অস্ট্রেলিয়ার স্বস্তি: মূলপর্বের নিষ্প্রাণ শুরু

বোলারদের পুঁজি মাত্র ১১৮ রানের। অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে দক্ষিণ আফ্রিকা যে পেরে উঠবে না এটা অনুমিতই ছিল। অথচ মামুলি পুঁজি নিয়েই দাঁতে দাঁত চেপে লড়াই করল প্রোটিয়ারা। অজিদের নিয়ে গেল শেষ ওভার পর্যন্ত। কিন্তু হার ঠেকানো গেল না।

আজ আবুধাবিতে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মূলপর্বের প্রথম ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকাকে পাঁচ উইকেটে হারিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। আগে ব্যাট করতে নেমে নয় উইকেটে ১১৮ রান তোলে প্রোটিয়ারা। জবাব দিতে নেমে পাঁচ উইকেট ও দুই বল হাতে রেখে স্বস্তির জয় তুলে নেয় অজিরা।

লো স্কোরিং দুই দলই ব্যাট করেছেন টেস্ট মেজাজে। রান তাড়ায় শুরুতেই হোঁচট খায় অস্ট্রেলিয়া। অষ্টম ওভারে ৩৮ রানের মধ্যে তিন উইকেট তুলে নেয় দক্ষিণ আফ্রিকা। এরপরই প্রতিরোধ গড়েন স্টিভেন স্মিথ ও গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। উইকেটের লাগাম টানতে দুজনই ব্যাট করলেন ধীর গতিতে।

স্মিথ-ম্যাক্সওয়েল দুজনই সাজঘরে ফেরেন দলীয় ৮১ রানের মধ্যে। ৩৪ বলে ৩৫ রানে আউট হন স্মিথ। ২১ বলে ১৮ রান এসেছে ম্যাক্সওয়েলের ব্যাট থেকে। ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার ১৫ বলে করেন ১৪ রান। অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ পাঁচ বল খেলেও খুলতে পারেননি রানের খাতা।

১৭ বলে ১১ রান এসেছে মিচেল মার্শের ব্যাট থেকে। শেষ তিনজনকে সাজঘরে পাঠিয়ে ম্যাচ জমিয়ে তোলে প্রোটিয়ারা। স্মিথ-ম্যাক্সওয়েল কিছুটা নির্ভার করলেও দুজনের আউট কঠিন চাপে ফেলে দেয় অস্ট্রেলিয়াকে। ম্যাচ তখন পুরোপুরি জমে গেছে।

২৪ বলে ৩৬ রানের কঠিন সমীকরণ অজিদের সামনে। শেষ দুই ওভারে সমীকরণ দাঁড়ায় ১৮ রানের। এমন চাপের মুখে জ্বলে উঠেছেন মিডল অর্ডারের দুই ব্যাটসম্যান মার্কাস স্টয়নিস ও ম্যাথু ওয়েড। ১৬ বলে ২৪ রানে অজেয় থাকেন স্টয়নিস। ১০ বলে ১৫ রানে অপরাজিত ওয়েড।

এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট খোয়াতে থাকে দক্ষিণ আফ্রিকা। অস্ট্রেলিয়ানদের বোলিং তোপে প্রোটিয়াদের কেউ হাফসেঞ্চুরি করতে পারেননি। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ কুড়ি রানও আসেনি। সর্বোচ্চ ৩৬ বলে ৪০ রানে আউট হন এইডেন মার্করাম।

দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৩ বলে ১৯ রানে অজেয় থাকেন পেসার কাগিসো রাবাদা। ১৮ বলে ১৬ রান করেন ডেভিড মিলার। ১৩ বলে ১৩ রানে বিদায় নেন হেনরিখ ক্লাসেন। ওপেনার ও অধিনায়খ টেম্বা বাভুমা সাত বলে ১২ রনানে আউট হন। বাকি ছয় ব্যাটার যেতে পারেননি দুই অংকে।

দক্ষিণ আফ্রিকাকে অল্পতে থামাতে একক অবদান ছিল না। অস্ট্রেলিয়ার সম্মিলিত প্রচেষ্টার ফসল এটা। দুটি করে উইকেট নিয়েছেন জস হ্যাজলউড, মিচেল স্টার্ক ও অ্যাডাম জাম্পা। একটি করে শিকার ম্যাক্সওয়েল ও প্যাট কামিন্সের।

প্রত্যেকেই বোলিং কোটা পূরণ করেছেন। তবে স্টার্ক ছাড়া প্রত্যেকেই বল হাতে ছিলেন ভীষণ মিতব্যয়ি। ম্যাচ সেরা কে হবেন তা নিয়েই জেগেছিল রোমাঞ্চ। শেষ পর্যন্ত মেডেনসহ ১৯ রানে দুই উইকেট নেওয়া হ্যাজল উড পেয়েছেন ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার।

ম্যাচটা উত্তেজনা ছড়ালেও নিখাদ ক্রিকেটপ্রেমীদের তৃপ্ত করতে পারেনি। দুই দলই ব্যাট করেছে টি-টোয়েন্টি মেজাজের বাইরে গিয়ে। ম্যাচ দেখতে বসা সমর্থকরা দ্বিধায় পড়ার উপক্রম! অস্ট্রেলিয়া-দক্ষিণ আফ্রিকা টেস্ট খেলছে নাকি টি-টোয়েন্টি?