আপনি পড়ছেন

মহান আল্লাহতা’লা বলেন, “হে মুমিনগণ! তোমরা যা উপার্জন কর এবং আমি যা ভূমি থেকে তোমাদের জন্য উৎপাদন করে দেই তন্মধ্যে যা উৎকৃষ্ট তা ব্যয় কর; এবং তার নিকৃষ্ট অংশ ব্যয় করার সংকল্প করো না; অথচ তোমরা তা গ্রহণ করবার নও যদি না তোমরা চোখ বন্ধ করে থাক। আর জেনে রেখ যে, নিশ্চয়ই আল্লাহ অভাবমুক্ত, প্রশংসিত।” (বাকারা ২: ২৬৭)

zakat mangement ramadan

আল্লাহ বারীতা’লা আরো বলেন, “সাদাকা (অর্থাৎ যাকাত) তো কেবল নিঃস্ব, অভাবগ্রস্ত ও যাকাত সংশ্লিষ্ট কর্মচারীদের জন্য, যাদের চিত্ত (ইসলামের দিকে) আকর্ষণ করা হয় তাদের জন্য, দাসমুক্তির জন্য, ঋণ ভারাক্রান্ত, আল্লাহর পথে ও মুসাফিরদের জন্য। ইহা আল্লাহর বিধান। আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।” (তাওবা ৯: ৬০)

রমজান ও যাকাত

১. রমজান মাস যাকাত আদায়ের জন্য নির্ধারিত নয়। তথাপি এ মাসে প্রতিটি আমলের মর্তবা বৃদ্ধি পায় বিধায় মসুলিমগণ এ মাসে যাকাত আদায় করেন।

২. যাকাত ও উশর (ফসলের যাকাত) উভয়ই ফরয। আমাদের দেশে যাকাত আদায়ে কিছুটা সচতনতা থাকলেও উশর আদায়ে সচেতনতা মোটেও নেই বললেই চলে। এ ব্যাপারে সকলেই সচেতন হই।

৩. যাকাত হয় যে সব সম্পদ সেগুলি হলো:

> সোনা

> রূপা

> নগদ অর্থ

> ব্যবসার পণ্য

> বিচরণশীল গবাদি পশু যেমন-উট, গরু-ছাগল, ভেড়া ইত্যাদি।

৪. যাকাত হওয়ার জন্য নেসাব পরিমাণ উল্লিখিত সম্পদগুলি এক বছর মালিকের নিকট গচ্ছিত থাকা শর্ত।

৫. গবাদি পশু যেগুলো বিচরণশীল অর্থাৎ তা মাঠে চরে খায় পশুর মালিককে তার জন্য খরচ করতে হয় না তার উপর যাকাত নির্ধারিত আছে। আমাদের দেশে এ ব্যাপারেও উদাসীনতা প্রকট। এক্ষেত্রেও সচেতনতা প্রয়োজন।

৬. সোনা সাড়ে ৭ ভরি বা তোলা হলে তাতে যাকাত ফরয হবে।

৭. রূপা সাড়ে ৫২ ভরি বা তোলা হলে তাতে যাকাত দেয়া ফরয।

৮. নগদ অর্থের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত:

ক. ব্যাংকে গচ্ছিত টাকা

খ. ফিক্সড ডিপোজিট তথা FDR/MTDR-এ গচ্ছিত অর্থ

গ. সঞ্চয়পত্র

ঘ. শেয়ার, বন্ড ইত্যাদি

ঙ. বাড়ি ভাড়ার অ্যাডভান্সের টাকা

চ. ডিপিএস-এ সঞ্চয়কৃত অর্থ

ছ. হজ্জের উদ্দেশ্যে বা অন্য কোনো উদ্দেশ্যে সঞ্চিত অর্থ ইত্যাদি।

৯. মিক্সড বা মিশ্রিত পণ্যের যাকাত:

কারো কাছে সাড়ে ৭ ভরির কম সোনা বা সাড়ে ৫২ ভরির কম রূপা আছে বা কিছু নগদ টাকা আছে, তার যাকাত হবে না। কিন্তু কারো কাছে যদি কিছু পরিমাণ সোনা, কিছু রূপা বা কিছু নগদ অর্থ অর্থাৎ যাকাতযোগ্য একাধিক সম্পদ থাকে। তখন উক্ত মিশ্রিত সম্পদের মোট মূল্য যদি সাড়ে ৫২ ভরি রূপার দরের সমান হয় তবে তাকে যাকাত দিতে হবে।

