রমজান ও কুরআন অধ্যয়ন: ১
- Details
- by এহসানুল কবীর
"ওয়া রত্তিলিল কুরআনা তারতিলা"। মহান আল্লাহ বলেন- "আর কুরআন পাঠ কর তারতীলের সাথে (অর্থাৎ ধীরে ধীরে ও সুস্পষ্টভাবে)।" (মুজাম্মিল ৭৩: ৪)
রমজান মাস কুরআন নাযিলের মাস। কুরআন অধ্যয়নের মাস। কুরআন অধ্যয়ন বলতে, না বুঝে কুরআন তিলাওয়াত করাকেই বুঝে থাকি আমরা অধিকাংশই। তারা রসুলুল্লাহ (সা.)-এর হাদীস হতে এ অর্থ গ্রহণ করেছেন যে, কুরআনের প্রতি হরফে ১০ নেকী করে আছে। অতএব, তা-ই নাজাতের জন্য যথেষ্ট। অনুবাদ পড়ে অর্থ বুঝার কষ্ট করার দরকার নেই। অথচ রসুলুল্লাহ (সা.) যাদের সামনে কথা বলেছেন তারা প্রায় সবাই ছিলেন আরবী ভাষী, কুরআন বুঝার জন্য অনুবাদের প্রয়োজন তাদের ছিল না। আবার অনকে মনে করেন যে, কুরআন সাধারণ মানুষ বুঝবে না, বুঝতে গেলে বিভ্রান্ত হয়ে যাবে ইত্যাদি। অথচ আল্লাহতা’লা বুঝা ও মানার জন্যই কুরআন নাযিল করেছেন। তা বুঝার জন্য, চিন্তা-গবেষণা করার নির্দেশ প্রদান করছেন। যে কুরআন বুঝার চেষ্টা করে তা তার জন্য সহজ করে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। আসুন সংক্ষেপ কুরআন, হাদীস এবং রসুলুল্লাহ (সা.) ও সাহাবায়ে কেরাম (রা.) এর আমল হতে কুরআন অধ্যয়নের পথ ও পদ্ধতি বুঝার চেষ্টা করি।
(১) কুরআন অধ্যয়ন তথা বুঝে পড়ার গুরুত্ব:
জানা, মানা ও অনুসরণের জন্যই কুরআন নাযিল করা হয়েছে। তাই কুরআন বুঝে পড়ার কোনো বিকল্প নেই। খোদ কুরআনেই সে নির্দেশনা দান করা হয়েছে।
১.১ বুঝার জন্য আল-কুরআন:
আল্লাহপাক বলেন,
“এরা কি কুরআন নিয়ে চিন্তা-গবেষণা করে না?" (নিসা ৪:৮২)
আরো বলেন,
"তবে কি তারা কুরআন সম্পর্কে গভীরভাবে চিন্তা করে না? না তাদের অন্তর তালাবদ্ধ হয়ে গিয়েছে?" (মুহাম্মদ ৪৭: ২৪)
অতএব, শুধু বুঝা নয়, কুরআন নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা-ভাবনা করার নির্দেশ এসেছে। যারা আরবী জানেন না তারা অর্থ ও তফসীরসহ অধ্যয়ন না করে কিভাবে তা বুঝবেন বা তা নিয়ে চিন্তা-গবেষণা করবেন?
