হ্যারি কেন: চিরজীবন দুঃখটা বয়ে বেড়াতে হবে

এত কাছে তবু কতদূর। ঘরের মাঠ ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে শিরোপা সুবাস পেয়েও শেষ পর্যন্ত বঞ্চিত হলো ইংল্যান্ড। রোববার রাতে দুই ঘণ্টার লড়াইয়ের ফল ১-১ থাকার পর ফাইনাল গড়ায় পেনাল্টিতে। যেখানে বাজিমাত ইতালির। কিয়েলিনি-বনুচ্চিদের কাছে ৩-২ গোলে টাইব্রেকারে হেরে স্বপ্নের প্রথম ইউরো ট্রফি হাতছাড়া করল ইংলিশরা।

৫৫ বছর পর মেজর কোনো টুর্নামেন্ট জয়ের সুযোগ পেয়েও তা হাতছাড়া। নিশ্চিতভাবেই হতাশ ইংলিশরা। এই হতাশার গভীরতা কত তা জানেন থ্রি লায়নদের অধিনায়ক হ্যারি কেন। ম্যাচ শেষে বিবিসিকে বললেন, ‘যখন আপনি পেনাল্টিতে হারবেন পৃথিবীতে এরচেয়ে হতাশার কিছু নেই। আমি এরচেয়ে বেশি দিতে পারতাম না। ছেলেরাও এরচেয়ে বেশি দিতে পারতো না।’

অথচ ভাগ্যনির্ধারণী টাইব্রেকারের প্রথম দুই শটেই গোল করেছিল ইংল্যান্ড। ইতালি দ্বিতীয় পেনাল্টি শট মিস করায় সুবিধাজনক অবস্থায় ছিল ইংলিশরা। সেখান থেকে নাটকীয়ভাবে হেরে যায় তারা। শেষ তিনটি পেনল্টি মিস করেন তিন তরুণ ফুটবলার মার্কাস রাফফোর্ড, জ্যাডন স্যানচো ও বুকায়ো সাকা। পূর্বসূরিদের পথেই হাঁটলেন এই ত্রয়ী।

ইংল্যান্ডের বর্তমান কোচ গ্যারেথ সাউথগেটও তো ২৫ বছর আগে পেনাল্টি মিস করেছিলেন ইউরো টুর্নামেন্টে। অগত্যা বাস্তবতা মেনে নিচ্ছেন কেন। বলেছেন, ‘এটা আমাদের রাত ছিল না। কিন্তু এটা চমৎকার একটা টুর্নামেন্ট এবং আমাদের মাথা উঁচুতে রাখা উচিত। আমরা যা অর্জন করেছি তাতে গর্বিত। আশা করছি পরের বছর আমরা আরো উন্নতি করব।’

হার থেকে শিক্ষা নিয়ে হয়তো ভবিষ্যতে ঘুরে দাঁড়াবে ইংল্যান্ড। কিন্তু ঘরের মাঠে শিরোপা জিততে না পারার যে যন্ত্রণা তা অনেকদিন তাড়িয়ে বেরাবে থ্রি লায়নদের। কেনের ভাষায়, ‘অবশ্যই এটা আমাদের খুব কষ্ট দিচ্ছে। আমরা জিততে চেয়েছিলাম, পারিনি। এটা আমাদের ক্যারিয়ারজুড়ে হতাশ করবে। কিন্তু এটাই ফুটবল। যে কেউ পেনাল্টি মিস করতে পারে।’

কেন অবশ্য নিরাশ করেননি সতীর্থদের মতো। ইংল্যান্ডের প্রথম শটেই গোল করেছেন তিনি। আসরের গ্রুপপর্বে গোল না পেলেও তিনি জ্বলে উঠেছেন সময় মতো। ইংল্যান্ডের প্রথম ফুটবলার হিসেবে টানা তিনটি নক আউট পর্বের ম্যাচে গোল করেছেন এই স্ট্রাইকার। আসরে সাত ম্যাচে চার গোল করেছেন কেন। এ ছাড়া একটি গোলে পরোক্ষ অবদান রেখেছেন।’

এই হার থেকে অবশ্য অনেককিছুই শিখেছে ইংল্যান্ড। যা আগামী বছর কাতার বিশ্বকাপে কাজে লাগতে চান দলটির অধিনায়ক, ‘রাশিয়া বিশ্বকাপে আমরা উন্নতি করেছি। এবারের ইউরোতে আরো এগিয়েছি। আমরা এখন এখান থেকেও অনেককিছু শিখেছি। এখান থেকে ছেলেরা বেড়ে উঠবে এবং আগামী বছরের বিশ্বকাপের জন্য আমাদের আরো অনুপ্রাণিত করবে।’