স্পেনকে কাঁদিয়ে স্বপ্নের মঞ্চে ইতালি
- Details
- by খেলাধুলা ডেস্ক
কাগজে-কলমে এবং পারফরম্যান্সের নিরিখে এবারের ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপের সবচেয়ে শক্তিশালী দল ইতালি। তকমাটা ধরে রাখল আজ্জুরিরা। টুর্নামেন্টের প্রথম সেমিফাইনালেও নামের প্রতি সুবিচার করল রবার্তো মানচিনির দল। মঙ্গলবার রাতে ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে স্পেনকে টাইব্রেকারে হারিয়ে ইতালি উঠে গেল স্বপ্নের ফাইনালে।
নির্ধারিত দেড় ঘণ্টায় ম্যাচ শেষ হয় অমীমাংসিতভাবে; ১-১ গোলে। ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত ত্রিশ মিনিটে। এই পর্বের দুই অর্ধেই রক্ষণাত্মক মেজাজে খেলে দুই দল। তাতে ভাঙেনি সমতা। পরে টাইব্রেকারে স্পেনকে ৪-২ গোলে হারিয়ে ফাইনালে উঠে যায় ইতালি। আগামী রোববার লন্ডনের একই মঞ্চে শিরোপা নির্ধারক ম্যাচে ইতালিয়ানদের প্রতিপক্ষ স্বাগতিক ইংল্যান্ড কিংবা রূপকথার ডেনমার্ক।
ম্যাচের প্রথম ভাগ কেটেছে গোলখরায়। দ্বিতীয়ার্ধে খুলেছে গোলমুখ। ইতালির হয়ে ম্যাচের একমাত্র গোলটি করেন ফেডেরিকো চিয়েসা। ম্যাচের বয়স তখন কাঁটায় কাঁটায় এক ঘণ্টা। দারুণ এক ঘূর্ণি শটে স্পেনের জালের ঠিকানা খুঁজে নেন ইতালিয়ান ফরওয়ার্ড। বাকি আধ ঘণ্টায় সমতায় ফিরতে আপ্রাণ চেষ্টাই চালায় স্প্যানিয়ার্ডরা। যার সুফল এসেছে ৮০ মিনিটে।
আলভারো মোরাটার গোলে সমতায় ফেরে তিনবারের ইউরো চ্যাম্পিয়নরা। কাকতালীয়ভাবে সেই তিনিই মুদ্রার উল্টো পিঠ দেখে ফেললেন টাইব্রেকারে পেনাল্টি মিস করে। পঞ্চম শট আর নিতে হলো না স্পেনকে। শুরুতে পেনাল্টি মিস করে ইতালি যে চাপে ছিল সেটা উবে গেছে তাতে। পরের চার শটের সবকটিতেই গোল করেছে ইতালি। আর প্রথম ও চতুর্থ শট মিস করে স্পেন।
নির্ধারিত সময়ের মধ্যে স্পেন যে জিততে পারবে না সেটা অনুমান করাই যাচ্ছিল। সেমিফাইনালের আগে স্প্যানিয়ার্ডরা যে পাঁচটি ম্যাচ খেলেছে তন্মধ্যে একটিতেই শুরুর দেড় ঘণ্টায় জিততে পেরেছে। সেটাও গ্রুপপর্বের শেষ ম্যাচে; স্লোভাকিয়ার বিপক্ষে (৫-০)। প্রি-কোয়ার্টার ফাইনালে ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে থ্রিলার ম্যাচে লা রোজারা জেতে অতিরিক্ত সময়ের দুই গোলে।
কোয়ার্টার ফাইনালের বাধা পাড়ি দিতেও যথেষ্ঠ বেগ পেতে হয়েছে লুইস এনরিকের দলকে। সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে পেনাল্টি শ্যুট আউটে দুইবার পিছিয়ে থেকেও বেঁচে গেছে তারা। ধুঁকতে ধুঁকতে সেমিফাইনালে আসা স্পেন অবশ্য ইতালির বিপক্ষে শুরুটা করেছিল আশা জাগানিয়া। প্রথমার্ধে স্বভাবসুলভ বলের দখল ধরে রেখে গোলের উদ্দেশ্যে পাঁচটি শট নেয় তারা।