১.২ উপদেশ ও নসীহত গ্রহণের জন্য কুরআন:
মহান আল্লাহ বলেন,
"এক কল্যাণময় কিতাব, ইহা আমি তোমার প্রতি নাযিল করেছি, যাতে মানুষ এর আয়াতগুলি অনুধাবন করে এবং বোধশক্তি সম্পন্ন ব্যক্তিরা এ থেকে উপদেশ গ্রহণ করে।” (সাদ ৩৮: ১৯)
অর্থ না বুঝে আয়াতগুলি গড়গড় করে পাঠ করে গেলে তা থেকে উপদেশ নেখার কোনো দূরতম সম্ভাবনাও থাকে না।
১.৩ সব সমস্যার সমাধান রয়েছে আল-কুরআনে। রয়েছে বিষদ ব্যাখ্যা তফসীর ও উদাহরণ:
আল্লাহপাক বলেন,
"ওরা তোমার কাছে এমন কোনো সমস্যা উপস্থিত করে না, যার সঠিক সমাধান ও সুন্দর ব্যাখ্যা আমি তোমাকে দান করি নাই।” (ফুরকান ২৫: ৩৩)
আরো বলা হয়েছে,
"আমি আত্মসমর্পণকারীদের জন্য প্রত্যেক বিষয়ে স্পট ব্যাখ্যাস্বরূপ পথনির্দেশ, দয়া ও সুসংবাদ হিসেবে তোমার প্রতি কিতাব নাযিল করলাম।" (নহল ১৬: ৮৯)
কুরআন থেকে জীবন সমস্যার সমাধান ও দিকনির্দেশনা পেতে হলে যে তা গভীরভাবে বুঝে বুঝে পাঠ করতে হবে তা বলাই বাহুল্য। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হল আজকের মুসলমান সমস্যা সমাধানের জন্য কুরআন পড়ে না। কুরআন পড়ে রমজানে, তারাবীতে দ্রুতগতিতে, যাতে বুঝার কোনো মাকসাদ থাকে না। আর পড়ে মৃতের পাশে যার বুঝার কোনো প্রয়োজন আর নেই। কারণ কুরআন মানার দায়-দায়িত্ব তার ফুরিয়েছে। সে এর হিসাব নিয়ে ব্যস্ত এখন। আর জীবিতরা জীবন সমস্যার সমাধান খুঁজছে মানুষের তৈরি করা মতবাদ ও শক্তিমানদের দিকনির্দেশনার মধ্যে। হায় আমাদের জাতি! হায় আমাদের উম্মাহ! যে কুরআন পাঠ করে তারা বিশ্বের বুকে শ্রেষ্টত্ব অর্জন করেছিল, নিজেরা সভ্য হয়েছিল, মানবজাতিকে সভ্যতার আলো দেখিয়েছিল। সেই কুরআন পড়া সত্ত্বেও সে আজ বিশ্বের সবচেয়ে অধঃপতিত জাতিতে পরিণত হয়েছে। কারণ কুরআন বুঝা ও মানার দায়িত্ত্ব থেকে সে নিজেকে মুক্ত করে নিয়েছে। কুরআনের শিক্ষা তার কাছে আজ অপ্রাসাঙ্গিক (Irrelevant)! নাউজুবিল্লাহ। এ অবস্থা পরিবর্তনের জন্য অর্থ ও তফসীরসহ কুরআনের ব্যাপক পঠন-পাঠনের কোনো বিকল্প নেই।
১.৪ ব্যক্তি ও জাতির পরিশুদ্ধি ও নৈতিক উন্নতির জন্য কুরআন:
আল্লাহ রব্বুল ইজ্জত বলেন,
"তিনিই উম্মীদের মধ্যে একজন রসুল পাঠিয়েছেন তাদেরই মধ্যে হতে, যে তাদের নিকট তেলাওয়াত করে তাঁর আয়াতসমূহ; তাদের পবিত্র ও পরিশুদ্ধ করে এবং শিক্ষা দেয় কিতাব ও হিকমত; ইতিপূর্বে তো এরা ছিল ঘোর বিভ্রান্তিতে; এবং সেইসব অন্যান্য মানুষের জন্যও যারা এখনো তাদের সাথে মিলিত হয়নি। (অর্থাৎ পরবর্তী মানব প্রজন্মগুলো) আল্লাহ পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।” (সুরা জুমুয়া ৬২: ২-৩) সুরা বাকারার ১২৯, ১৫১ এবং আলে ইমরানের ১৬৪ আয়াতে রসুলের দায়িত্ব ও কর্মসূচি সম্পর্কে একই হেদায়ত এসেছে। আয়াতে উল্লেখিত তাযকিয়া বা পবিত্রতা অর্থ ঈমান ও মূল্যবোধের পবিত্রতা, চিন্তার পরিশুদ্ধি, ইলম বা জ্ঞানের পরিশুদ্ধি, নৈতিকতা ও চরিত্রের পরিশুদ্ধি এবং সমাজ, রাষ্ট্র ও বিশ্ব ব্যবস্থার পরিশুদ্ধি। অতএব, কুরআন না বুঝে তেলাওয়াতের মধ্যে আবদ্ধ থাকলে ব্যক্তি ও সমাজ দুর্নীতি ও বিকৃতি থেকে মুক্ত করা সম্ভব হবে না। সে অবস্থায় বহু ফরয বিধান পালন করা এবং বহু হারাম থেকে বাঁচা দুষ্কর হয়ে পড়বে। যা আমরা বর্তমানে দেখতে পাই। নফল ইবাদত করে ফরয তরক ও হারামে লিপ্ত হওয়ার গুনাহ থেকে বাঁচা যাবে কি?
