ইউরো ২০২০: এই ডেনমার্ক ভয়ঙ্কর

ইউরো বাছাইপর্বে একটি ম্যাচও হারেনি। উয়েফা নেশনস লিগে তিন ম্যাচে তিন জয়। কাতার বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ম্যাচে এখন পর্যন্ত হজম করতে হয়নি কোনো গোল। দলটার নাম ডেনমার্ক। এবারের ইউরোতে এই দলটা হয়ে উঠতে পারে ভয়ঙ্কর। দলটাকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন এসি মিলান ডিফেন্ডার সিমোন কেজেয়ার।

অধিনায়কের সঙ্গী টটেনহাম হটস্পার মিডফিল্ডার পিয়েরি-এমিলি হজবার্জ। এই দুজন ছাড়াও ডেনিশ ফুটবলে আরেকটা বড় নাম আছে। তিনি ক্রিশ্চিয়ান এরিকসেন। ইন্টার মিলানে গিয়ে নিজেকে ফিরে পেয়েছেন এই ফরওয়ার্ড। দলে আছেন প্রতিভাবান জোনাস উইন্ড। এবারের ইউরোতে ডেনমার্কের অন্যতম ভরসা এই চতুষ্টয়। তারা আদায় করে নিচ্ছেন জায়ান্টদের সমীহ। স্বপ্ন দেখছেন শিরোপা উদ্ধারের।

প্রধান কোচ - ক্যাস্পার জুলমান্ড: বিখ্যাত নরওয়েজান কোচ এজ হারিয়েদের অধীনে ডেনমার্ক হয়ে উঠেছিল দুর্দান্ত। তার অধীনে ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপে অংশ নেওয়ার কথা ছিল ডেনিশদের। কিন্তু করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের কারণে টুর্নামেন্ট পেছানো হয় এক বছরের জন্য। হারিয়েদও মেয়াদ শেষে থাকেননি।

হারিয়েদ যেখানে শেষ করেছেন সেখান থেকেই শুরু করেন জুলমান্ড। তার অধীনেও দারুণ খেলছে ডেনিশরা। কিন্তু জুলমান্ড পেশাদার ফুটবলার হিসেবে বেশিদিন খেলেননি। হাঁটুর ইনজুরি মাত্র ২৬ বছর বয়সে তাকে পাঠিয়ে দেয় অবসরে। ৪৯ বছর বয়সী এই ডেনিশ কোচ হিসেবে আলো ছড়াতে শুরু করেন। তার কোচিংয়ের মূল দর্শন আক্রমণাত্মক ফুটবল।

প্রধান অস্ত্র - ক্রিশ্চিয়ান এরিকসেন: বিশ্বের সেরা প্লে-মেকারদের একজন ভাবা হয় এরিকসেনকে। একটা সময় টটেনহামের প্রাণভোমরা ছিলেন তিনি। ২০২০ সালের জানুয়ারিতে লন্ডন ছেড়ে মিলানে পাড়ি জমান। নতুন ঠিকানা ইন্টার মিলানে শুরুর দিকটায় বেগ পেতে হলেও সদ্য বিদায়ী মৌসুমে গা ঝারা দিয়ে উঠেছেন।

মিলান জায়ান্টদের ১১ বছর পর সিরি’এ লিগ জয়ে অবদান আছে এরিকসেনের। ডেনমার্কের জন্য স্বস্তি- ইউরোতে যাওয়ার আগে দলের সেরা তারকা ফিরেছেন দারুণ ছন্দে। ডেনিশদের হয়ে ম্যাচের সেঞ্চুরি করা এই ফুটবলার অপেক্ষায় আছেন দেশটির পক্ষে নতুন ইতিহাস গড়ার।

তরুণ তুর্কি - জোনাস উইন্ড: বিখ্যাত ডেনিশ গোলরক্ষক পার উইন্ডের ছেলে জোনাস উইন্ড। বাবা গোল ঠেকানোর পথ বেছে নিলেও ২২ বছর বয়সী এই তারকাকে পেয়ে বসে গোলের নেশা। এবারের ইউরোতে ডেনমার্কের মূল স্ট্রাইকার তিনিই। ডেনিশ ক্লাব কোপেনহেগেনের হয়ে দুর্দান্ত একটা মৌসুম কাটিয়ে ইউরোর জন্য প্রস্তুত হয়েছেন উইন্ড।

বল ধরে রাখতে এবং গতিময় শটে আলাদাভাবে নজর কেড়েছেন এই তরুণ তুর্কি। উইন্ডের বিশেষ গুণ- তার দুই পা চলে সমান তালে। গত বছরের অক্টোবরে ডেনমার্ক দলে অভিষেকের পর তিনটি গোল করেছেন উইন্ড। তিনি হতে পারেন জুলমান্ডের তুরুপের তাস।

গ্রুপপর্ব: ডেনমার্ক, রাশিয়া, ফিনল্যান্ড ও বেলজিয়ামকে নিয়ে গড়া হয়েছে ‘বি’ গ্রুপ। ডেনিশদের গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বপ্নের সবচেয়ে বড় বাধা বেলজিয়াম। তবে শক্তিমত্তা এবং কাগজে-কলমের হিসেবে অন্তত নক আউট পর্বে ওঠার কথা তাদের। ফিনল্যান্ড ও রাশিয়ার বিপক্ষের ম্যাচে ডেনিশরা ফেভারিট। ডেনমার্কের সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরণা হচ্ছে- গ্রুপপর্বের তিনটি ম্যাচই তারা খেলবে ঘরের মাঠে।

সম্ভাব্য একাদশ: গোলরক্ষক: স্মিখেল; ডিফেন্ডার: ওয়াস, কেজেয়ার, ক্রিশ্চেনসেন, মায়েহলি; ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার: হজবার্জ, ডিলানি; সেন্ট্রাল মিডফিল্ডার: পোলসেন, এরিকসেন, ব্র্যাথওয়েট; ফরওয়ার্ড: উইন্ড

সেরা সাফল্য: চ্যাম্পিয়ন (১৯৯২)

ফিফা র‌্যাঙ্কিং: ১০

ডেনমার্কের ম্যাচসূচি:

১২ জুন: ডেনমার্ক-ফিনল্যান্ড (পার্কেন স্টেডিয়াম; কোপেনহেগেন)

১৭ জুন: ডেনমার্ক-বেলজিয়াম (পার্কেন স্টেডিয়াম; কোপেনহেগেন)

২১ জুন: ডেনমার্ক-রাশিয়া (পার্কেন স্টেডিয়াম; কোপেনহেগেন)