লিটনের ক্যাচটাই ম্যাচ হারার টার্নিং পয়েন্ট

উইকেট ধীরগতির; বোলিংবান্ধব। তাই ২৪ বলে ৩৩ রানের লক্ষ্যমাত্রাকেও পাহাড়সম মনে হচ্ছিল। সমীকরণ মেলাতে সম্ভাব্য সেরা চেষ্টাই করেছে বাংলাদেশ দল। কিন্তু শেষ বলের নাটকীয়তায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে তিন রানে হেরে গেছে টাইগাররা। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মূলপর্বের তিন ম্যাচের সবকটিতেই হারল মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দল।

ম্যাচ বের করতে না পারার আক্ষেপ অধিনায়কের

ম্যাচজুড়ে রান আউটের সুযোগ হাতছাড়া করেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। কয়েক দফা বেঁচে গেছে বাংলাদেশের ব্যাটাররা। কিন্তু চারটা রান আউটের সুযোগ হাতছাড়া করলেও ম্যাচে দুর্দান্ত দুটো ক্যাচ নিয়েছে ক্যারিবীয়রা। প্রথমটা সৌম্য সরকারের। চমৎকার এক ক্যাচ নেন ক্রিস গেইল। দারুণ শুরুর পর ফেরেন সৌম্য।

শেষ সাত বলে ১৩ রানের কঠিন সমীকরণ। ডোয়াইন ব্রাভোর বলে লং অনে উড়িয়ে মারেন লিটন। আট-দশটা সাধারণ ফিল্ডার হলে ক্যাচটা নিতে পারতেন না। বড়জোর বাউন্ডারি বাঁচাতে পারতেন। কিন্তু ছয় ফুট সাত ইঞ্চি উচ্চতার জেসন হোল্ডার লাফিয়ে বলটা হাতের মুঠোয় নিয়ে নেন। ৪৩ বলে ৪৪ রানে আউট লিটন।

ওই বলটা ছক্কা হলে শেষ ওভারে সাত রান দরকার হতো বাংলাদেশের। কিন্তু জেসনের দুর্দান্ত ক্যাচটা ম্যাচটা কঠিন করে দেয় টাইগারদের জন্য। ম্যাচ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে মাহমুদউল্লাহ জানালেন, লিটনের ক্যাচ আউটটাই ম্যাচের ভাগ্য ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে নির্ধারণ করে দিয়েছে।

বাংলাদেশ অধিনায়ক বলেছেন, 'আমার আর লিটনের জুটিটা ভালোই হচ্ছিল। ব্রাভোর ওই বলে যদি ছয়টা হয়ে যেত তাহলে অনেক এগিয়ে যেতাম। আমার মনে হয়, ওইটা ম্যাচের বড় একটা টার্নিং পয়েন্ট ছিল। কারণ লিটন এবং আমি দুজন সেট ব্যাটার যদি শেষ ওভারে থাকতাম অন্তত একটা চার কিংবা ছয় মারতাম কিংবা ইতিবাচক কিছু আসতো।'

কোনো বাউন্ডারি না মেরেও চার বলে নয় রান নিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ। শেষ বলে চার রান দরকার ছিল। কিন্তু রাসেলের অফ লেংথের ইয়র্কারে ব্যাট ছোঁয়াতে পারেননি অধিনায়ক। বল চলে যায় উইকেটরক্ষক ও ম্যাচ জয়ের নায়ক নিকোলাস পুরানের গ্লাভসে। শেষ বলে জয়ের সুযোগ হাতছাড়া করার দায়টা নিচ্ছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।

মাহমুদউল্লাহ বলেছেন, 'আমি জানতাম, শেষ বলটা ও ইয়র্কার করবে। যেহেতু লেগ সাইডে চারজন ফিল্ডার ছিল। লেংথের আগের দুই বলও ভালো ইয়র্কারে করেছিল। কিন্তু আমি তুলতে পারিনি। চিন্তা করছিলাম যে, যদি ও মিস করে তাহলে একটু জায়গা করে মিড-অফ, কাভার, পয়েন্ট বা ব্যাকওয়ার্ডে মারতে পারব। এটা আমার দোষ, আমি শেষ বলটা কাজে লাগাতে পারিনি।'

এর আগে টস জিতে বল হাতে দুর্দান্ত পারফর্ম করেছে বাংলাদেশ। সাত উইকেটে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ১৪২ রানে আটকে দেয় টাইগাররা। ২০তম ওভারে মোস্তোফিজুর রহমান ১৯ এবং ১৮তম ওভারে মেহেদি হাসান দেন ১৮ রান। ওই দুটো ওভার অমন বাজে না হলে আরো কমে বেঁধে ফেলা যেত ক্যারিবীয়দের। রান তাড়ায় পাঁচ উইকেটে ১৩৯ রান তুলতে সক্ষম হয় বাংলাদেশ।