১০. নগদ অর্থের ক্ষেত্রে নেসাব হবে সাড়ে ৫২ ভরি রূপার বিক্রয়মূল্যের সমান অর্থ। অর্থাৎ কম-বেশি ৫৫ হাজার টাকা হলেই কারো উপর যাকাত ফরয হয়। এই হিসাবে আমাদের দেশে অনেকেরই যাকাত ফরয হয়। কিন্তু তারা অজ্ঞতা ও নানা ভুল ধারণার কারণে তা আদায় করেন না। এসব ভাই-বোনেরা সতর্ক হই এবং সঠিকভাবে হিসাব করে যাকাত আদায় করি।

১১. সোনা-রূপা উভয়েরই বিক্রয়মূল্যের উপর যাকাত দিতে হবে। বিক্রয় করতে গেলে দোকানীর কাছ থেকে যে মূল্য পাওয়া যাবে তার উপর যাকাত হবে, ক্রয়মূল্যের উপর নয়।

১২. ব্যবহার্য গহনার উপর যাকাত: নিত্য ব্যবহার্য গহনার উপর যাকাত দিতে হবে কিনা এ ব্যাপারে সম্মানিত ফুকাহায়ে কেরামের মতপার্থক্য আছে। কেউ বলেছেন দিতে হবে। কেউ বলেছেন দিতে হবে না। উভয়ের পক্ষে দলিল আছে। তবে দিয়ে দেয়াই উত্তম। তাছাড়া দুই, চার, পাঁচ, সাত বা দশ সেট জড়োয়া গহনা কারো ব্যবহার্য গহনা হতে পারে না। যারা লকারে শত শত ভরি গহনা জমা করে রাখেন অথচ যাকাত দেন না তাদের ব্যাপারে বলা হয়েছে:

“আর যারা সেনা ও রূপা জমা করে এবং তা আল্লাহর পথে ব্যয় করে না তাদেরকে কঠিনতম শাস্তির সংবাদ দাও। সেদিন জাহান্নামের আগুনে তা উত্তপ্ত করা হবে এবং তা দিয়ে তাদের কপাল, পার্শ্বদেশ ও পিঠে দাগ দেয়া হবে; সেদিন বলা হবে, ইহাই তা যা তোমরা নিজেদের জন্য জমা করতে। সুতরাং তোমরা যা জমা করেছিলে তার স্বাদ ভোগ কর।” (তাওবা ৯: ৩৪-৩৫)

রসুল (সা.)-এর নিকট এক মহিলা এলো তার মেয়েকে নিয়ে। তার মেয়ের হাতে দুটা সোনার কঙ্কন ছিল। তিনি তাকে জিজ্ঞাসা করলেন যে, এর যাকাত দেয় কিনা। সে দেয় না জানালে তিনি (সা.) বললেন, তুমি কি এতে খুশী হবে যে, মহান আল্লাহ এর বিনিময়ে কিয়ামতের দিন আগুনের দুটি কঙ্কন পরিয়ে দিবেন? সে তৎক্ষণাত তা খুলে রসুলুল্লাহ (সা.)-এর সামনে রেখে দিয়ে বললো, এ দুটি আল্লাহ ও তাঁর রসুলের জন্য। (আবু দাউদ ১৫৬৩)

অতএব, নেসাব পরিমাণ হলে ব্যবহৃত স্বর্ণালঙ্কারের যাকাত দেয়াই যথাযথ।

১৩. ব্যবসার পণ্যের মধ্যে যে টুকু পণ্য ১ বছর অবিক্রিত রয়ে গেছে তার মূল্য সাড়ে ৫২ ভরি রূপার সমান হলে তার উপর যাকাত দিতে হবে। কেউ যদি দাম বাড়লে বিক্রি করবে এ চিন্তায় কিছু ক্রয় করে যেমন- গাড়ি, জমি ইত্যাদি- তা ব্যবসার পণ্য হিসেবে গণ্য হবে। অবিক্রিত রয়ে গেলে তার উপর উল্লিখিত নিয়মে যাকাত দিতে হবে।

