দুর্দান্ত লড়াই, লেভার পোল্যান্ডকে বিদায় করল সুইডেন

ম্যাচটা ঠিকঠাক শুরুই হয়নি। আরাম করে বসতে পারেননি দর্শকরা। এরই মধ্যে গোলের বাঁশি। দুই মিনিটের আগেই পোল্যান্ডের জাল কাঁপান এমিল ফর্সবার্গ। শুরুর ধাক্কার পর দ্বিতীয়ার্ধে আরো একটি গোল হজম করে পোলিশরা। এবারো সেই ফর্সবার্গ। পরে রবার্ট লেভানডফস্কি করলেন জোড়া গোল। তবু বাঁচাতে পারলেন না দলকে। বুধবার রাতে শেষ মুহূর্তের গোলে নাটকীয়ভাবে ম্যাচটা ৩-২ ব্যবধানে হেরে যায় পোল্যান্ড।

বুধবার রাতে থ্রিলার ম্যাচ হেরে কার্যত ইউরো টুর্নামেন্ট শেষ হয়ে গেল পোল্যান্ডের। মৃত্যুকূপ খ্যাত ‘ই’ গ্রুপপর্বের তিন ম্যাচের একটিতেও জিততে পারেনি লেভার দল। তিন ম্যাচের দুটিতে জিতে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হিসেবে নকআউট পর্বে উঠল জ্লাতান ইব্রাহিমোভিচবিহীন সুইডেন। তিন ম্যাচে সাত পয়েন্ট তাদের। পাঁচ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ রানার্সআপ হলো ফেভারিট স্পেন। স্লোভাকিয়া হয়েছে তৃতীয়। কিন্তু দিনের অন্য ম্যাচে স্পেনের কাছে পাঁচ গোল হজম করায় ভেঙে গেছে তাদের স্বপ্ন। আর তলানিতে থেকে বিদায় নিল এক পয়েন্ট পাওয়া পোল্যান্ড।

রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গে ম্যাচের ৮২ সেকেন্ডে গোল করেন ফর্সবার্গ। যা চলমান ইউরো টুর্নামেন্টে দ্রুততম গোল। সমতায় ফিরতে মরিয়া হয়ে ওঠে পোল্যান্ড। কিন্তু গোলের শোধ দিতে গিয়ে ৫৯ মিনিটে আরেকটি গোল হজম করতে হয় পোলিশদের। প্রতি আক্রমণ থেকে টুর্নামেন্টে নিজের তৃতীয় গোলটি করেন ফর্মের তুঙ্গে থাকা লাইপজিগ তারকা ফর্সবার্গ। দুই গোল হজমের পর ঘুম ভাঙে পোল্যান্ডের। হেয়ালিপনা পেয়ে বসে সুইডেনকে।

সেটাই কাল হলো। পাল্টা আক্রমণে মাঝ মাঠ থেকে বল পেয়ে একক প্রচেষ্টায় দুর্দান্ত এক কোনাকুনি শটে সুইডেনের জালে বল জড়ান লেভানডফস্কি। মুহুর্মুহু আক্রমণ করা পোলিশরা সমতায় ফেরে ৮৪ মিনিটে। টুর্নামেন্টে নিজের তৃতীয় গোলটি করেন লেভানডফস্কি। তবু শেষ রক্ষা হলো না। বিফলে গেল লেভার জোড়া গোল। বেঞ্চ ছেড়ে উঠে এসে যোগ করা সময়ের তৃতীয় মিনিটে জয়সূচক গোল করে বসেন ভিক্টর ক্লাসন।

তাতেই চুরমার হয়ে গেল পোল্যান্ডের দ্বিতীয় রাউন্ডে ওঠার স্বপ্ন। অথচ এমন থ্রিলার ম্যাচের শুরুতেই গোল মিস করে বসেন লেভা। গোলমুখের মাত্র দুই গজ দূরে থেকেও কাঙ্খিত ঠিকানায় বল পাঠাতে ব্যর্থ হন বায়ার্ন মিউনিখ স্ট্রাইকার। ১৭ মিনিটে হাস্যকর আরেকটি মিস করেন তিনি। দ্বিতীয়ার্ধে পোল্যান্ড অবশ্য আরেকটি গোল করেছিল পোল্যান্ড। সেটা বাতিল হয়ে গেছে অফসাইডের অজুহাতে। পরে লেভার দ্বিতীয় গোলে স্বস্তি ফেরে পোলিশ শিবিরে। সেটাও শেষ পর্যন্ত উবে গেছে।

পোল্যান্ডের আরো একটা হতাশা আছে। ম্যাচের প্রথম ভাগেই সমতায় ফিরতে পারতো তারা। কিন্তু এক আক্রমণে দুইবার গোলপোস্ট হতাশ করেছে তাদের। সবচেয়ে বেশি নিরাশ করেছেন সুইডেন গোলরক্ষক রবিন ওলসেন। গোলপোস্টের নিচে এই তারকা আলো না ছড়ালে ম্যাচের ফলটা অন্যরকম হতে পারতো। তা হয়নি। প্রথম দুই ম্যাচে গোলবার অক্ষত রাখা দলটা দুই গোল হজম করায় একটু ভাবনা অবশ্য বেড়েছে সুইডেনের। আগামী ২৯ জুন প্রি-কোয়ার্টার ফাইনালে তাদের প্রতিপক্ষ ইউক্রেন কিংবা ফিনল্যান্ড।