ইতালিকে ডাকছে ব্রাজিলের বিশ্বরেকর্ড

গত বিশ্বকাপের টিকিট পায়নি ইতালি। চারবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের ছাড়া অনেকটাই রঙ হারিয়েছে রাশিয়ার ফুটবল মহাযজ্ঞ। সেই শোকটাকে রীতিমতো শক্তিতে রূপান্তর করেছে আজ্জুরিরা। রবার্তো মানচিনির অধীনে পুনর্জন্ম হয়েছে ইতালির। ইতালিয়ান এই কোচের অধীনে টানা ৩২ ম্যাচ ধরে অপরাজিত আছে তারা।

সম্প্রতি ইতালি ভেঙেছে নিজেদের সর্বোচ্চ ৩০ ম্যাচ অজেয় থাকার রেকর্ড। মানচিনির দলকে এখন ডাকছে ব্রাজিল ও স্পেনের প্রায় অবিশ্বাস্য রেকর্ড। দুটো দলই টানা ৩৫ ম্যাচ পরাজয়ের তিক্ত স্বাদ পায়নি। ১৯৯৩ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত রেকর্ডটি গড়েছে সেলেকাওরা। ২০০৭ থেকে ২০০৯ সালে দারুণ পারফরম্যান্সে ব্রাজিলের রেকর্ডে ভাগ বসায় স্পেন।

স্পেন পারেনি সেলেকাওদের রেকর্ড ভাঙতে। তুখোড় ফর্মে থাকা এই ইতালি পারবে তো? কাজটা কঠিন। কারণ এবারের ইউরোর সেমিফাইনালে ইতালিকে লড়তে হবে আসরের আরেক ফেভারিট স্পেনের সঙ্গে। লা রোজাদের বাধা পেরুনোর পর আজ্জুরিদের দিতে হবে আরো বড় পরীক্ষা। ফাইনালে উঠতে পারলে তাদের সম্ভাব্য প্রতিপক্ষ হতে পারে ইংল্যান্ড।

সবশেষ ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে ভুলে যাওয়া হারের স্বাদ পেয়েছিল ইতালি। উয়েফা নেশনস লিগের গ্রুপপর্বের সেই ম্যাচে ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর পর্তুগালের হাছে হেরে যায় আজ্জুরিরা। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। প্রদর্শনী ম্যাচ, বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব কিংবা ইউরো- সবখানেই এক প্রকার অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছে ইতালি।

চারবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের বদলে যাওয়ার কারিগর মানচিনি। ইতালিয়ান এই কোচ এখন স্বপ্ন দেখাচ্ছেন ইউরো জয়ের। দূরত্ব মাত্র দুই হাত। কোয়ার্টার ফাইনালে বেলজিয়ামকে বিদায় করে ইতালি ভেঙেছে আর্জেন্টিনার ৩১ ম্যাচ অজেয় থাকার রেকর্ড। এবারের ইউরোতে সবচেয়ে শক্তিশালী দল তারাই। ১১টি গোল করেছে ইতালি। বিপরীতে হজম করেছে মাত্র দুটি।

১৯৩৫ থেকে ১৯৩৯ সাল পর্যন্ত টানা ৩০ ম্যাচ হারেনি ইতালি। ভিক্টর পোজ্জোর অধীনে সেই রেকর্ড গড়েছিল আজ্জুরিরা। ওই সময়ে ইতালি জিতেছে নিজেদের দ্বিতীয় বিশ্বকাপ ট্রফি (১৯৩৮) ও অলিম্পিকের স্বর্ণপদক (১৯৩৬)। মানচিনির অধীনে এই ইতালি পারবে তো স্বপ্নযাত্রার সুন্দর একটা সমাপ্তি টানতে? উত্তরটা তোলা থাকল ভবিষ্যতের জন্য।

অবশ্য আন্তর্জাতিক ফুটবলের ইতিহাসে ব্রাজিলের রেকর্ড ভাঙার দৌড়ে আছে আরো একটি দল। দলটার নাম আলজেরিয়া। এ পর্যন্ত ২৭ ম্যাচ ধরে অপরাজিত আছে আফ্রিকান নেশন্স কাপ চ্যাম্পিয়নরা। তাদের সামনে এখন ব্রাজিল, স্পেন, ইতালি, আর্জেন্টিনা ও ফ্রান্সের রেকর্ড। ইতোমধ্যে আলজেরিয়া ভেঙেছে ফ্রান্স ও জার্মানির একটি রেকর্ড।

একনজরে অজেয় যাত্রার রেকর্ড:

ব্রাজিল: ৩৫ ম্যাচ (১৯৯৩-১৯৯৬)
স্পেন: ৩৫ ম্যাচ (২০০৭-২০০৯)
ইতালি: ৩২ ম্যাচ (২০১৮*-বর্তমান)
আর্জেন্টিনা: ৩১ ম্যাচ: ১৯৯১-১৯৯৩)
ইতালি: ৩০ ম্যাচ (১৯৩৫-১৯৩৯)

ফ্রান্স: ৩০ ম্যাচ (১৯৯৪-১৯৯৬)
আলজেরিয়া: ২৭ ম্যাচ (২০১৮*-বর্তমান)
পশ্চিম জার্মানি: ২৩ ম্যাচ (১৯৭৮-১৯৮১)
ফ্রান্স: ২৩ ম্যাচ (২০১০-২০১২)