বাটলারের বৃত্তপূরণ, বাংলাদেশের ‘মিছে আশা’

ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের একটা আফসোস ছিল। এতদিনে তা শেষ হয়েছে। প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে শতকের দেখা পেয়েছেন ইংলিশ কোনো ব্যাটার। গতকাল সোমবার রাতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সেঞ্চুরি করে দেশবাসীর অপেক্ষার অবসান ঘটিয়েছেন ওপেনার জস বাটলার (৬৭ বলে ১০১ রান)।

বাংলাদেশের বিপক্ষে ব্যাট করছেন জস বাটলার

শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ছক্কা মেরে তিন অংকের ম্যাজিক ফিগার স্পর্শ করেন বাটলার। এবারের বিশ্বকাপে এটাই প্রথম শতক। তাতেই হলো ইতিহাস। ইংল্যান্ডের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে তিন সংস্করণে শতকের দেখা পেলেন বাটলার। তার শতকের বৃত্তপূরণের রাতে নাটকীয় ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে ২৬ রানে হারিয়েছে ইংল্যান্ড।

তাতে নড়েচড়ে বসেছেন বাংলাদেশের অতি আশাবাদী সমর্থকরা। এখনও টাইগারদের সেমিফাইনালের সুযোগ দেখছেন তারা। সেক্ষেত্রে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদদের জিততে হবে পরের দুই ম্যাচ দক্ষিণ আফ্রিকা ও অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে। দুই ম্যাচ জয়ের পর টাইগারদের চেয়ে থাকবে হবে অনেক সমীকরণের দিকে। এরপর রান রেট তো আছেই।

বাংলাদেশি দর্শক

গাণিতিক হিসেবে অবশ্য বাংলাদেশের সেমিফাইনালের আশা এখনও টিকে আছে। কিন্তু বাস্তবতা বড্ড কঠিন। টাইগারদের দুই তো আবশ্যিক, এর সঙ্গে ‘যদি-তথাপি-কিন্তু’র ওপর দাঁড়িয়ে সেমিফাইনালে ওঠার স্বপ্ন, যা কার্যত অসম্ভবই। বাংলাদেশ সেমিফাইনালে উঠলে সেটা হবে বিশ্বকাপের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় মিরাকল!

আশাটা তাই মিছে। বাংলাদেশের বিশ্বকাপ শেষ হয়ে গেছে তৃতীয় ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে হেরেই। এর আগে সুপার টুয়েলভের প্রথম ম্যাচে আশা জাগিয়েও শ্রীলঙ্কার কাছে হেরেছে টাইগাররা। পরের ম্যাচে অবশ্য ইংল্যান্ডের সামনে দাঁড়াতেই পারেননি মাহমুদউল্লাহবাহিনী। স্রেফ খড়কুটোর মতো উড়ে গেছে।

গ্রুপ-১ এ চার ম্যাচের সবকটিতে জিতে সবার আগে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করেছে ইংল্যান্ড। তিন ম্যাচের দুটিতে জিতে দুই ও তিনে আছে দক্ষিণ আফ্রিকা ও অস্ট্রেলিয়া। শ্রীলঙ্কা ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ একটি করে জয় নিয়ে কিছুটা হলেও আশা বাঁচিয়ে রেখেছে। তিন ম্যাচের তিনটিতে হেরে তলানিতে টাইগাররা।

এই বিশ্বকাপে বাংলাদেশের আর হারানোর কিছু নেই। তবে পাওয়ার আছে। সেটা পরবর্তী বিশ্বকাপে সরাসরি মূলপর্বের টিকিট পাওয়ার ক্ষেত্রে। এক্ষেত্রে টাইগারদের জিততে হবে পরের দুটি ম্যাচেই। একটিতে জিতলেও আশা থাকতে পারে। কারণ সুপার টুয়েলভ রাউন্ড ও ফাইনাল শেষে আইসিসি টি-টোয়েন্টি র‌্যাংকিংয়ে আসবে অবস্থানগত পরিবর্তন।

আগামী বছর অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠেয় বিশ্বকাপে সরাসরি সুপার টুয়েলভে খেলবে এবারের দুই ফাইনালিস্ট এবং ফাইনালের পরদিন (১৫ নভেম্বর) র‌্যাংকিংয়ে শীর্ষে থাকা সুপার টুয়েলভের অন্য ছয় দল। অর্থাৎ ওইদিন পর্যন্ত আটের মধ্যে থাকলে সরাসরি সুপার টুয়েলভে খেলার সুযোগ আছে বাংলাদেশের।

টাইগাররা একটি ম্যাচ জিতলে এবং অন্য ম্যাচগুলোর ফল পক্ষে এলেও সুযোগ থাকবে সরাসরি সুপার টুয়েলভে খেলার। দুটো ম্যাচ হারলে আবারও বিশ্বকাপের বাছাইপর্ব খেলতে হবে বাংলাদেশকে। এই মুহূর্তে র‌্যাংকিংয়ে বাংলাদেশের অবস্থান নবম। টাইগারদের সমান ২৩৪ রেটিং পয়েন্ট হলেও ভগ্নাংশের ব্যবধানে এগিয়ে আটে থাকা ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ২৩০ রেটিং পয়েন্ট নিয়ে শ্রীলঙ্কা দশম। ২৩৫ রেটিং পয়েন্ট নিয়ে সাতে আফগানিস্তান।