নেদারল্যান্ডসের বিদায়: শেষ আটে চেক প্রজাতন্ত্র

মুখোমুখি লড়াইয়ের ফল কিংবা অভিজ্ঞতা কোনোকিছুতেই নেদারল্যান্ডসের চেয়ে পিছিয়ে ছিল না চেক প্রজাতন্ত্র। তবু শেষ ষোলোর মহাগুরুত্বপূর্ণ ম্যাচটাতে এগিয়ে রাখা হয়েছিল ডাচদের। ম্যাচে তাদের শুরুটাও হয়েছিল ফেভারিটদের মতো। কিন্তু শেষ পর্যন্তটা বড় দলের তকমটা ধরে রাখতে পারল না কমলা শিবির।

রোববার রাতে ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপের বাঁচা-মরার ম্যাচে চেক প্রজাতন্ত্রের কাছে ২-০ গোলে হেরে গেল নেদারল্যান্ডস। নিরপেক্ষ ভেন্যু অস্ট্রিয়ার বুদাপেস্টে এই হারে টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে গেল ডাচ শিবির। আর কোয়ার্টার ফাইনালে উঠে গেল চেক প্রজাতন্ত্র। মূলত রেফারির একটা সিদ্ধান্তই গড়ে দিয়েছে শেষ ষোলোর ম্যাচটার ভাগ্য।

বিরতি থেকে ফিরেই হলুদ কার্ড দেখেন ডাচ ডিফেন্ডার ম্যাত্থিস ডি লিখট। পরে ভিএরআরের সহায়তায় সিদ্ধান্ত পাল্টান রেফারি সার্জি কারাসেভ। সরাসরি জুভেন্টাস তারকাকে লাল কার্ড দেখান ম্যাচকর্তা। টিভি রিপ্লেতে দেখা যায় নিজেদের ডি-বক্সের কর্নারে মাটিতে পড়ে যাওয়ার সময় চেক ফরওয়ার্ড প্যাট্রিক শিককে কৌশলগতভাবে ফেলে দিয়েছেন তিনি। একই সঙ্গে লুটিয়ে পরার সময় হ্যান্ডবল করেছেন ডি লিখট।

দুই ভুলের শাস্তি হিসেবে মাঠছাড়া হয়েছেন তিনি। ম্যাচের বয়স তখন ৫৫ মিনিট। ১০ জনে নেমে আসা নেদারল্যান্ডস আর আক্রমণে দানা বাঁধতে পারেনি। বরং একজন কম খেলোয়াড়ের দলটার ওপর সর্বস্ব নিয়ে ঝাঁপিয়ে পরে চেক প্রজাতন্ত্র। যার ফসল হিসেবে দুই গোল পেয়েছে সাবেক চ্যাম্পিয়নরা। ৬৮ মিনিটে দুর্দান্ত এক হেডে নেদারল্যান্ডসের জালে বল জড়িয়ে চেকদের উচ্ছ্বাসে ভাসান হোলস।

এই গোলের ধাক্কা সামলে উঠতে আক্রমণের চেষ্টা চালায় ডাচরা। সেখানে ব্যর্থ হওয়া দলটা প্রতি-আক্রমণে আরেকটা গোল হজম করে। ব্যবধান দ্বিগুণ করেন শিক। ম্যাচটা শেষ হয়ে গেছে ওখানেই। ম্যাচে অবশ্য আরো দুটি সহজ সুযোগ মিস করেছেন চেক ফরওয়ার্ডরা। তা না হলে আরো বড় লজ্জায় পরতে হতো নেদারল্যান্ডসকে। তবে দুই গোলে জিতেই খুশি চেকরা।

ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপের বড় দলগুলোর মধ্যে সর্বপ্রথম বিদায় নিল নেদারল্যান্ডস। গ্রুপ পর্বে টানা তিন ম্যাচ জেতা ডাচদের হারটাকে তাই অঘটন হিসেবেই বিবেচনা করা হলো। অথচ ম্যাচের ফলটা অন্যরকম হতে পারতো। বিরতির পর লিড নিতে পারতো নেদারল্যান্ডসই। সেটা হয়নি ডনিয়েল মালেন হাস্যকরভাবে গোল মিস করায়। চেক গোলরক্ষক টমাস ভ্যাকলিককে একা পেয়েও বল জালে পাঠাতে ব্যর্থ হয়েছে তিনি।

মূলত গোলরক্ষকের পাশ কাটিয়ে যেতে টেয়েছিলেন মালেন। কিন্তু ঝাঁপিয়ে পরে মালেনের কাছ থেকে বল নিয়ন্ত্রণ মুক্ত করেন ভ্যাকলিক। ওই গোলটা করতে পারলে দারুণ খেলতে থাকা নেদারল্যান্ডস হয়তো ম্যাচটা জিততে পারতো। গোল মিসের পরের মিনিটেই সেট-পিস থেকে উল্টো গোল হজম করে ডাচরা। এনিয়ে সবশেষ পাঁচ গোলের চারটিই চেকরা পেল সেট-পিস থেকে।

আগামী শনিবার আজারবাইজানের বাকুতে সেমিফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে শক্তিশালী ডেনমার্কের মুখোমুখি হবে চেক প্রজাতন্ত্র। শেষ ষোলোতে ওয়ালসকে ৩-০ গোলে হারিয়ে স্বপ্নযাত্রা চলছে সাবেক চ্যাম্পিয়ন ডেনমার্কের।