জয়ে শুরু বাংলাদেশের
- Details
- by খেলাধুলা প্রতিবেদক
সব সংস্করণ মিলিয়ে টানা ১০ ম্যাচ ধরে জয়হীন বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে টাইগারদের জয় কতটা জরুরি ছিল তা বোঝাতে এই তথ্যটুকুই যথেষ্ট। ঘরের মাঠ মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে প্রত্যাশিতভাবেই ঘুরে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ। তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের প্রথমটিতে তামিম ইকবালের দল জিতেছে ৩৩ রানে।
জয়ে ফিরল বাংলাদেশ
এই জয়ের একক নায়ক কেউ নন। সম্মিলিত পারফরম্যান্সের ফল এটা। ব্যাটসম্যানরা লঙ্কান বোলারদের বিরুদ্ধে শুরুর দিকটায় সংগ্রাম করেছেন। শেষ অবধি তামিম ইকবাল, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও মুশফিকুর রহিমের হাফসেঞ্চুরির ওপর দাঁড়িয়ে দল পেয়েছে লড়াইয়ের পুঁজি। অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে তা আগলে রেখেছেন বোলাররা।
দিনের প্রথম লড়াইয়েও জিতেছিল বাংলাদেশ। মুদ্রা নিক্ষেপের সুবিধা নিজেদের অনুকূলে নিয়ে হাতে ব্যাট তুলে নেন স্বাগতিক অধিনায়ক তামিম। ব্যাট হাতে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ছয় উইকেটে ২৫৭ রানের চ্যালেঞ্জিং সংগ্রহ তোলে বাংলাদেশ। জবাব দিতে নামা শ্রীলঙ্কাকে ম্যাচের ১১ বল বাকি থাকতে ২২৪ রানে গুটিয়ে দেয় টাইগাররা।
বাংলাদেশের মতো শ্রীলঙ্কারও শুরুটা ভালো হয়নি। অতিথিদের চেপে ধরেন বাংলাদেশের বোলাররা। আরেকটু ছোট করে বললে মেহেদি হাসান মিরাজ। চার উইকেট তুলে নিয়ে ধসিয়ে দেন লঙ্কানদের। তাতে দিশেহারা শ্রীলঙ্কা। ১০২ রানের মধ্যে ছয় উইকেট তুলে নিয়ে জয়ের পথটা সুগম করে বাংলাদেশ। পরে লোয়ার অর্ডার ব্যাটসম্যানরা টাইগারদের জয়টা কেবল বিলম্বিত করেন।
শ্রীলঙ্কা ওপেনার দানুস্কা গুনাথিলাকা ১৯ বলে মিরাজের হাতে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন। খানেকবাদে পাথুম নিসাঙ্কার স্ট্যাম্প উপড়ে ফেলেন মুস্তাফিজুর রহমান। আট রানে ফিরেছেন তিনি। জোড়া ধাক্কা সামলাতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে শ্রীলঙ্কা। কুশল মেন্ডিস ও কুশল পেরেরা ৪১ রানের জুটি গড়েন। জুটি ভাঙেন সাকিব আল হাসান। দুই ওভার পর ফের মিরাজের আঘাত।
বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা ম্যাচের একটি দৃশ্য
এই ঝড়ে শেষ শ্রীলঙ্কার চার উইকেট। যার তিনটিই নেন মিরাজ। একে একে সাজঘরে ফেরেন মেন্ডিস, পেরেরা, ধনঞ্জয়া ও আশেন বান্ডারা। ৫০ বলে ৩০ রানে ফিরেছেন পেরেরা। ৩৬ বলে ২৪ রানে আউট হন মেন্ডিস। বান্ডারা ২৪ বলে তিন রানে ফিরেছেন। দুই উইকেটে ৮২ রান থাকা লঙ্কান ছয় উইকেট হয়ে যায় ১০২ রানের মাথায়। এরপর ফের প্রতিরোধ গড়ে শ্রীলঙ্কা।
প্রতিরোধ ভাঙেন মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন; উড়িয়ে ফেলেন ১৪ রানে থাকা দাসুন শানাকার স্ট্যাম্প। ১৪৯ রানে শ্রীলঙ্কার সাত উইকেট তুলে নেয়ার পরও ঠিক স্বস্তিতে ছিল না বাংলাদেশ। কারণ অন্যপ্রান্তে যে ক্রমেই ভয়ংকর হয়ে উঠেছেন ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা! তুলে নিয়েছেন ঝড়ো হাফসেঞ্চুরি। লঙ্কানদের ধূসর হয়ে যাওয়া স্বপ্নটা রঙিন হয়ে উঠল তাতে। আটে নামা হাসারাঙ্গাকে যোগ্য সঙ্গটাই দিয়েছেন ইসুরু উদানা।
হাফসেঞ্চুরিরে পর লিটনের হাতে ক্যাচ দিয়ে বেঁচে যান হাসারাঙ্গা। ভাগ্যিস আফিফ হোসেন লিটনের ভুলটা করেননি। অন্যথায় আফসোসে পুড়তে হতো বাংলাদেশকে। ৬০ বলে ৭৪ রান করা হাসারাঙ্গাকে ফেরান সাইফুদ্দিন। ম্যাচে এটা তার দ্বিতীয় শিকার। পাঁচ ছক্কা ও তিন চারে ঝড়ো ইনিংস খেলে বিদায় নেন লঙ্কান বোলার।
