মুশির ব্যাটে ইতিহাস গড়ার চ্যালেঞ্জ

ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাব ম্যাচে থাকবে এটা অনুমিতই ছিল। দফায় দফায় বৃষ্টি দেখল দ্বিতীয় ওয়ানডে। কিন্তু ম্যাচের দৈর্ঘ্য কমল না। বৃষ্টিভেজা এই ম্যাচেও ইনিংস শুরুর ব্যাটিংয়ে ভুগতে হলো বাংলাদেশ দলকে। শেষ পর্যন্ত মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাদ রিয়াদের ব্যাটে প্রতিরোধ। আরো একবার টাইগারদের ত্রাণকর্তা মুশফিক।

মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে প্রথম ওয়ানডেতে সেঞ্চুরির আভাস নিয়ে ফিরে গেছেন বাংলাদেশের উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান। আজ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে একই ভুল করেননি মুশি। তুলে নিলেন দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি। তার শতকের ওপর দাঁড়িয়ে চ্যালেঞ্জিং সংগ্রহ পেয়েছে বাংলাদেশ। ইনিংসের ১১ বল বাকি থাকতে গুটিয়ে যাওয়ার আগে লঙ্কানদের ২৪৬ রানের চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছে টাইগাররা।

প্রথম ম্যাচের ব্যর্থতার গণ্ডি ভাঙতে পারেননি সাকিব আল হাসান। আজ ফিরে গেলেন কোনো রান না করেই। ওপেনার তামিম ইকবাল ফিরেছেন ১৩ রানে। লিটন দাস অবশ্য আউট হয়েছেন উইকেটে থিতু হওয়ার পর। কিন্তু বেশিদূর এগোতে পারেননি তিনিও। ২৫ রানে থেমে যায় তার পথচলা। ৪৯ রানের মধ্যে তিন উইকেট হারিয়ে তখন প্রবল চাপে বাংলাদেশ।

তবে এক প্রান্ত আগলে রাখলেন মুশফিক। মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত কিছুক্ষণ তাকে সঙ্গ দিয়ে ফিরে গেছেন ১০ রানে। যোগ্য সঙ্গী হিসেবে সেই মাহমুদউল্লাকেই পেলেন মুশফিক। পঞ্চম উইকেট জুটিতে দুই ‘ভায়রা ভাই’ মিলে বাংলাদেশের প্রাথমিক বিপর্যয় সামাল দেন। এ সময় মুশি ছাড়িয়ে গেছেন হাফসেঞ্চুরি। কিন্তু নয় রানের জন্য বঞ্চিত হয়েছেন মাহমুদউল্লাহ।

বাংলাদেশের পঞ্চম ব্যাটসম্যান হিসেবে যখন তিনি সাজঘরে ফিরলেন তখন দলের সংগ্রহ ১৬১। একদিকে উইকেট পতনের মিছিল অন্যদিকে মুশফিকের নিঃসঙ্গ লড়াই। এই লড়াই কোথায় শেষ হয় সেটাই দেখার ছিল। শেষটা হয়েছে প্রত্যাশিতভাবেই। সতীর্থদের আসা-যাওয়ার মিছিলে বুক চিতিয়ে লড়াই চালিয়ে গেছেন মুশি।

মুশফিক থেমেছেন ব্যক্তিগত ১২৫ রানে। ১২৭ বলের ইনিংসে দশটি বাউন্ডারি। বাংলাদেশ দলও থেমে গেছে আড়াই শ’র আগে। মাহমুদউল্লাহ ফেরার পর বাংলাদেশের লোয়ার অর্ডারের তিন ব্যাটসম্যান খুলতে পারেননি রানের খাতা। এর মধ্যে আছেন অভিষিক্ত শরিফুল ইসলাম। নয় বলে ১০ রান করেন আফিফ হোসেন। মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন ৩০ বলে খেলেন ১০ রানের ইনিংস।

তবে রানের হিসেবে সাইফুদ্দিনের ইনিংসের মূল্যায়ন করা কঠিন। কেননা অনেকটা সময় উইকেট আগলে রেখে মুশফিককে নির্ভার করেছেন তিনি। বাংলাদেশের লড়াকু পুঁজি প্রাপ্তিতে সাইফুদ্দিনের অল্প রানের ইনিংসটা হয়ে থাকল কার্যকর। নিরাশ করেননি মুশি। দলকে কাঙ্খিত গন্তব্যে পৌঁছে দিয়েই ফিরে এসেছেন অভিজ্ঞ এই মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান।

ব্যাটসম্যানদের হয়ে আসল কাজটা করেছেন মুশফিক। এবার বাকি কাজ বোলারদের। টাইগার বোলাররা দারুণ কিছু করলেই প্রথমবারের মতো ওয়ানডে সিরিজে লঙ্কানদের বিরুদ্ধে জয়ের গৌরব হবে। একই সঙ্গে আইসিসি ওয়ানডে লিগের শীর্ষে উঠে যাবে বাংলাদেশ।

শ্রীলঙ্কার পক্ষে তিনটি করে উইকেট নিয়েছেন দুষ্মন্ত চামিরা ও লাকসান সান্দাকান। দুটি শিকার ইসুরু উদানার।