‘সাকিব চ্যাম্পিয়ন বোলার’

মন্থর উইকেট। তবু লড়াই করার জন্য ১০৪ রানের পুঁজি অবশ্য যথেষ্ঠ ছিল না। বাংলাদেশের ছুড়ে দেওয়া ‘অল্প’ রান তাড়া করতে নেমে অস্ট্রেলিয়া জিতেছে তিন উইকেট ও ছয় বল হাতে রেখেই। তবে নাটকীয় ম্যাচটা সহজে হারল না টাইগাররা। লড়াই করে গেছে শেষ পর্যন্ত। লড়াকু একটা হারের পর আফসোস জাগাচ্ছে সাকিবের ওই ওভারটা।

ম্যাচের চতুর্থ ও নিজের দ্বিতীয় ওভারে এসে সাকিব দিলেন ৩০ রান। তিনে নামা ড্যানিয়েল ক্রিশ্চিয়ানের কাছে হজম করলেন পাঁচ ছক্কা। ম্যাচটা কার্যত ওখানেই শেষ হয়ে গেছে। অমন বাজে ওভারটার পরও লড়াই চালিয়ে যান মুস্তাফিজ-মেহেদিরা। তাদের দারুণ বোলিংয়ে ১১তম ওভারে ৬৫ রানে অস্ট্রেলিয়ার ছয় উইকেট তুলে নিয়েছিল স্বাগতিক শিবির।

এই ঝড়েই বিদায় নিয়েছেন ক্রিশ্চিয়ান। ১৫ বলে এক চার ও পাঁচ ছক্কায় ৩৯ রানে ফেরেন তিনি। শেষ পর্যন্ত অ্যাস্টন অ্যাগারের ২৭ বলের ২৭ রানের কার্যকর ইনিংসের সুবাদে স্বস্তির জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে অস্ট্রেলিয়া। পাঁচ ম্যাচের সিরিজে এটা প্রথম জয় অজিদের। আগামী একই ভেন্যুতে সোমবার পঞ্চম ও শেষ টি-টোয়েন্টি অনুষ্ঠিত হবে।

ম্যাচ শেষে অবধারিতভাবেই সাকিবের পাঁচ ছক্কা হজমের প্রসঙ্গ উঠল। উত্তরে বিধ্বস্ত সাকিবের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছেন, ‘টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে এটা হতেই পারে। আমরা জানি সাকিব চ্যাম্পিয়ন বোলার। সে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়াবে।’

অধিনায়ক যথার্থই বলেছেন। কুড়ি ওভারের ক্রিকেটে এক ওভারে ৩০ রান অবিশ্বাস্য কিছু না। কিন্তু চলমান সিরিজের প্রেক্ষাপট ও উইকেট বিবেচনায় ক্রিশ্চিয়ানের অমন ব্যাটিং বিস্ময়কর। শুধু ওই ওভারেই নয়, সাকিব সুবিধা করতে পারেননি বাকি তিন ওভারেও। চার ওভার মিলিয়ে সাকিব দিয়েছেন ৫০ রান।

আর বাকি ১৫ ওভারে অন্যরা মিলে দিয়েছেন ৫৫ রান। সাকিবের ওই একটা ওভারই যে ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারণ করে দিয়েছেন তা অবশ্য মানছেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ, ‘সাকিবের ওভারটি গুরুত্বপূর্ণ ছিল। ওই ওভারে উইকেট এলে দৃশ্যপট বদলে যেত। কিন্তু ড্যান ক্রিস্টিয়ান পুরো চিত্র বদলে দেয়। নেমেই ব্যাট চালাতে থাকে এবং টানা চার ছক্কা পেয়ে যায় (আসলে পাঁচ ছক্কা)।’

অথচ শনিবারের এই ম্যাচেই মুস্তাফিজ চার ওভারে দিয়েছেন নয় রান। শুরু ও শেষ দিকে দারুণ বোলিং করেছেন কাটার মাস্টার। প্রথম স্পেলের পর তাকে কেন দেড়িতে আনা হলো এনিয়ে অবশ্য প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে। এনিয়ে রিয়াদের ভাষ্য, ‘মুস্তাফিজের দুটি ওভার রাখা দরকার ছিল। আমরা খুব কম স্কোর নিয়ে খেলছিলাম। বোলাররা ভালো করেছে, ব্যাটসম্যানরাই দাঁড়াতে পারেনি।’

বাংলাদেশ অবশ্য ম্যাচের প্রথম অংশেই হেরে গেছে। তবু ১০৪ রানের পুঁজি নিয়ে মুস্তাফিজরা যেভাবে অস্ট্রেলিয়াকে কাঁপিয়ে দিয়েছেন সেটার বিশেষণ এক কথায় হতে পারে অসাধারণ।