প্রিয় ভাই ও বোনেরা অনুগ্রহ করে লক্ষ্য করবেন-

১. যাকাত একটা ইবাদত। ফরয ইবাদত এবং ঈমানের শর্ত। আবু বকর (রা.) যাকাত অস্বীকারকারীদের মুসলিম হিসেবে গণ্য করেননি। তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন। কুরআন মজীদের সুরা তাওবার ১১ আয়াত হতে তিনি এর দলিল গ্রহণ করেছেন।

২. যাকাত শুধু হালাল মালের উপরই হয়। হারাম মালে কোনো যাকাত নেই। (বুখারী ১৪১০, মুসলিম ২২৩২) আল্লাহ পবিত্র তিনি কেবল পবিত্র জিনিসই গ্রহণ করেন। (মুসলিম) অতএব, সুদ, ঘুষ দুর্নীতি, ওয়ারিশানদের মেরে দেয়া সম্পদ, অন্যের হক মেরে দেয়া সম্পদে যাকাত হয় না। এসব সম্পদ পবিত্র করার উপায় সংশ্লিষ্টদের তা ফিরিয়ে দেয়া, তাদের কাছ থেকে ক্ষমা গ্রহণ করা এবং আল্লাহর নিকট তাওবা করা। এসব মাল থেকে যাকাত-সাদাকা নিয়ে যারা ইসলামী প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করেন তারা সতর্ক হওয়া উচিত। এর থেকে বিরত হওয়া দরকার। হারাম কাজে লিপ্তদের এর পরিণাম জানিয়ে তাদের এহেন কাজ থেকে বিরত হওয়ার জন্য সতর্ক করা প্রয়োজন। 

৩. যাকাত দান নয়, দেনা; সম্পদশালী ও ধনী নারী-পুরুষের। এটি গরীবের অধিকার। আল্লাহ বলেন,

“তাদের (অর্থাৎ ধনীর) সম্পদে অভাবী ও বঞ্চিতদের অধিকার রয়েছে।” (যারিযাত ৫১: ১৯)

যাকাত গ্রহণ না করলে গরীবের কোনো গুনাহ নেই। সে সবর করলে বরং তার সওয়াব হবে। আর যাকাত না দিলে ধনীর ঈমান প্রশ্নবিদ্ধ হবে এবং তার গোটা সম্পদ হারামে পরিণত হবে।

৪. কেউ কেউ আছেন যাকাত এড়ানোর জন্য সম্পদ যেমন- সোনা বছর পূর্তির আগে বিক্রি করেন বা টাকা হলে অন্যের একাউন্টে ট্রান্সভার করেন ইত্যাদি। একত্র মালকে যাকাতের হিসাবের পৃথক করে দেখানো যেমন- এটা স্ত্রীর, এটা মেয়ের, এটা ছেলের বিয়ের জন্য কিনেছি- এভাবে যাকাত এড়ানোর প্রচেষ্টা হারাম। (বুখারী ১৪৫০)

উপরন্তু, এতে সম্পদের অপচয় হয়। সোনা বিক্রির সময় একবার কম মূল্যে বিক্রি করেন, আবার নতুন করে কেনার সময় বেশি মূল্যে খরিদ করেন আমাদের মা-বোনেরা। এতে কি সোনার মালিক ঠকলেন না? যাকাত দিয়ে মাল পবিত্র করে নেয়াই কি উত্তম নয়? আর আল্লাহকে কি ফাঁকি দেয়া সম্ভব? তাছাড়া বিক্রিত টাকা তো আপনার কাছেই রয়ে যাচ্ছে, তাহলে তো যাকাতের হিসাবে তা আসবেই।

এ ধরনের আত্মপ্রতারণা কি বুদ্ধিমত্তার পরিচায়ক? রাষ্ট্রের হক মেরে দিলে তাদের দুর্নীতিবাজ বলে ঘৃণা করি। আল্লাহর হক ও গরীব বান্দার হক যারা মেরে দেয় তাদেরকে কি মনে করা উচিত?

