রিয়ালে ফিরছেন সেই আনচেলত্তি

শনির দশা লেগেছিল রিয়াল মাদ্রিদের ওপর। কোনোভাবেই যেন উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগের রাহুর দশা দূর করতে পারছিল না লস ব্ল্যাঙ্কোসরা। রিয়ালকে গ্রাসমুক্ত করেন কার্লো আনচেলত্তি। ২০১৩-১৪ মৌসুমে মাদ্রিদ জায়ান্টদের উপহার দেন ‘লা ডেসিমা’ (চ্যাম্পিয়নস লিগ দশম শিরোপা)। এরপর জিনেদিন জিদান এসে রিয়ালকে জেতান পরপর তিনটি রুপালি ট্রফি।

সেই ফ্রেঞ্চ কোচ রিয়াল মাদ্রিদের সঙ্গে দ্বিতীয়বার সম্পর্ক ছিন্ন করে চলে যাচ্ছেন। গত সপ্তাহে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন ফরাসি কোচ। জিজুর শূন্যস্থানে এলেন তারই কোচিং গুরু আনচেলত্তি। মঙ্গলবার রাতে ইতালিয়ান কোচকে দ্বিতীয়বারের মতো নিয়োগ দিল রিয়াল মাদ্রিদ। এই দফায় মাদ্রিদ জায়ান্টদের সঙ্গে তিন বছরের চুক্তি করলেন আনচেলত্তি।

সদ্য বিদায়ী ইউরোপিয়ান ক্লাব মৌসুমটা ভালো কাটেনি রিয়াল মাদ্রিদের। শিরোপাখরায় শেষ হয়েছে তাদের মৌসুম। এমন পরিস্থিতিতে রিয়ালে জিদানের ভবিষ্যত নিয়ে কানাঘুষা চলছিল স্প্যানিশ মিডিয়ায়। তাতে প্রতিনিয়ত বিব্রত হয়েছেন জিজু। অবশেষে সরে যাওয়ার আভাস দেন তিনি। নতুন কোচ খুঁজতে শুরু করে রিয়াল।

জিদানের শূন্যস্থানে রিয়াল মাদ্রিদের প্রথম পছন্দ ছিলেন মাস্যিমিলিয়ানো অ্যালেগ্রি। যদিও সম্প্রতি জুভেন্টাসের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন তিনি। তাতে ধাক্কা খায় রিয়াল। কয়েকজন কোচের সঙ্গে যোগাযোগ করে তারা। এই তালিকায় আনচেলত্তি ছাড়াও ছিলেন জুভেন্টাস কোচ অ্যালেগ্রি, পিএসজি কোচ মারিসিও পচেত্তিনো, চেলসি ও ইন্টার মিলানের সাবেক কোচ অ্যান্তনিও কন্তে।

মাদ্রিদ জায়ান্টদের ঘরেই অবশ্য একটা কোচ ছিল। তিনি রাউল গঞ্জালেস। কার্যত রিয়ালের যুবদলের দায়িত্বে আছেন স্প্যানিশ কিংবদন্তি। তার হাতে মূল দলের দায়িত্ব তুলে দেওয়ার কথাও নাকি ভেবেছিল রিয়াল। জিদান তো এভাবেই ক্লাবের মূল দলের কোচ হয়েছিলেন। কিন্তু জিজুর পদাঙ্ক অনুকরণ করা হলো না রাউলের।

এভারটনের সঙ্গে আনচেলত্তির চুক্তি ছিল ২০২৪ সাল পর্যন্ত। ইতালিয়ান কোচের অধীনে মার্সিসাইড ক্লাবটির মৌসুমটা খারাপ কাটেনি। তার ওপর খুশি ছিলেন ইংলিশ ক্লাবটির কর্তাব্যক্তিরা। কিন্তু রিয়ালের সঙ্গে কথাবার্তা পাকা হওয়ায় এভারটন ছাড়ার ঘোষণা দিলেন তিনি। তাতেই শেষ হলো তার দেড় বছরের এক অধ্যায়।

এক বিবৃতিতে এভারটনের ওয়েবসাইটে আনচেলত্তি বলেছেন, ‘আমি বোর্ড পরিচালক, খেলোয়াড় এবং এভারটনিয়ানদের ধন্যবাদ দিতে চাই। দায়িত্বে থাকাকালীন তারা আমাকে অনেক সমর্থন দিয়েছেন। এভারটনের জন্য শুভকামনা রইল। আশা করছি তারা চমৎকার কিছু অর্জন করবে। এভারটনে থাকাকালীন আমি সময়টা খুব উপভোগ করেছি।’

২০১৯ সালের ডিসেম্বরে এভারটনে যোগ দেন আনচেলত্তি। মার্সিসাইডে দেড় বছর কাজ করার পর পুরনো ঠিকানা মাদ্রিদে ফিরে যাচ্ছেন তিনি। ২০১৩ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত রিয়াল মাদ্রিদের প্রধান কোচ হিসেবে কাজ করেছেন ইতালিয়ান এই কোচ। তার অধীনে এক যুগেরও বেশি সময় পর চ্যাম্পিয়নস লিগের শিরোপা উদ্ধার করে রিয়াল।

এ ছাড়া রিয়ালকে কোপা ডেল রে, উয়েফা সুপার কাপ ও ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ জেতান ৬১ বছর বয়সী এই কোচ। ক্লাবের ইতিহাসে কোচদের মধ্যে তার জয়ের হার সবচেয়ে বেশি। রিয়ালে ১১৯ ম্যাচের ৮৯টিতে জয়ের স্বাদ পেয়েছেন আনচলত্তি।