নায়ক থেকে রাতারাতি খলনায়ক পিকে!

মাঠের পারফরম্যান্সে ধার অনেকটাই হারিয়ে ফেলেছেন জেরার্ড পিকে। আগের মতো গতি নেই; কৌশলগত দক্ষতাও হারিয়ে ফেলেছেন অনেকটাই। তাতে স্পষ্ট পিকের ক্যারিয়ার এখন পড়ন্ত বেলায়। এই সময়েও বার্সেলোনার মধ্যমণি হয়ে উঠেছিলেন তিনি। সেটা অবশ্য পারফরম্যান্স দিয়ে নয়।

জেরার্ড পিকে

মাঠের বাইরের ইস্যুতে মৌসুমের শুরু থেকেই আলোচিত তিনি। ক্লাবের আর্থিক দুঃসময়ে অর্ধেক বেতনে খেলতে রাজি হয়ে চলে গেছেন নায়কবনে। কিন্তু নায়ক থেকে খলনায়ক বনে যেতে সময় লাগল না পিকের। তার বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ আছে সতীর্থদের ও প্রধান কোচ রোনাল্ড কোম্যানের।

তার বিরুদ্ধে শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ উঠেছে। স্প্যানিশ মিডিয়ার ভাষ্য, বার্সেলোনার ড্রেসিংরুমের আবহ নষ্ট করছেন পিকে। সাজঘরে আধিপত্য বিস্তার করেন তিনি। ড্রেসিংরুমের বাইরেও প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা চালাচ্ছেন। মাঠের খেলার মনোযোগ হারিয়ে পিকে ক্লাবের ব্যবস্থাপনায় জড়িয়েছেন।

বার্সার নীতি-নির্ধারকদের কয়েকজনের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তুলেছেন পিকে। আর এই প্রভাব তিনি খাটাচ্ছেন ক্লাবের নতুন ও প্রতিভাবান ফুটবলারদের ওপর। এমনকি কোচ কোম্যানকেও তোয়াক্কা করছেন না। বরং নানারকম অভিযোগ তুলে পরিচালকদের কাছে বিষিয়ে তুলছেন কোচকে।

বুধবার এক প্রতিবেদনে পিকে ও বার্সার হাঁড়ির খবর ফাঁস করেছে স্প্যানিশ ক্রীড়া দৈনিক মার্কা। প্রতিবেদনে পিকের অসংলগ্ন কথাবার্তা ও নেতিবাচক প্রভাব তুলে ধরা হয়েছে। তাতে বিব্রত কোম্যান। ড্রেসিংরুমের অনেকেই নাকি এখন পিকেকে ভালো চোখে দেখছেন না। বিষয়টা ক্লাব সভাপতি হুয়ান লাপোর্তা পর্যন্ত পৌঁছে গেছে।

এমনিতেই পারফরম্যান্সের নড়বড়ে অবস্থা। তার ওপর মনোযোগ হারিয়ে পিকে ব্যক্তিগত ব্যবসার দিকে মনোযোগ বাড়িয়েছেন। তা ছাড়া অভিজ্ঞ এই ডিফেন্ডারে আচরণও সন্তুষ্ট করতে পারছে না কোচ কিংবা সতীর্থদের। সবমিলিয়ে নায়ক থেকে রাতারাতিই খলনায়ক বনে চলে গেলেন পিকে।

বার্সার দুই তরুণ প্রতিভা আনসু ফাতি এবং রিকি পুইগ পিকের আচরণে কষ্ট পেয়েছেন বলে খবর বেরিয়েছে। এখানেই শেষ নয়, কোম্যানের সঙ্গে লাপোর্তার সম্পর্কে চিড় ধরাতে পিকে নাকি সূচক হিসেবে কাজ করেছেন। যদিও লক্ষ্যে সফল হননি তিনি। বরং লাপোর্তা ও কোম্যানের সম্পর্ক আরো দৃঢ় হয়েছে।

একদিকে ক্লাবের ভেতরে 'রাজনীতি' করছেন অন্যদিকে ব্যক্তিগত ব্যবসায়িক মনোভাব বাড়াচ্ছেন পিকে। তার ব্যবসায়িক সত্ত্বা অবশ্য ভালোভাবেই প্রকাশ পাচ্ছে। পিকে এবং তার বন্ধুর যৌথ প্রতিষ্ঠান কসমস হোল্ডিং এই মৌসুুমে ফ্রেঞ্চ লিগ ওয়ানের স্বত্ব কিনেছে। গত মৌসুমে তারা পেয়েছে ইতালিয়ান সিরি'বি'র সম্প্রচার স্বত্ব।

পিকেদের প্রতিষ্ঠান একটি ফুটবল ক্লাবও কিনেছেন। অ্যান্ডোরা এফসি নামক ক্লাবটিকে প্রতিষ্ঠিত করতে লড়াই করছেন তিনি। শুধু ফুটবল নয়, টেনিসের প্রতিও ঝোঁক আছে পিকেদের। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ডেভিস কাপের সম্প্রচার স্বত্ব কিনে ভালোই আয় করেছে কসমস। ধারণা করা হচ্ছে, এসবকিছুই পিকেকে মাঠের খেলা থেকে দূরে সরিয়ে নিচ্ছে।