হাসনাত করিম সম্পর্কে ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম যা বলছে

আটক হয়েছেন হাসনাত করিম। তার সঙ্গে কানাডার টরেন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র তাহমিদ হাসিবকেও আটক করেছে পুলিশ। উভয়েই পহেলা জুলাইয়ে গুলশানের হলি আর্টিজানে হামলার সন্দেহভাজন। ধারণা করা হয়, হামলাকারীদের সঙ্গে তাদের সম্পৃক্ততা ছিলো। হাসনাত করিম বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করলেও তার ব্রিটিশ নাগরিকত্বও আছে।

মঙ্গলবার রাতে হাসনাতকে গুলশান আড়ংয়ের সামনের রাস্তা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এ বিষয়ে একটি বিখ্যাত ব্রিটিশ গণমাধ্যম বলছে যে, হাসনাত একজন বাংলাদেশি বংশোদ্ভুত ব্রিটিশ ইঞ্জিনিয়ার। হামলার সময় তাকে মানব- ঢাল হিসেবে ব্যাবহার করেছিলো সন্ত্রাসীরা। তিনি বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করলেও কৈশরেই ইংল্যান্ডে পাড়ি জমান এবং কুইন ম্যারি ইউনিভার্সিটি অব লন্ডন থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং শেষ করেন।

ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যমটি হাসনাত করিমের আত্মীয়দের বরাতে জানাচ্ছে যে, সেদিন স্ত্রীকে নিয়ে মেয়ের জন্মদিন উদযাপনের জন্য হলি আর্টিজানে গিয়েছিলেন হাসনাত। পরে সন্ত্রাসীদের কাছে জিম্মিদশায় পড়ার পর তাকে মানব- ঢাল হিসেবে ব্যবহার করা হয়। তখন হাসনাতকে নাকি কুরআন শরিফ তেলাওয়াত করতেও বলে সন্ত্রাসীরা।

ঘটনার সময় পাশের ভবন থেকে একজন কোরিয়ান নাগরিক গোপনে সন্ত্রাসীদের কর্মকাণ্ড ভিডিও করার চেষ্টা করেন। সেই ভিডিও দেখেই হাসনাত করিমকে শনাক্ত করে পুলিশ। ভিডিওতে দেখা যায়, হাসনাত করিম সন্ত্রাসীদের সঙ্গে কখনো কথা বলছেন, কখনো ছাদে উঠে ধুমপান করতেও দেখা যায় তাকে। ছাদে থাকা অবস্থায় তার পিছনে বন্দুকধারী দুজন সন্ত্রাসীও উপস্থিত ছিলো।

কমান্ডোদের রক্তাক্ত অভিযানের মাধ্যমে যাদেরকে জীবিত উদ্ধার করা হয়, তাদের মধ্যে হাসনাত, তার স্ত্রী- সন্তান এবং তাহমিদও ছিলেন। ঘটনার পর হাসনাত ও তাহমিদকে আর প্রকাশ্যে দেখা যায়নি। পুলিশ তাদের গ্রেফতার করেছে বলেও খবর বের হয়।

তিন দিন আগে জানা যায়, তারা পুলিশের কাছে নেই। আবার পরিবারেও তারা ছিলেন না। গণমাধ্যমের পক্ষ থেকেও তাদের সঙ্গে কোনো রকম যোগাযোগ করা যায়নি। এর মধ্যেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দাবি করেন যে, এ দুজন পুলিশের ‘নলেজেই’ আছেন।

পরে আজ তাদেরকে গ্রেফতারের কথা বলে পুলিশ। আইজিপি একেএম শহিদুল জানাচ্ছেন, সন্দেহভাজন হিসেবে ৫৪ ধারায় গ্রেফতার করা হয়েছে এ দুজনকে।

এ দিকে হাসনাত করিমের আইনজীবী রডনি ডিক্সন ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন যে, হাসনাতকে অজ্ঞাত স্থানে ধরে নিয়ে গিয়েছিলো আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের সময় কোনো আইনজীবীও উপস্থিত ছিলো না। এমন কি আইনজীবীর সঙ্গে কোনো যোগাযোগও করতে দেয়া হয়নি। রডনি দাবি করেছেন, গুলশানের ঘটনার সঙ্গে হাসনাতের কোনো সম্পৃক্ততা না পেয়ে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়।

ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যমটি বলছে, ঢাকাস্থ ব্রিটিশ দূতাবাস থেকেও আটককালীন সময়ে হাসনাত করিমের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয়েছিলো। কিন্তু বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সেই সুযোগ দেয়নি। উল্লেখ্য, পহেলা জুলাইয়ের গুলশান হামলায় মোট ২০ জন জিম্মি মারা যান। এদের মধ্যে বেশির ভাগই ছিলেন বিদেশি।

আপনি আরো পড়তে পারেন

সালাউদ্দিন কাদেরের ছেলে হুম্মাম আটক

গুলশান হামলা: হাসনাত ও তাহমিদ ৮ দিনের রিমান্ডে

'সরকার মিথ্যা মামলাকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে'

শিল্পকলায় চলছে সপ্তাহব্যাপী আর্ট এক্সিবিশন 'বাংলার বাঘ'

বাড়তি কর আদায়ের প্রস্তাব দুই মেয়রের