বিবর্ণ সাকিব: দুবাইতে হলুদ উৎসব

টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ১৯২ রান তাড়া করে জেতা বেশ কঠিন। তবে বিশাল লক্ষ্যেও ভড়কে যায়নি কলকাতা নাইট রাইডার্স। বরং রান তাড়ায় উড়ন্ত শুরু করে তারা। কিন্তু আশা জাগিয়েও পারল না কলকাতা। দুই ওপেনারের এনে দেওয়া ভিতের ওপর দাঁড়িয়ে ধসে পড়লেন সাকিব আল হাসানরা।

নির্বিষ বোলিং ও মিডল অর্ডারের দায়িত্বহীন পারফরম্যান্সে শিরোপা জেতার সুযোগ হাতছাড়া করল কলকাতা। আজ দুবাইর ফাইনালে সাকিবদের কলকাতাকে ২৭ রানে হারিয়ে আইপিএলের চতুর্থ শিরোপা জিতে নিল চেন্নাই সুপার কিংস। সবশেষ ২০১৮ সালে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল হলুদ শিবির। সর্বোচ্চ পাঁচটি শিরোপা জয়ের রেকর্ড মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের।

চেন্নাইকে হয়তো অল্পতে আটকানো যেত। দুই রানে ফিরতে পারতেন ওপেনার ফ্যাফ ডু প্লেসি। কিন্তু সাকিবের বলে স্টাম্পিংয়ের সুযোগ হাতছাড়া করেন কলকাতা কিপার ডিনেশ কার্তিক। সেটারই চরম মূল্য দিতে হলো। বেঁচে যাওয়া ডু প্লেসির বিস্ফোরক ব্যাটিংয়ের ওপর দাঁড়িয়ে চেন্নাই গড়ে রানের পাহাড়।

টস জিতে চেন্নাইকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানান কলকাতা অধিনায়ক ইয়ন মরগান। ব্যাট হাতে শুরুটা দারুণ করে চেন্নাই। আট ওভারে বিনা ৬১ করেন দুই ওপেনার রুতুরাজ গায়কোয়াড় ও ডু প্লেসি। জুটি ভাঙে গায়কোয়াড় ২৭ বলে ৩৩ রানে বিদায় নিলে। সঙ্গী হারানো ডু প্লেসি সঙ্গ হারাননি।

তাণ্ডব চালাতেই থাকলেন। ঝড় তুললেন রবিন উথাপ্পা-ও। বাড়তে থাকে চেন্নাইর রানের গতি। ১৫ বলে ৩১ রানের ক্যামিও ইনিংস খেলে বিদায় নেন উথাপ্পা। চেন্নাইর সংগ্রহ দাঁড়ায় ১৩.৩ ওভারে ১২৪। উথাপ্পা যেখান থেকে শেষ করেছেন ঠিক সেখান থেকেই শুরু করেন নতুন ব্যাটসম্যান মঈন আলি।

২০ বলে ৩৭ রানের বিধ্বংসী ইনিংসে অপরাজিত থাকলেন 'বাংলাদশের জামাই'। তবে ইনিংসের শেষ বলে থামতে হয়েছে ডু প্লেসিকে। ৫৯ বলে ৮৬ রানে আউট হন দক্ষিণ আফ্রিকান ব্যাটসম্যান। আগ্রাসী ইনিংসে সাতটি চার ও তিনটি ছক্কা হাঁকান ডু প্লেসি। যা তার হাতে তুলে দেয় ফাইনাল সেরার স্বীকৃতি।

তিন ওভারে ৩৩ রানে দিয়ে সাকিব থাকলেন উইকেটশূন্য। চেন্নাইর পতন হওয়া তিন উইকেটের দুটি নিয়েছেন সুনিল নারাইন। একটি শিকার শিভাম মাভির। লোকি ফার্গুসন চার ওভারে দিয়েছেন ৫৬ রান। সাকিবরা লক্ষ্যমাত্রা নাগালে রাখতে পারেননি। পরে আস্কিং রেটের চাপে ডুবেছে কলকাতার স্বপ্ন।

পাহাড়সম লক্ষ্যে ব্যাট করতে নামা কলকাতার শুরুটা ছিল আশা জাগানিয়া। ওভার প্রতি প্রায় নয় রান করে তোলেন দুই ওপেনার শুভমান গিল ও ভেঙ্কাটেশ আইয়ার। দারুণ ছন্দে থাকা কলকাতা হঠাৎই পথ হারায়। বিনা উইকেটে ৯১ থেকে ১০৮ রানের মধ্যে চার উইকেট হারায় কলকাতা। এই ঝড়ে বিদায় নেন টপ অর্ডারের চার ব্যাটসম্যান।

৪৩ বলে ৫১ রান করেন শুভমান। ৩২ বলে ৫০ রানে ফেরেন ভেঙ্কাটেশ। দুই ওপেনারের পর ব্যাট করতে নামা কলকাতার ছয় ব্যাটসম্যানই আউট হলেন এককের ঘরে। সাকিব বিদায় নেন 'গোল্ডেন ডাক'এ। শেষ দিকে ফার্গুসন ও শিভাম মাভির ছোটখাটো ঝড় কলকাতার হারের ব্যবধান কমিয়ে আনে মাত্র।

১১ বলে ১৮ রানে অপরাজিত থাকেন ফার্গুসন। শিভাম ১৩ বলে কুড়ি রানে আউট হন। কলকাতার পতন হওয়া নয় উইকেটের সর্বোচ্চ তিনটি নিয়েছেন শার্দুল ঠাকুর। দুটি করে শিকার জস হ্যাজলউড ও রবিন্দ্র জাদেজার। খালি হাতে ফেরেননি ডোয়াইন ব্রাভো, দ্বীপক চাহারও।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

চেন্নাই সুপার কিংস: ২০ ওভার ১৯২/৯।
কলকাতা নাইট রাইডার্স: ২০ ওভার ১৬৫/৯।
ফল: চেন্নাই সুপার কিংস ২৭ রানে জয়ী।
ফাইনাল সেরা: ফ্যাফ ডু প্লেসি (চেন্নাই সুপার কিংস)
টস: ইয়ন মরগান (কলকাতা নাইট রাইডার্স)।