স্বপ্নের বোলিংয়ে চালকের আসনে বাংলাদেশ

যতো গর্জে ততো বর্ষে না। বাংলাদেশের ৪৬৮ রানের পাহাড়ের জবাবে জিম্বাবুয়ের শুরুটা যতো বর্ণিল, শেষটা ততটা বিবর্ণ হলো। বড় সংগ্রহের আভাস দেওয়া স্বাগতিকদের তিন শ’র আগেই গুটিয়ে দিয়েছে টাইগাররা। জিম্বাবুয়ের প্রথম ইনিংস ২৭৬ রানে থামিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ফের ব্যাটিংয়ে নেমেছে মুমিনুল হকের দল। তৃতীয় দিন শেষে বিনা উইকেটে ৪৫ রান করেছে বাংলাদেশ। লিড ২৩৭ রানের।

জিম্বাবুয়ের গুরুত্বপূর্ণ উইকেট নেওয়ার পর মেহেদির উদযাপন

বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের যা ভুগিয়েছে জিম্বাবুয়ের টপ অর্ডার। আরেকটু ছোট করে বললে ওপেনার কায়তানো ও ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক ব্রেন্ডন টেলর। দুজনই শতকের সম্ভাবনা জাগিয়েছিলেন। দুজনেরই শতকের স্বপ্ন গুঁড়িয়ে দেন স্পিনার মেহেদি হাসান মিরাজ। জিম্বাবুইয়ানদের টপ ও লোয়ার অর্ডারে ধস নামিয়েছেন এই তরুণ তুর্কি। তুলে নেন পাঁচ উইকেট।

আর মিডল অর্ডার ধসিয়ে দিয়েছেন সাকিব আল হাসান। বাঁ-হাতি অলরাউন্ডারের শিকার চার উইকেট। অন্যটার মালিক তাসকিন আহমেদ। তাদের দুর্দান্ত বোলিং তোপে জিম্বাবুয়ের সাত ব্যাটসম্যানের ছয়জনই যেতে পারেননি দুই অংকে। তন্মধ্যে রানের খাতা খুলতে পারেননি চারজন। সবমিলিয়ে বোলিংয়ে স্বপ্নের একটা দিন পার হলো বাংলাদেশের।

বাংলাদেশ দলের খেলোয়াড়দের উইকেটের আবেদন

তবে জিম্বাবুয়ের ইনিংসের শুরুটা ছিল সমীহ জাগানিয়া। ৬১ রানে উদ্বোধনী জুটি বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর দুর্দান্ত প্রতিরোধ গড়ে তোলেন কায়তানো ও টেলর। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে এ যুগল যোগ করেন ১১৫ রান। জুটি ভাঙেন মিরাজ। ইয়াসির আলির তালুবন্দি করেন টেলরকে। ওয়ানডে মেজাজে ব্যাট করা এই ব্যাটসম্যান আউট হন ৮১ রানে।

৯২ বলের ইনিংসে ১২টি চার ও একটি ছক্কা মেরেছেন টেলর। অধিনায়ক যতটা বিধ্বংসী ছিলেন ততটাই শান্ত ছিলেন কায়তানো। আদর্শ টেস্ট মেজাজে ব্যাটিং করেছেন স্বাগতিক ওপেনার। শতকের সম্ভাবনা জাগিয়েছিলেন তিনিও। তাকেও নিরাশ হতে হয় ওই মিরাজের কারণেই। শেষ পর্যন্ত ৩১১ বলে থামে তায়কানোর ৮৭ রানের ইনিংস। তায়কানো ইনিংস সাজান নয়টি চারে।

মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের সেঞ্চুরির ওপর ভর করে প্রথম ইনিংসে বড় সংগ্রহ গড়ে বাংলাদেশ

শতকবঞ্চিত দুই ব্যাটসম্যান সাজঘরে ফিরতেই মড়ক লাগে জিম্বাবুয়ের ইনিংসে। নিয়মিত বিরতি দিয়ে উইকেট তুলে নেয় বাংলাদেশ। শেষ দিকে তো স্বাগতিকদের নাজেহাল করে ছাড়েন সাকিব-মিরাজরা। ৫১ রানের মধ্যে শেষ আট উইকেট তুলে নিয়ে জিম্বাবুয়েকে তিন শ’র আগে গুটিয়ে দিয়েছেন তারা। অথচ দ্বিতীয় দিন নির্বিষ বোলিংয়ের কারণে ভালোই ভুগতে হয়েছে দলকে।

এর আগে দ্বিতীয় দিন ৪১ রানে আউট হন ওপেনার মিল্টন শুম্বা। দিনের খেলা জিম্বাবুয়ে শেষ করে এক উইকেটে ১১৪ রানে। আজ প্রথম সেশনেই তায়কানো-টেলর হাফসেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন। কিন্তু ইনিংসের সুন্দর সমাপ্তি টানতে পারেননি কেউ। এই ত্রয়ীর বাইরে দুজন ছুঁয়েছেন দুই অংক। ডিয়ন মেয়ার্স ২৭ রানে আউট হন এবং চাকাবা ৩১ রানে অপরাজিত থাকেন।

জিম্বাবুয়েকে দ্রুত গুটিয়ে দিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ফের ব্যাটিংয়ে নেমেছে বাংলাদেশ। শেষ বিকেলে দুই ওপেনারের ৪৫ রানের জুটির ওপর দাঁড়িয়ে দিনের খেলা শেষ করেছে। শনিবার হারারে টেস্টের চতুর্থ দিন সাদমান ইসলাম ও সাইফ হাসান ফের ব্যাট করতে আসবেন। প্রথমজন ২২ এবং দ্বিতীয়জন কুড়ি রানে অজেয় আছেন। লক্ষ্য লিড যতটা সম্ভব বাড়ানো যায়।