বিপরীতে ইতালির একমাত্র জোরাল আক্রমণ বলতে ৪৫ মিনিটে। ভাগ্য খারাপ না হলে গোলটা পেতে পারতো মানচিনির দল। কিন্তু এমারসনের শট প্রতিহত হয় স্পেনের গোলপোস্টে লেগে। সেই হতাশা নিয়েই বিরতিতে যায় ইতালি। এই অর্ধে স্প্যানিয়ার্ডদের হতাশা বলতে ২৫ মিনিটে ফরওয়ার্ড ওলমোর গোলবঞ্চিত হওয়াটা। ঝাঁপিয়ে পরে তার শট দারুণভাবে রুখে দেন ইতালি গোলরক্ষক ডোন্নারুম্মা।
দ্বিতীয়ার্ধেও হতাশ করেন ওলমো। তার দুটো শটের একটিও থাকেনি লক্ষ্যে। বিপরীতে ধীরে ধীরে ঘর সামলে আক্রমণে যায় ইতালি। ৬০ মিনিটে স্বস্তির গোলও পেয়ে যায় ইতালি। আজ্জুরিদের লিড এনে দেন চিয়েসা। এগিয়ে যাওয়ার পর ফরওয়ার্ডদের তুলে রক্ষণের জোর দেন ইতালি কোচ মানচিনি। বিপরীতে মিডফিল্ডার ও ডিফেন্স তুলে ফরওয়ার্ডদের দিকে ঝুঁকেন এনরিকে।
স্প্যানিশ কোচের কৌশল কাজে এসেছে। দলকে সমতায় ফেরান মোরাটা। বেঞ্চ ছেড়ে উঠে আসার ১৮ মিনিটের মধ্যে ইতালির জালের ঠিকানা খুঁজে নেন তিনি। প্রায় সাড়ে ১৯ ঘণ্টা গোলবার অক্ষত রাখা ইতালি এনিয়ে টানা তিন ম্যাচেই হজম করল গোল। তাতে এ যাত্রায় বেঁচে যায় স্পেন। কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না। ইউরোতে দ্বিতীয়বারের মতো পেনাল্টি মিস করে বসেন আলভারো মোরাটা। প্রথমবার পেনাল্টি মিস করে হত্যার হুমকি পেয়েছিলেন তিনি। এবার কী হয় কে জানে!
ম্যাচে অবশ্য আরো একটা গোল করেছিল ইতালি। কিন্তু অতিরিক্ত সময়ের দ্বিতীয়ার্ধের শেষ দিকে বেলোত্তি যে গোলটা করেছেন তা বাতিল হয়ে যায় অফ সাইডে। নিশ্চিতভাবেই ম্যাচের চূড়ান্ত আশ্রয় দাঁড়ায় টাইব্রেকার। স্পট কিক থেকে প্রথম শট নিতে এসেই সুযোগ হাতছাড়া করেন ইতালির লুকাতেল্লি। তার শট ঝাঁপিয়ে রুখে দেন স্পেন গোলরক্ষক ইয়ান সিমন।
সুবিধজনক অবস্থানে থাকা স্পেনও প্রথম শটে গোল করতে ব্যর্থ হয়। ক্রসবারের ওপর দিয়ে মারেন ড্যানি ওলমো। ইতালির পরের চার শটেই গোল করেন যথাক্রমে বেলোত্তি, বনুচ্চি, বার্নার্ডেস্কি ও জর্জিনহো। দ্বিতীয় ও তৃতীয় শটে গোল করে স্পেনকে দুবার সমতায় ফেরান জেরার্ড মরেনো ও থিয়াগো আলকান্তারা। এরপরই মোরাটার পেনাল্টি মিস। তার শট রুখে দিয়ে ইতালির জয়ের মধ্যমণি হয়ে গেলেন ডোন্নারুম্মা।
গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...
খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর
Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.
Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.