উড়তে থাকা ইতালিকে মাটিতে নামাল ‘বেবি স্পেন’
- Details
- by খেলাধুলা ডেস্ক
দীর্ঘ দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে উড়ছে ইতালি। আন্তর্জাতিক ফুটবলে টানা ৩৭ ম্যাচ অপরাজিত ছিল রবার্তো মানচিনির দল। অবিশ্বাস্য এই দৌড়ে আজ্জুরিরা গড়েছে জাতীয় দল হিসেবে অপরাজিত থাকার বিশ্ব রেকর্ড, জিতেছে ২০২০ (অনুষ্ঠিত হয়েছে ২০২১ সালে) মহাদেশীয় শ্রেষ্ঠত্বের টুর্নামেন্ট ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা। অবশেষে ইতালির সেই অপ্রতিরোধ্য দৌড়ে যতি পড়ল। আকাশ থেকে ইতালিকে টেনে মাটি দেখাল ‘বেবি স্পেন’।
গত রাতে ইতালির ঘরের মাঠে গিয়েই তাদেরকে হারিয়ে দিয়েছে স্পেনের শিশুরা! ইতালি অবশ্য হয়ে পড়েছে ১০ জনের দল। তাদেরকে ২-১ গোলে হারিয়ে স্পেন উঠে গেছে উয়েফা নেশনস লিগের ফাইনালে।
এই গত জুন-জুলাইয়ে অনুষ্ঠিত ইউরো জিতেছে ইতালি। আজ্জুরিদের সামনে সুযোগ ছিল আরও একটি মহাদেশীয় টুর্নামেন্টের শিরোপা জেতার। ডাবল জয়ের লক্ষ্যে দুর্বার গতিতে সেমিফাইনালেও উঠেছিল ইতালি। গতকালও ফেভারিট ছিল তারাই। একদিকে উড়ন্ত ফর্ম, অন্যদিকে সেমিফাইনালটিও ছিল ইতালির ঘরর মাঠ মিলানের এস্তাদিও সান সিরো স্টেডিয়ামে।
কিন্তু জর্জো কিয়েলিনি, লিওনার্দো বোনুচ্চিরা পারলেন না ডাবল জয়ের স্বপ্ন পূরণ করতে। স্বপ্ন পূরণ করতে দিল না ‘বেবি স্পেন’। বারবার ‘বেবি স্পেন’ শব্দটার ব্যবহারে পাঠক হয়তো খানিকটা বিরক্তই হচ্ছেন। কিন্তু কী আর করা! জয়ের উচ্ছ্বাসে স্পেনের জনপ্রিয় ক্রীড়া দৈনিক ‘মার্কা’ তাদের শিরোনামে এই শব্দটিই ব্যবহার করেছে। অবশ্য ‘বেবি স্পেন’ শব্দটা বেছে নেওয়াটা যথার্থই।
গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে স্পেনকে যারা সুউচ্চ আসনে প্রতিষ্ঠিত করেছে তাদের প্রায় সবাই এখন জাতীয় দলের বাইরে। বেশিরভাগই অবসর নিয়েছেন। সার্জিও রামোস, জেরার্ড পিকে, জর্ডি আলবারা এখনও অবসর নেননি। কিন্তু তাদের কেউই বর্তমানে দলে নেই। তাদের পরিবর্তে স্পেন কোচ দল গড়েছেন এক ঝাক উদীয়মান তরুণ খেলোয়াড়দের নিয়ে। কাল ইতালির মতো মহাপ্রতিপক্ষের বিপক্ষে, নেশনস লিগের সেমিফাইনালের মতো মহাগুরুত্বপূর্ণ ম্যাচটিতেও স্পেন কোচ লুইস এনরিকে খেলিয়েছেন এক ঝাক তরুণকে। বিশেষ করে আক্রমণভাগের সবাই তরুণ।
গাবির বয়স ১৭। ইরেমি পিনোর ১৮। ব্রায়ান গিলের ২০, ফেরান তোরেসের ২১। পাউ তোরেস, মিকেল ওয়ারজাবাল, উনাই সিমনরা পা দিয়েছেন ২৪-এ। ইতালি-বধে এরাই ছিলেন লুইস এনরিকের মূল সেনা। এদেরই একজন বাকিদের ছাপিয়ে বনে গেছেন নায়ক। ‘বেবি স্পেনে’র হয়ে দুটো গোলই করেছেন ২১ বছর বয়সী তরুণ ফেরান তোরেস। তাকে দুটো গোলই বানিয়ে দিয়ে পার্শ্ব নায়ক বনে গেছেন মিকেল ওয়ারজাবাল।
