ইংল্যান্ডের ড্রেসিংরুমে গৃহযুদ্ধ!

এমন অভিজ্ঞতা আগেও হয়েছে। দুর্ভাগা ইংল্যান্ড মেজর টুর্নামেন্টের ১০ ম্যাচের সাতটিতেই টাইব্রেকারে হেরেছে। তবে রোববার ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামের হারটা সব হতাশার উর্ধ্বে। প্রথমবার ইউরোর ফাইনালে উঠেও শিরোপা না পাওয়ার আক্ষেপে পুড়ছে থ্রি লায়নরা। পেনাল্টি শ্যুট আউটে তাদের ৩-২ গোলে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় ইতালি।

মহাদেশীয় শ্রেষ্ঠত্বের টুর্নামেন্টে এটা আজ্জুরিদের দ্বিতীয় ট্রফি। হারানো রাজত্ব উদ্ধার করতে ইতালির সময় লাগল ৫৩ বছর। দুই চ্যাম্পিয়নশিপের মাঝে দুবার ইউরোর ফাইনালে হেরেছে। অথচ ইউরোপ সেরা হতে না পারা সেই দলটাই ওই সময়ের মধ্যে দুবার বিশ্বজয় করেছে। অবশেষে ইউরোপিয়ান ফুটবলের মুকুট ফিরে পেল তারা।

নিজেদের আপ্রাণ চেষ্টা তো ছিলই, স্বপ্নপূরণের নেপথ্যে ভাগ্য ইতালির পাশে ছিল। সেদিক থেকে এই হারটা ইংল্যান্ডের দুর্ভাগ্য বলাই যায়। কিন্তু এটাকে শুধু দুর্ভাগ্য বলতে নারাজ অনেক ইংলিশ। প্রধান কোচ গ্যারেথ সাউথগেটের কৌশলগত ঘাটতি ও পেনাল্টির মনোনীত ফুটবলারদের অনভিজ্ঞতাকেই দায়ী করছেন অনেকেই।

টাইব্রেকারে প্রথম দুই শটে গোল করলেও পরের তিনটিই মিস করে ইংল্যান্ড। স্পট কিক থেকে শট নেন যথাক্রমে মার্কাস রাশফোর্ড, জ্যাডন স্যানচো ও বুকায়ো সাকা। এদের মধ্যে দুজনই মাঠে নেমেছেন অতিরিক্ত সময়ের শেষ দিকে। মাঠ থেকে উঠিয়ে দেওয়া হয় অভিজ্ঞ ফুটবলার জর্ডান হ্যান্ডারসন ও লুক শকে।

এরপরও মাঠে অভিজ্ঞ খেলোয়াড় ছিলেন। জ্যাক গ্রেয়ালিস, রহিম স্টার্লিংয়ের মতো অভিজ্ঞ ও পরীক্ষিত ফুটবলার থাকা সত্ত্বেও তাদের পেনাল্টির জন্য নির্বাচন করেননি ইংল্যান্ড কোচ। তাই সাউথগেটকে নিয়ে বিতর্ক চরমে। অনিচ্ছাকৃত হলেও সেটাকে আরো উসকে দিয়ে ইংলিশদের ড্রেসিংরুমে এক প্রকার গৃহযুদ্ধ লাগিয়ে দিলেন গ্রেয়ালিস।

সোমবার অ্যাস্টন ভিলা প্লে-মেকার জানালেন, সাউথগেট যখন পাঁচজনের নাম লিখছিলেন তখন এগিয়ে আসেন গ্রেয়ালিস। অভিজ্ঞ এই মিডফিল্ডার পেনাল্টি শট নিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তাকে সুযোগ দেওয়া হয়নি। সোমবার সোশ্যাল মিডিয়ায় এক পোস্টে সেই বিস্ফোরক খবরটা দিলেন গ্রেয়ালিস, ‘আমি বলেছিলাম, আমি একটা (পেনাল্টি শট) নিতে চাই।’

গ্রেয়ালিসের চাওয়া পূরণ হয়নি। বরং অনভিজ্ঞতার মাসুল দিয়ে হতাশায় নুয়ে পরে ইংল্যান্ড। তবে নিজের প্রতি কোচ আস্থা রাখতে না পারায় হতাশ নন অ্যাস্টন ভিলা প্লে-মেকার। বরং সাউথগেটকে সমর্থন দিচ্ছেন গ্রেয়ালিস, ‘টুর্নামেন্টজুড়ে কোচ অনেক সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এই ম্যাচেও তিনি তাই করেছেন।’

অবশ্য অ্যাস্টন ভিলায় কখনো পেনাল্টি নেননি গ্রেয়ালিস। কিন্তু বরাবরই তিনি আত্মবিশ্বাসী। পেশাদার ক্লাব ক্যারিয়ারে গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ফ্রি-কিক নিয়ে ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারণ করার উদাহরণ আছে তার। সেই আত্মবিশ্বাস থেকেই ফাইনালে পেনাল্টি নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন অভিজ্ঞ এই মিডফিল্ডার।