হারল রাজস্থান, লড়লেন কেবল মোস্তাফিজ

খুব বিধ্বংসী বোলিং করেননি মোস্তাফিজুর রহমান। আবার খারাপও করেননি কাটার মাস্টার। নিজের কাজটা ঠিকঠাক করে গেছেন বাংলাদেশি পেসার। তিন ওভারে কুড়ি রানের বিনিময়ে নিয়েছেন জোড়া উইকেট। লড়াই করেছেন প্রায় একাই। কিন্তু অন্যদের ব্যর্থতার মাসুল দিতে হয়েছে রাজস্থান রয়্যালসকে। ফিজের ছয় সতীর্থের কেউই উইকেট পাননি!

বোলিংয়ের পাশাপাশি ফিল্ডিংয়েও মোস্তাফিজ ছিলেন দুর্দান্ত

গতকাল বুধবার রাতে দুবাইতে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুর বিরুদ্ধে মোস্তাফিজের দল হেরেছে সাত উইকেটে। অথচ এভিন লুইস ঝড়ের সুবাদে দারুণ একটা সূচনা করেছিল রাজস্থান। বড় সংগ্রহের আভাস দিয়ে দলটা করতে পারেনি দেড় শ-ও। আচমকা ব্যাটিংয়ে লাগে মড়ক। শুরু হয় ছন্দপতন। কমে আসে রানের গতি।

অলআউটের শঙ্কাতেও পড়েছিল রাজস্থান। শেষ পর্যন্ত অবশ্য তা এড়ানো গেছে, তবে হার ঠেকানো যায়নি। বোলারদের লড়াইয়ের জন্য নয় উইকেটে ১৪৯ রানের পুঁজি পায় রাজস্থান। এই রান হেসেখেলেই তাড়া করেছে ব্যাঙ্গালুরু। তিন উইকেট হারিয়ে ১৭ বল হাতে রেখেই সহজ জয় তুলে নেয় বিরাট কোহলির দল (১৫৩/৩)।

আইপিএলের চলতি আসরে ১১তম ম্যাচে এটা ব্যাঙ্গালুরুর সপ্তম জয়। এই জয়ে প্লে-অফের পথে অনেকটাই এগিয়ে গেলেন কোহলি অ্যান্ড কোং। ১৪ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয়স্থান ধরে রেখেছেন তারা। বিপরীতে ১১ ম্যাচের সাতটিতে হেরে খাদের কিনারায় গিয়ে দাঁড়াল রাজস্থান। আট পয়েন্ট নিয়ে তালিকার সাত নম্বরে আছেন স্যামসন-মোস্তাফিজরা।

টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে বিনা উইকেটে ৪৯ বলে ৭৭ রান করে রাজস্থান। পরের বলেই ধাক্কা। যাশাভি জাসওয়াল আউট হন। ২২ বলে তিনটি চার ও দুই ছক্কায় ৩১ রানে ফেরেন রাজস্থান ওপেনার। অধিনায়ক সঞ্জু স্যামসনকে নিয়ে ধাক্কাটা সামলে ওঠেন বিধ্বংসী আরেক ওপেনার এভিন লুইস। ১১ ওভারে শতকের ঘরে পৌঁছায় রাজস্থান।

দ্বাদশ ওভারের প্রথম বলেই ফের ধাক্কা। এবার আউট লুইস। ৩৭ বলে পাঁচ চার ও তিন ছক্কায় ৫৮ রান করেন ক্যারিবীয় সেনসেশন। বৃথা গেছে দুই ওপেনারের শুরুর ঝড়। তাদের এনে দেওয়া মজবুত ভিতের ওপর দাঁড়িয়ে ধুঁকেছে অন্যরা। লুইসদের বিদায়ের পর দুই অংক ছুঁতে পারলেন দুজন। এদের মধ্যে স্যামসন ১৫ বলে ১৯ রান করেন। শেষ দিকে ১১ বলে ১৪ রান এসেছে ক্রিস মরিসের ব্যাট থেকে।

ব্যাটিংবান্ধব উইকেটে দেড় শ রানের লক্ষ্যে শুরু থেকেই আগ্রাসী মেজাজে ব্যাট করে ব্যাঙ্গালুরুর টপ অর্ডার। দুই ওপেনার ৫৮ রানের মধ্যে ফিরলেও কমেনি তাদের রানের গতি। কুড়ি বলে ২৫ রানে আউট হন অধিনায়ক কোহলি। তার সঙ্গী দেবদূত পাড্ডিকাল ১৭ বলে ২২ রানে ফেরেন। দুজনই সমান চারটি করে চার মেরেছেন।

কোহলি-পাড্ডিকাল ফেরার পর তৃতীয় উইকেটে ৬৯ রানের কার্যকর জুটি গড়েন শ্রীকর ভারত ও গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। জুটি গড়ার পথে হাফসেঞ্চুরির সম্ভাবনা জাগান দুজনই। কিন্তু ৩৫ বলে ৪৪ রানে আউট হয়ে যান ভারত। তিনটি চার ও এক ছক্কায় ক্যামিও ইনিংসটি সাজান তিনি। তবে ম্যাচটা শেষ করেই বাইশ গজ ছেড়েছেন ম্যাক্সওয়েল।

ছয় চার ও এক ছক্কায় ৩০ বলে ৫০ রানের ঝোড়ো হাফসেঞ্চুরি তুলে নেন অস্ট্রেলিয়ান অলরাউন্ডার। একই সঙ্গে ব্যাঙ্গালুুরুকে পৌঁছে দেন জয়ের বন্দরে। তবে ম্যাচসেরা হননি দুজনের একজনও। চার ওভারে ১৮ রান খরচায় দুই উইকেট নিয়ে যুভেন্দ্র চাহাল হয়েছেন ম্যাচসেরা। দুই ওভারে দশ রানের বিনিময়ে জোড়া উইকেট নিয়েছেন শাহবাজ আহমেদও। হার্শেল প্যাটেল তিন উইকেট নিলেও চার ওভারে রান দিয়েছেন ৩৪।