ইউরো ২০২০: ক্রোয়েশিয়ার শেষ সুযোগ

গত বিশ্বকাপের সবচেয়ে বড় চমক ক্রোয়েশিয়া। সবাইকে একরাশ বিস্ময় উপহার দিয়ে ফুটবল মহাযজ্ঞের ফাইনালে উঠে যায় ক্রোয়াটরা। তাদের হারিয়ে শিরোপা জেতে ফ্রান্স। সেই হতাশার ক্ষতে প্রলেপ দেওয়ার সুযোগ হয়ে এসেছিল চলমান ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপ। কিন্তু টুর্নামেন্টে বড় দলগুলোর মধ্যে এখনো জয়বঞ্চিত তারা। ইংল্যান্ডের কাছে প্রথম ম্যাচে হেরে যাওয়া ক্রোয়াটরা পরের ম্যাচে ড্র করে চেক প্রজাতন্ত্রের সঙ্গে। আজ রাতে স্কটল্যান্ড ম্যাচে শেষ সুযোগ তাদের। জয় না পেলেই টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে যাবে দলটি।

গত বিশ্বকাপের ফাইনালিস্টদের এমন হালের কারণে সেরা ফুটবলারদের নির্বাসনে চলে যাওয়াটা। গত বিশ্বকাপের পর অবসরে চলে গেছেন দলের সেরা স্ট্রাইকার মারিও মান্দজুকিচ। তার পদাঙ্ক অনুকরণ করেন গোলরক্ষক ড্যানিয়েল সুবাসিচ। ইভান রাকিটিচও জাতীয় দলকে বিদায় জানিয়েছেন গত বছর। তারকাদের এই শূন্যস্থান পূরণ করতে পারেনি ক্রোয়েশিয়া। যার ফল তাদের পেতে হয়েছে উয়েফা নেশনস লিগে। টুর্নামেন্টে বাজে পারফর্ম করা দলটা বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ম্যাচেও নিজেদের হারিয়ে খুঁজছে। সবমিলিয়ে ক্রোয়েশিয়া ফুটবলে এখন চলছে ভাটির টান।

প্রধান কোচ - জ্লাটকো ডালিচ: অনেকটা রাজনৈতিকভাবে ২০১৭ সালে নিয়োগ পেয়েছিলেন ডালিচ। সুযোগ পেয়েই বাজিমাত করেন তিনি। তার অধীনে বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠেছিল ক্রোয়েশিয়া। কিন্তু সেই ছন্দ ধরে রাখতে পারেননি ৫৪ বছর বয়সী ক্রোয়াট কোচ। গেল তিন বছরের ক্রোয়েশিয়ার ধারাবাহিক ব্যর্থতার কারণে তাকে সরিয়ে দেওয়ার গুঞ্জন উঠেছে। এবারের ইউরোতে ক্রোয়াটরা নক আউট পর্বে উঠতে না পারলে নিশ্চিতভাবেই ডালিচকে অব্যাহতি দেওয়া হবে।

সেরা অস্ত্র - লুকা মডরিচ: আসছে সেপ্টেম্বরে ৩৬ বছর পূর্ণ হবে লুকা মডরিচের। তবু সম্প্রতি তার সঙ্গে চুক্তি নবায়ন করেছে বিশ্বের অন্যতম সেরা ক্লাব রিয়াল মাদ্রিদ। কেন তাকে রিয়াল ধরে রেখেছে তা বুঝতে ফুটবল বিশ্লেষক হওয়ার দরকার নেই। ধারাবাহিকভাবে পারফর্ম করে চলেছেন মডরিচ। গত বিশ্বকাপের সেরা ফুটবলারের পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। ২০১৮ সালে মেসি-রোনালদো রাজত্ব গুঁড়িয়ে হয়েছেন বর্ষসেরা ফুটবলার। তার নেতৃত্বে এবারের ইউরোতে খেলছে ক্রোয়েশিয়া। ধারণা করা হচ্ছে টুর্নামেন্ট শেষ অবসরে যাবেন মডরিচ।

তরুণ তুর্কি - জসকো জিভারডিওল: মাত্র ১৮ বছর বয়সে স্বপ্নের জাতীয় দলে জায়গা পেয়েছেন জিভারডিওল। মূলত সেন্টার ডিফেন্ডার হলেও তাকে এবারের ইউরোতে দেখা যাচ্ছে লেফট-ব্যাক পজিশনে। ক্রোয়েশিয়া ফুটবলের নতুন বিস্ময় বলা হয় তাকে। তরুণ এই তুর্কিকে দলে টানতে চেষ্টা করেছিল রিয়াল মাদ্রিদ, জুভেন্টাস চেলসির মতো বিশ্বসেরা ক্লাবগুলো। কিন্তু সবাইকে হারিয়ে তাকে দলে নিয়েছে লাইপজিগ। জিভারডিওলকে ভাবা হচ্ছে জার্মান বুন্দেসলিগার আগামী মৌসুমের তারকা।

সম্ভাব্য একাদশ: গোলরক্ষক: লিভাকোভিচ; ডিফেন্ডার: ভাসালজকো, লভরেন, ভিদা, বারিসিচ; মিডফিল্ডার: ব্রোজোভিচ, মডরিচ, কোভাচিচ; ফরওয়ার্ড: ব্রেকালো, ক্রামারিচ, পেরিসিচ।

সেরা সাফল্য: কোয়ার্টার ফাইনাল (১৯৯৬ ও ২০০৮)

ফিফা র্যাঙ্কিং: ১৪

ক্রোয়েশিয়া ম্যাচসূচি:

১৩ জুন: ইংল্যান্ড ১-০ ক্রোয়েশিয়া (লন্ডন, ওয়েম্বলি স্টেডিয়াম)
১৮ জুন: ক্রোয়েশিয়া ১-১ চেক প্রজাতন্ত্র (গ্লাসগো, হাম্পডেন পার্ক)
২২ জুন: ক্রোয়েশিয়া-স্কটল্যান্ড (গ্লাসগো, হাম্পডেন পার্ক)