হকার থেকে অলিম্পিকের সোনাজয়ী!

সালভাদরের রাস্তায় সেদিনও সবজি বিক্রি করতেন রবসন কনসেইকাও। কখনো বিক্রি করতেন আইসক্রিম। দামি গাড়ির কাচে টোকা দিয়ে আবদার করতেন তার কাছ থেকে কিছু একটা কিনে নিতে। জীবন- সংগ্রামের সবচেয়ে কঠিন কাজটাই তিনি করে এসেছেন। এমন একজন সংগ্রামীর কাছে অলিম্পিকে সোনা জেতাটা তেমন কঠিন কিছু বোধহয় নয়!

কনসেইকাও কিন্তু সেটা প্রমাণই করে দিলেন! হকার থেকে অলিম্পিকে ঢুকে পড়া বক্সিংয়ে ব্রাজিলের ইতিহাসে জিতলেন প্রথম সোনা। সেটাও দেশের মাটিতে। কনসেইকাও নিশ্চয় ভুলেই গেছেন, ঠিক কতোটা সংগ্রাম করে এতোদিন বেঁচে থাকতে হয়েছে তাকে।

কিন্তু কনসেইকাও কিছুই ভোলেননি। সোনা জিতে তিনি দেশের নায়ক হয়ে গেছেন, এটা সত্য। তাই বলে নিজের ঘামে ভেজা অতীতটাকে তিনি ভুলতে পারেননি। ভোলার চেষ্টাই করেননি। কেনই বা করবেন; ওই অতীতই তাকে যুগিয়েছে অনন্ত অনুপ্রেরণা।

কনসেইকাওয়ের অনুপ্রেরণা অবশ্য কেবল অতীতই নয়, তার ফুটফুটে কন্যা সন্তানও তাকে দিয়ে এগিয়ে যাওয়ার অনুপ্রেরণা। সোনা জিতে ব্রাজিলকে আনন্দে ভাসিয়ে দেয়ার পর পুরস্কার নেয়ার মঞ্চে সেটাই বলেছেন কনসেইকাও।

সালভাদরের সামান্য হকার থেকে অলিম্পিকের নায়ক হয়ে যাওয়ার পথে কনসেইকাও সঙ্গ পেয়েছেন তার দেশের সব মানুষের। কনসেইকাও রিংয়ে নামবেন বলেই এ দিন বক্সিং দেখতে গ্যালারিতে হাজির হয়েছিলো সম্ভাব্য সর্বোচ্চ দর্শক। খেলা বলতে যাদের কাছে এক নম্বরে ফুটবল, সেই তারাই কনসেইকাওয়ের জন্য বক্সিংকেই একদিনের জন্য বানিয়ে ফেললো ফুটবল! গ্যালারিতে থেকে শ্লোগান উঠলো ব্রাজিল ব্রাজিল!

এতেই রক্তে নাচন উঠে গেলো তার। ফ্রেঞ্চ প্রতিপক্ষ সোফিয়েন ওমিহাকে হারিয়ে জিতলেন সোনা। নিজের সঙ্গে জেতালেন দেশকেও। এর আগে কোনোদিন বক্সিংয়ে সোনা জয়ের কীর্তি ছিলো না ব্রাজিলিয়ানদের।

অলিম্পিক মানেই অবিশ্বাস্য সব গল্প। সেই গল্পের নতুনতম সংযোজন নিঃসন্দেহে কনসেইকাও। ভবিষ্যতে ব্রাজিল হয়তো বক্সিংয়ে আরো অনেক সোনাই জিতবে। সেই সোনাজয়ীদের কাছে অনুপ্রেরণার আধার হয়ে থাকবেন কনসেইকাও।

আপনি আরো পড়তে পারেন

বোল্টের সেকেন্ডে আয় ৫৫ কোটি টাকা!

অমরত্বের পথে এগোলেন বোল্ট

অলিম্পিক: মেডেল বিতরণের মঞ্চে বিয়ের প্রস্তাব!

হিজাব মাথায় ইতিহাস গড়লেন সৌদি নারী

২৩ সোনা জিতে বিদায় ফেলপসের