৫. যাকাত শব্দের মূল অর্থ বৃদ্ধি পাওয়া, প্রবৃদ্ধি (Growth), প্রবৃদ্ধির কারণ হওয়া (to cause to grow), এর আরেক অর্থ পবিত্রতা, পরিশুদ্ধতা ইত্যাদি। আল-কুরআনে বলা হয়েছে-

“তাদের সম্পদ থেকে যাকাত গ্রহণ কর যাতে তুমি এর মাধ্যমে সেগুলোকে পবিত্র করতে এবং সেগুলোকে বরকতময় করতে পার।” (তাওবা ৯: ১০৩)

অতএব, যাকাত সম্পদ কমায় না বরং একে পবিত্র করে বৃদ্ধি করে, প্রবৃদ্ধি এনে দেয় এবং তার ক্ষতিকারকতা দূর করে তা বরকতময় করে।

এক হাদীসে কুদসীতে রসুলুল্লাহ (সা.) বলেন,

“মহান আল্লাহ বলেন, খরচ কর হে আদম সন্তান, আমিও তোমার জন্য খরচ করবো।” (বুখারী ৪৯৬১)

বান্দা আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য যাকাত-সাদাকা যথাযথভাবে আদায় করলে আল্লাহও বান্দার সম্পদ বৃদ্ধি করে দিবেন। তাতে বরকত দান করবেন। বিপদ-মুসীবত হতে তাকে হিফাযতে রাখবেন।

৬. যাকাতের প্রকৃত হকদারকে বের করে যথাযথভাবে যাকাত দেয়া প্রয়োজন। ভিক্ষার ব্যবসা করে যারা, মাদ্রাসা ও এতিমখানা খুলে যারা দ্বীনের নামে ব্যবসা করে তাদের ব্যাপারে সাবধান হই। প্রকৃত অভাবী ও মিসকীনদের চিহ্নিত করি। প্রকৃত দ্বীনি প্রতিষ্ঠান সেগুলি, যেগুলি যথাযথভাবে দ্বীনি শিক্ষা দিচ্ছে এবং উম্মতকে ভবিষ্যতে নেতৃত্ব প্রদানের জন্য যোগ্য আলেম তৈরি করছে, ভিক্ষুক নয়। এসব মাদ্রাসা-এতিমখানাগুলোতে যাকাত দেই। ব্যক্তি পর্যায়ে যাকাত দিলে ২, ৪, ৫, ১০ টাকা করে অনেককে না দিয়ে কারো কোনো প্রয়োজন পূরণ হয়- এমনভাবে দেই। যথা- কর্মসংস্থান, চিকিৎসা, শিক্ষা, আপৎকালীন সাহায্য যেমন- করোনায় কর্মহীনদের সহায়তা ইত্যাদি। প্রয়োজনে কয়েকজনে মিলে একজনকে দিন। সত্যিকার ইসলামী প্রতিষ্ঠানগুলিতেও দেয়া দরকার। যারা যাকাতের যথাযথ হিসাব রাখে এবং সঠিকভাবে খাতওয়ারী তা ব্যয় করে। যাকাতের এক উদ্দেশ্য দারিদ্র্য বিমোচন। সমাজকে দারিদ্র্যের অভিশাপ থেকে মুক্তি দান। সে উদ্দেশ্য পূরণে সচেষ্ট হই সবাই।

৭. যাকাতের একটা খাত- যাকাত ব্যবস্থাপনায় নিয়োজিতদের বেতন-ভাতা। এতে বুঝা যায় যাকাত প্রকৃতপক্ষে ব্যক্তিগতভাবে দেয়ার কথা নয়। রসুল (সা.) ও সাহাবীদের যামানায় রাষ্ট্রীয়ভাবে যাকাত আদায় ও বণ্টন হতো। রাষ্ট্রীয়ভাবে যাকাত আদায় হলে যাকাতের সবগুলি খাত থেকে যাকাত সংগ্রহ করা এবং যথাযথ হকদারদের চিহ্নিত করে তা তাদের কাছে পৌঁছে দেয়া সহজ ও যথাযথ হয়। এর ফলে যাকাত প্রদানকারীর মধ্যে অহংকার ও superiority complex এবং গ্রহীতার মধ্যে হীনতা এবং ব্যক্তির প্রতি কৃতজ্ঞতা ও আনুগত্যের মনোভাব তৈরি হতো না। এ কারণে ইসলামী সমাজ গঠন ও জীবনের সর্বক্ষেত্রে শরীয়াহর বিধান অনুসরণ আমাদের সবার জন্য জরুরী। সেই লক্ষ্যে সর্বস্তরের মুসলমানদের সচেষ্ট হওয়া উচিত।

