন্টির নাম্বার ওয়ান বোলার তাবরাইজ শামসি ২১ রানে শিকার করেন দুটি। তিন ওভারে ১১ রানে একটি উইকেট নেন ডোয়াইন প্রিটোরিয়াস। ব্যাটাররা বোলারদের এনে দিতে পারেননি ন্যূনতম পুঁজি। হারের ব্যবধানটা কত বড় হয় সেটাই কার্যত দেখার অপেক্ষা।