সঙ্গীহারা উদানাও একটু পর সঙ্গ হারিয়েছেন। ২৩ বলে ২১ রানে আউট হন তিনি। দুষ্মন্ত চামিরা পাঁচ রান করে আউট হন। আট রানে টিকে ছিলেন লাকসান সান্ডাকান। লঙ্কানদের শেষ দুই ব্যাটসম্যানকে ফেরান মুস্তাফিজুর রহমান। ম্যাচে তিন উইকেট নিয়েছেন তিনি। এই জয়ে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে এগিয়ে গেল স্বাগতিক শিবির। আগামী মঙ্গলবার একই ভেন্যুতে দিতীয় ওয়ানডে অনুষ্ঠিত হবে।
এর আগে ব্যাট করতে নেমে দলীয় হাফসেঞ্চুরির আগেই জোড়া ধাক্কা খায় বাংলাদেশ। শত রানের আগে আরো দুই উইকেটের পতন। ২৩তম ওভারে ৯৯ রানে চার উইকেট খুইয়ে তখন পুরোদস্তুর চাপে টাইগারারা। সেখান থেকে দলকে পথ দেখান মুশফিক ও মাহমুদউল্লাহ। দুজনই তুলে নেন দুর্দান্ত অর্ধশতক। যে পথটা আগেই দেখিয়ে গেছেন ওপেনার তামিম।
ম্যাচের দ্বিতীয় ওভারেই সঙ্গী লিটনকে হারান তামিম। কোনো রান না করেই সাজঘরে ফিরে যান ডানহাতি ওপেনার। সাকিব আল হাসান প্রিয় পজিশন তিন নম্বরে ফিরে এদিন ব্যর্থ হলেন। ফেরার সিরিজে উইকেটে থিতু হওয়ার পর আউট হন সাকিব। ৩৪ বলে ১৫ রান করেন তিনি। ইনিংসে বাউন্ডারি দুটো। এরপর মুশফিককে নিয়ে লড়াই শুরু তামিমের।
রণেভঙ্গ দেন তামিম। ৫৬ রানের জুটি ভাঙে অধিনায়কের বিদায়ে। ধনঞ্জয়া ডি সিলভার এলবির ফাঁদে পড়েন দেশসেরা ওপেনার। ৭০ বলে ৫২ রানে আউট হন তামিম। ইনিংসে ছয়টি চারের পাশাপাশি একটি ছক্কা হাঁকিয়েছেন তিনি। তার বিদায়ের পরের বলেই আউট মোহাম্মদ মিঠুন। বাংলাদেশ লড়াইয়ের পর্যাপ্ত পুঁজি পাবে কিনা তা নিয়ে ততক্ষণে সংশয় শুরু হয়ে গেছে। সব শঙ্কা উড়িয়ে দেন মুশফিক ও মাহমুদউল্লাহ।
পঞ্চম উইকেট জুটিতে ১০৯ রান যোগ করেন দুই ‘ভায়রা’ ভাই। এ সময়ে শতকের সম্ভাবনা জাগিয়েছিলেন মুশি। যদিও আউট হয়ে যান ৮৪ রানে। ৮৭ বলের ইনিংসে চারটি চার ও একটি ছক্কা মেরেছেন। মুশির বিদায়ের পর হাফসেঞ্চুরি তুলে নেন মাহমুদউল্লাহ। ৭৬ বলে ৫৪ রান এসেছে তার ব্যাট থেকে। দুটো চার ও এক ছয়ে সাজানো মাহমুদউল্লাহর ঝকঝকে ইনিংস।
শেষ দিকে আফিফ হোসেন ২২ বলে তিন চারে ২৭ রানের ক্যামিও ইনিংস খেলেন। মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন নয় বলে দুই চারে করেন ১৩ রান। সবমিলিয়ে বাংলাদেশের ব্যাটিংটা মন্দ হয়নি। বোলারদের লড়াইয়ের জন্য চ্যালেঞ্জিং পুঁজি এনে দিয়েছেন তামিম-মুশি-মাহমুদরা। যা অনেক কষ্টে আগলে রাখলেন মিরাজ-মুস্তাফিজ-সাইফুদ্দিনরা।
বাংলাদেশের পতন হওয়া উইকেটের সর্বোচ্চ তিনটি নিয়েছেন ধনঞ্জয়া। এ ছাড়া দুষ্মন্ত চামিরা, দানুসকা গুনাথিলাকা ও লাকসান সান্দাকান একটি করে শিকার করেন।
এই জয়ে ওয়ানডে সুপার লিগ টেবিলের চার নম্বরে উঠে এলো বাংলাদেশ। সাত ম্যাচে চার জয়ে ৪০ পয়েন্ট টাইগারদের। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এই সিরিজে আরেকটি ম্যাচ জিতলে শীর্ষে উঠে যাবে তামিমের দল। কার্যত নয় ম্যাচে চার জয়ে ৪০ পয়েন্টে শীর্ষে আছে ইংল্যান্ড। সমান জয় ও পয়েন্টে দুই ও তিনে আছে যথাক্রমে পাকিস্তান, অস্ট্রেলিয়া। দুই দল ছয়টি করে ম্যাচ খেলেছে।
গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...
খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর
Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.
Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.