পিএসজির দুর্দান্ত জয়: মেসির প্রথম গোল

এমনিতেই প্যারিস সেন্ট জার্মেইতে (পিএসজি) অভিষেকের জন্য ভালোই অপেক্ষা করতে হয়েছে লিওনেল মেসিকে। 'দীর্ঘ' অপেক্ষার পর নতুন ঠিকানায় অভিষেকও হয়েছে তার। ফ্রেঞ্চ লিগ ওয়ানে দুটি ম্যাচ খেলেও ফেলেছেন। কিন্তু গোল পাচ্ছিলেন না। খুব স্বাভাবিকভাবেই হতাশ ছিলেন পিএসজি ও মেসি ভক্তরা।

মাঠে ফিরেছেন মেসি। গোলও করেছেন

সেই হতাশা কয়েকগুণ বাড়িয়ে হাঁটুর চোট নিয়ে মেসি চলে যান মাঠের বাইরে। ফরাসি লিগে তাকে ছাড়া দুটো ম্যাচ খেলে অবশ্য প্রত্যাশিত জয় তুলে নিয়েছে প্যারিসিয়ানরা। কিন্তু মেসির ফেরা ও গোলের জন্য যেন তর সইছিল না ভক্তদের। মঙ্গলবার রাতে সমর্থকদের দুই অপেক্ষারই অবসান হলো।

চোট কাটিয়ে মাঠে ফিরেছেন মেসি। গোলও করেছেন। সেটাও বড় মঞ্চে; উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগে। মঙ্গলবার রাতে গ্রুপপর্বের ম্যাচটিতে ম্যানচেস্টার সিটিকে ২-০ গোলে হারিয়েছে পিএসজি। দলের পক্ষে দ্বিতীয় গোলটি করেছেন আর্জেন্টিনা অধিনায়ক। পিএসজিতে এটাই তার প্রথম গোল। এর আগে বার্সেলোনার জার্সিতে ৬৭২টি গোল করেছিলেন মেসি।

ম্যানচেস্টার সিটিকে ২-০ গোলে হারিয়েছে পিএসজি

অবশ্য সিটির বিপক্ষে ছয়বারের বর্ষসেরা ফুটবলার গোল করবেন সেটা এক প্রকার অনুমিতই ছিল। কারণ তার প্রতিপক্ষ কোচ পেপ গার্দিওলা। সাধারণত, স্প্যানিশ এই কোচ প্রতিপক্ষ দলের ডাগ আউটে থাকা মানেই মেসির গোল। কিছুটা অবাক হওয়ারই কথা। কারণ গার্দিওলা যে মেসিকে বোতলবন্দি করতে জানেন না!

মেসির আজকের মেসি হয়ে ওঠার নেপথ্য নায়ক যারা আছেন তাদের মধ্যে গার্দিওলা অন্যতম। গুরু-শিষ্যের রসায়নে সম্ভাব্য সবকিছুই জিতেছে স্প্যানিশ জায়ান্ট বার্সেলোনা। সময়ের ব্যবধানে মেসি এবং গার্দিওলা দুজনেরই পথ বদলে গেছে। বার্সা ছেড়ে বায়ার্ন মিউনিখ ঘুরে গার্দিওলা এখন ম্যানচেস্টার সিটিতে।

আর এই মৌসুমে শৈশবের ক্লাব ছেড়ে মেসি যোগ দিয়েছেন পিএসজিতে। নতুন ঠিকানায় এবারই গুরুর সঙ্গে তার প্রথম সাক্ষাৎ। এর আগে বার্সেলোরার জার্সিতে গার্দিওলার বায়ার্ন মিউনিখ ও সিটির মুখোমুখি হয়েছিলেন আর্জেন্টিনা অধিনায়ক। গার্দিওলার বিপক্ষে চার ম্যাচে হ্যাটট্রিকসহ মেসি করেন ছয় গোল।

যে তিনটি ম্যাচে মেসি গোল করেছেন সবকটিতেই জিতেছে তার দল বার্সেলোনা। অর্থাৎ মেসির গোল মানেই গার্দিওলার দলের বিপক্ষে জয় নিশ্চিত। পিএসজিতে এসেও ধারাটা অব্যাহত রাখলেন মেসি। পিএসজির দুই তারকা নেইমার-এমবাপ্পেকে আটকে রাখলেও পুরনো শিষ্যকে থামাতে পারেননি স্প্যানিশ কোচ। একেই বলে 'গুরুমারা বিদ্যা'।

ঘরের মাঠ পার্ক ডু প্রিন্সেসে পিএসজি অবশ্য লিড নিয়েছিল ম্যাচের শুরুতেই। আট মিনিটে ম্যানচেস্টার সিটির জালে বল জড়ান ইদ্রিসা গায়া। এই গোলটাই পিএসজির জয়ের জন্য যথেষ্ঠ ছিল। কিন্তু ৭৪ মিনিটে বহুল কাঙ্খিত গোলটা পেয়ে যান মেসি। ইউরোপের শীর্ষস্থানীয় প্রতিযোগিতায় এটা তার ১২১ গোল।

যে গোলটার অপেক্ষায় ভক্তরা বুঁদ হয়ে বসেছিলেন সেটা নিশ্চিতভাবেই চোখ প্রশান্তি এনে দেবে। গোলটার উৎস আবার এমবাপ্পে। মেসি আসার পর যার দলবদল নিয়ে তুমুল গুঞ্জন উঠেছিল। ফরাসি সেই ফরওয়ার্ডের সঙ্গে ওয়ান-টু-ওয়ান খেলে বাঁ-পায়ের জোরাল শট। কুড়ি গজ দূরত্ব থেকে নেওয়া মেসির শটটা বুলেট গতিতে খুঁজে নেয় সিটির জালের ঠিকানা।

চ্যাম্পিয়নস লিগের এই মৌসুমে এটা প্রথম জয় পিএসজির। দুই ম্যাচে চার পয়েন্ট নিয়ে ফরাসি ক্লাবটি উঠেছে 'এ' গ্রুপের শীর্ষে। তাদের সমান ম্যাচ ও পয়েন্ট ক্লাব ব্রাগার। কিন্তু গোলগড়ে পিছিয়ে দুইয়ে আছে বেলজিয়ান ক্লাবটি। দুই ম্যাচে তিন পয়েন্ট নিয়ে ম্যানচেস্টার সিটি নেমেছে তিনে।

দুই ম্যাচের দুটিতে হেরে লাইপজিগ চারে। কাল রাতে ঘরের মাঠে ক্লাব ব্রাগার বিরুদ্ধে এগিয়ে থেকেও ২-১ গোলে হেরেছে জার্মান জায়ান্টরা।

এক নজরে ফলাফল:

আয়াক্স ২-০ বেসিক্টাস
শাখতার দানেৎস্ক ০-০ ইন্টার মিলান
রিয়াল মাদ্রিদ ১-২ শেরিফ তিরাসপল
পোর্তো ১-৫ লিভারপুল
পিএসজি ২-০ ম্যানচেস্টার সিটি

এসি মিলান ১-২ অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ
লাইপজিগ ১-২ ক্লাব ব্রাগা
বরুসিয়া ডর্টমুন্ড ১-০ স্পোর্টিং লিসবন