নিজেদের ঘরের মাঠে ইতালি শুরুটা করেছিল দারুণ। তবে ইতালি নামক দৈত্য বধের আশায় তারণ্যনির্ভর স্পেন দ্রুতই নিজেদের খেলাটা গুছিয়ে নেয়। সফরকারী দলটি তার ফলও পায় দ্রুতই। ম্যাচের ১৭ মিনিটেই স্পেনকে এগিয়ে দেন ফেরান তোরেস। তার গোল গর্জন করতে থাকা সান সিরোকে স্তব্ধ করে দেয়। ১-০তে এগিয়ে যাওয়া স্পেন প্রথমার্ধেই পেয়ে যায় ২-০ লিড। প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে স্পেনের হয়ে দ্বিতীয় গোলটিও করেন ম্যানচেস্টার সিটিতে অভিজ্ঞ পেপ গার্দিওলার হাতে গড়া তরুণ ফরোয়ার্ড ফেরান তোরেস।
স্পেন যোগ্যতর দল হিসেবেই জিতেছে। তবে ভাগ্যও সহায়তা করেছে তাদের। কারণ, ম্যাচের ৪১ মিনিটেই ইতালি পরিণত হয় ১০ জনের দলে। টানা দ্বিতীয় হলুদকার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন রক্ষণভাগের অভিজ্ঞ খেলোয়াড় লিওনার্দো বোনুচ্চি। বাকি ৪৯ মিনিট ইতালিকে খেলতে হয়েছে ১০ জন নিয়ে। খেলোয়াড় একজন কম, দলও ২-০ গোলে পিছিয়ে। তারপরও হাল ছেড়ে দেয়নি ইতালি। বরং একজন খেলোয়াড় কম নিয়েও শেষ পর্যন্ত করে গেছে সমতা ফেরানোর লড়াই।
সেই লড়াইয়ে মানচিনির দল ৮৩ মিনিটে একটি গোলও আদায় করে নেয়। গোলটি করে ইতালির সমতার স্বপ্ন রাঙিয়ে তোলেন বদলি হিসেবে নামা পেলেগ্রিনি। ব্যবধান ২-১ করার পর ইতালি আরও মরিয়া হয়ে ওঠে। আক্রমণও গড়ে একের পর এক। কিন্তু তাদের দুর্ভাগ্য, স্পেনের তরুণ গোলরক্ষক উনাই সিমন গ্লাভস হাতে অতিমানবীয় হয়ে উঠেন। আসলে গ্লাভস হাতে পুরো ম্যাচেই দুর্দান্ত ছিলেন সিমন।
ডেভিড গেয়াদের মতো অভিজ্ঞ-পরীক্ষিত গোলরক্ষকদের বাদ দিয়ে কোচ এনরিকে কেন তাকে জাতীয দলে এক নম্বর হিসেবে বেছে নিয়েছেন, সেটা প্রমাণ করতে পুরো ম্যাচেই অসাধারণ সব সেভ করেছেন সিমন। তবে শেষ দিকে অবিশ্বাস্য দুটো সেভ করে দলকে ড্রয়ের ভয় থেকে বাঁচিয়ে তুলে দিয়েছেন স্বপ্নের ফাইনালে।
আগামী বুধবার টুর্নামেন্টের ফাইনালে। শিরোপার সেই লড়াইয়ে স্পেনের প্রতিপক্ষ হবে ফ্রান্স ও বেলজিয়ামের মধ্যকার দ্বিতীয় সেমিফাইনালের বিজয়ী দল। ফ্রান্স-বেলজিয়ামের দ্বিতীয় সেমিফাইনালটি অনুষ্ঠিত হবে আজ রাতে, ইতালিরই তুরিনের আলিয়াঞ্জ অ্যারেনায়। যেটি জুভেন্টাস স্টেডিয়াম হিসেবেও পরিচিত।
গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...
খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর
Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.
Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.