সুপার-১২ এ উঠেই ক্ষোভ ঝাড়লেন মাহমুদউল্লাহ

বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে আইসিসি সহযোগী স্কটল্যান্ডের কাছে হেরে গিয়েছিল বাংলাদেশ। তিন সিনিয়র ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ইনিংসের প্রায় ১৫ ওভার ব্যাটিং করেছিলেন। তাদের শ্লথ গতির ব্যাটিংয়েই হেরেছিল বাংলাদেশ।

সংবাদমাধ্যমে যা খোদ বিসিবি সভাপতি বলেছেন। স্কটিশদের কাছে বাংলাদেশের হারে কষ্ট পেয়েছে ক্রিকেটপ্রেমীরা। কারণ এ হার অকল্পনীয় ছিল। তারপরই দলের এবং তিন সিনিয়রের সমালোচনা হয়েছে বিস্তর। যা ভালো লাগেনি মাহমুদউল্লাহর। বৃহস্পতিবার সুপার-১২ পর্বে খেলা নিশ্চিত করে সংবাদ সম্মেলনে এসেই ক্ষোভ উগরে দিলেন তিনি। দলের সমালোচনায় আহত বোধ করছেন তিনি। দলকে ছোট করা হয়েছে বলেই তার দাবি। বিসিবি সভাপতি, সংবাদমাধ্যম সবার কথাতেই কষ্ট পেয়েছেন অধিনায়ক।

পাপুয়া নিউগিনির বিপক্ষে জয়ের পর সংবাদ সম্মেলনে মাহমুদউল্লাহ বলেছেন, ‘আজকে ভালো খেলছি বলে সবার কাছে মনে হবে (দারুণ কিছু)… আবার এক ম্যাচে খারাপ করলে হয়তো খুব বেশি করে সমালোচনা শুরু হয়ে যাবে। তবে আমরা চেষ্টা করছি, দল হিসেবে যেন ভালো পারফর্ম করতে পারি। এই ফরম্যাটে ওঠা-নামা (পারফরম্যান্সের) সবসময়ই থাকবে। ভালো-খারাপ দিন আসবে। দলের মধ্যে স্থিরতা থাকলেই আমরা তা কাটিয়ে উঠতে পারব।’

নিজেদের ভুল স্বীকার করলেও দলকে ছোট করায় হতাশ মাহমুদউল্লাহ। তিনি বলেছেন, ‘শক্ত হওয়াটাই স্বাভাবিক। গত কয়েকদিনে… ঠিক আছে, আমরা মানুষ, আমরা ভুল করি। এ কারণে একেবারে ছোট করে ফেলা ঠিক নয়। এটা আমাদের দেশ। আমরা যখন খেলি, পুরো দেশ একসঙ্গে খেলি। এটা মাথায় থাকে সবসময়। আমাদের চেয়ে ফিলিংস কারও বেশি নয়, আমার মনে হয়। সমালোচনা অবশ্যই হবে, খারাপ খেলেছি। তবে একেবারেই ছোট করে ফেলা ঠিক নয়। আমাদের সবার কাছেই খারাপ লেগেছে।”

কোন বিষয়টা খারাপ লেগেছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সব… সব, প্রতিটি কিছুই…।’

সংবাদ মাধ্যম নাকি অন্য দিক থেকে আসা সমালোচনা, মাহমুদউল্লাহ বলেন, ‘সব দিক থেকে।’

সমালোচনার স্রোতে দলকে ছোট করা হয়েছে। যা খারাপ লেগেছে অধিনায়কের। তিনি বলেন, ‘স্পর্শ সবই করে। আমরা মানুষ। আমাদেরও অনুভূতি কাজ করে। আমাদের পরিবার আছে। আমাদের বাবা-মায়েরাও বসে থাকে টিভির সামনে। বাচ্চারাও বসে থাকে। তারাও মন খারাপ করে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম তো এখন মানুষের হাতের নাগালে। সবার মোবাইলে আছে। সমালোচনা তো হবেই। আমরাও আশা করি, সমালোচনা হোক। খারাপ খেলেছি, অবশ্যই সমালোচনা হবে। কেন হবে না? কিন্তু সমালোচনার মাধ্যমে যদি কেউ কাউকে ছোট করে ফেলে, তখন সেটা খারাপ লাগে।’

তিন সিনিয়রের ব্যাটের স্ট্রাইক রেট নিয়ে কথা হয়েছে অনেক। এবং সেটা অযৌক্তিক ছিল না। তারা সেদিন লম্বা সময় উইকেটে থেকেও দলকে জেতাতে ব্যর্থ হয়েছেন। এ সম্পর্কে মাহমুদউল্লাহ বলেছেন, ‘অনেক প্রশ্ন এসেছে। আমাদের ব্যাটিংয়ের স্ট্রাইক রেট প্রসঙ্গে। আমাদের তিন সিনিয়র ক্রিকেটারের স্ট্রাইক রেট নিয়ে। আমরা তো চেষ্টা করেছি। চেষ্টার বাইরে তো আমাদের কাছে কিছু নেই। এরকম না যে আমরা চেষ্টা করিনি। আপ্রাণ চেষ্টা করেছি। কিন্তু ফল আমাদের পক্ষে আনতে পারিনি।’

সর্বোপরি সুস্থ সমালোচনা চান মাহমুদউল্লাহ, ‘সমালোচনা হবেই। এটা কাম্য। কিন্তু সুস্থ সমালোচনা হলে সবার জন্য ভালো। আমরাও অনুভব করি। বাংলাদেশের জার্সিটা যখন আমরা গায়ে দেই তখন আমাদেরও ওই অনুভূতি হয় আমরা দেশের জন্য কতটুকু করি। সবারই ত্যাগ থাকে। কারও ব্যথা থাকে। কারও অনেক ইনজুরি থাকে। ওগুলো নিয়ে আমরা খেলি। দিনের পর দিন পেইন কিলার খেয়ে আমরা খেলি। পেছনের গল্পগুলো অনেকেই জানেন না। এজন্য কমিটমেন্ট নিয়ে কখনও প্রশ্ন করা ঠিক নয়।’