৮. যাকাতের খাতের মধ্যে রয়েছে- ফী সাবিলিল্লাহ (আল্লাহর পথে) এবং মুয়াল্লাফাতুল ক্বুলুব (তথা অমুসলিমদের ইসলামের দিকে আকৃষ্ট করার জন্য)। ইসলামী দাওয়াত সম্প্রসারণ তাই যাকাতের একটা গুরুত্বপূর্ণ খাত। যেসব দ্বীনি প্রতিষ্ঠান এই লক্ষ্যে যথাযথভাবে কাজ করছে তাদের নিকটও যাকাতের অর্থ পৌঁছে দেয়া প্রয়োজন। তবে সতর্ক থাকা দরকার যেন উগ্রবাদী, সন্ত্রাসী কোনো সংগঠনের নিকট যাকাতের অর্থ তুলে না দেই।

৯. ইসলামী অর্থ ব্যবস্থার মূলনীতি হলো সম্পদের সুষম বণ্টন-

“যেন সম্পদ কেবল তোমাদের ধনীদের মধ্যেই আবর্তিত না হয়।” (হাশর ৫৯ : ৭)

বিশ্বব্যাপী দারিদ্র্যের মূল কারণই হলো সম্পদের অসম বণ্টন। বর্তমান বিশ্বের ৯৯% সম্পদ ১% ধনীর হাতে পুঞ্জীভূত হয়ে আছে। বাকী ৯৯% মানুষ ১% সম্পদের ভাগ পাওয়ার জন্য সংগ্রাম করছে। সম্পদের সুষম বণ্টনের লক্ষ্যে ইসলামের অন্যতম ব্যবস্থা হলো যাকাত, সাদাকায়ে ফিতর, ফিদইয়া ইত্যাদি। ইসলামই পৃথিবীর একমাত্র জীবন ব্যবস্থা যেখানে দারিদ্র্যের এই অধিকার রক্ষার্থে রাষ্ট্র পুঁজিপতিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছে। দরিদ্রদের, স্রষ্টা প্রদত্ত অধিকার নিশ্চিত করেছে। খলিফা আবু বকর (রা.) ইসলামের চরম দুর্দিনেও যাকাত অস্বীকারকারীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন।

ইসলামই প্রকৃত অর্থে মানবতাবাদী ধর্ম ও জীবন ব্যবস্থা। কিন্তু দুভার্গ্যজনকভাবে মুসলমানরা আজ ইসলামী জীবন ব্যবস্থার বিধি-বিধান, নীতি-আদর্শ এবং তার উদ্দেশ্য সম্পর্কে জানে না। ফলে বহু মানুষ ইসলাম ছেড়ে মনগড়া মতবাদে চিত্তের শান্তি ও মানবতার মুক্তি খুঁজছে। একদিকে সে ঈমান হারা হচ্ছে অপরদিকে শান্তি, কল্যাণ, মানবতার মুক্তি কোনোটাই তো আসছে না। বরং নিরীহ মানুষকে শোষণের নতুন নতুন মত, পথ, ও গোষ্ঠী তৈরি হচ্ছে মাত্র। এ অবস্থা হতে মুক্তির জন্য ইসলামের সঠিক শিক্ষার ব্যাপক প্রচার ও তালীম অপরিহার্য।

প্রিয় দ্বীনি ভাই ও বোনেরা, আসুন স্বতস্ফূর্তভাবে যথাযথ হিসাব করে প্রকৃত হকদারের নিকট যাকাতের অর্থ পৌঁছে দেই। বিশেষত: এই করোনাকালে আমাদের কোটি কোটি গরীব জনগোষ্ঠীর সাথে যোগ হয়েছে আরা ২.৫ কোটি নতুন দরিদ্র মানুষ। প্রকৃত হিসাবে এর সংখ্যা হয়তো আরো অনেক বেশি। সৎ মানুষেরা, দ্বীনদার মানুষেরা, দ্বীনি প্রতিষ্ঠানগুলো সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাদের খোঁজ নেই। তাদের কাছে যাকাতের অর্থ পৌঁছে দিয়ে ঈমানী দায়িত্ব পালন করি। দারিদ্র্য বিমোচন ও ইসলামী সমাজ গঠনে ভূমিকা রাখি। মহান আল্লাহ সকলকে তাওফীক দান করুন।

গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...

খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর

Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.

Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.