১.৫ অনুসরণের জন্য আল-কুরআন:
কুরআন শুধু তেলাওয়াতের জন্য নাযিল হয়নি, বরং নাযিল হয়েছে অনসরণের জন্য। আল্লাহপাক তাঁর রসুলের (সা.) প্রতি বলেন,
“তোমার রবের নিকট হতে তোমার প্রতি যা ওহী হয় তুমি কেবল তারই অনুসরণ কর।” (আহযাব ৩৩: ২)
রসুলকে তিনি নির্দেশ দিয়েছেন-
“বল, নিজ হতে এটা (অর্থাৎ কুরআন) বদলানো আমার কাজ নয়। আমার প্রতি যা ওহী হয় আমি কেবল তারই অনুসরণ করি। আমি আমার রবের অবাধ্যতা করলে অবশ্যেই আমি মহাদিবসের শাস্তির আশঙ্কা করি।” (ইউনুস ১০: ১৫)
“বল, আমার রবের নিকট হতে যে ওহী প্রাপ্ত হই আমি শুধু তারই অনুসরণ করি। এই কুরআন তোমার রবের আয়াত। ঈমানদার কওমের জন্য এটা হেদায়াত ও রহমত।” (আরাফ ৭: ২০৩)
মুমিনদের প্রতি নির্দেশ দেওয়া হয়েছে:
তোমাদের রবের নিকট হতে তোমাদের প্রতি যা নাযিল করা হয়েছে তোমরা তারই অনুসরণ কর, আর তাঁকে বাদ দিয়ে অন্য কোনো ওলীর অনুসরণ করো না।” (আরাফ ৭: ৩)
১.৬ তাবলীগ ও দাওয়াত, ওয়াজ-নসীয়ত, উপদেশ ও আন্দোলন, সংগ্রামসহ ইসলামের সাথে সম্পর্কিত সব কাজের ভিত্তি হবে আল-কুরআন:
আল্লাহ বলেন,
হে রাসূল! তোমার রবের কাছ থেকে তোমার প্রতি যা নাযিল হয়েছে তুমি তার তাবলীগ করো, যদি না কর তাহলে তো তুমি রিসালাতের দায়িত্বই পালন করলে না। আল্লাহ তোমাকে মানুষ হতে রক্ষা করবেন।" (মায়িদা ৫: ৬৭)
আরো বলেন, “সুতরাং, যে আমার শাস্তিকে ভয় করে তাকে তুমি এই কুরআনের সাহায্যে উপদেশ দান করো।" (ক্বাফ ৫০: ৪৫)
অতএব, দ্বীনের দায়াতের ভিত্তি হবে আল-কুরআন। কুরআন ব্যাখ্যার জন্য নিতে হবে সহীহ হাদীসকে। যেমন আমরা দেখি আবিসিনিয়ায় হিজরতের পর হযরত জাফর বিন আবু তালিবের (রা.) দায়াওতী কর্মকাণ্ডের মধ্যে।
আল্লাহ তা'লা আরো বলেন,
"সুতরাং তুমি কাফিরদের আনুগত্য করো না এবং তুমি কুরআনের সাহায্যে তাদের বিরুদ্ধে প্রবল সংগ্রাম চালিয়ে যাও।’' (ফুরকান২৫: ৫২)
আন্দোলন-সংগ্রামসহ সমস্ত ইসলামী কর্মকাণ্ডের ভিত্তি হবে কুরআন ও কুরআনী দিকনির্দেশনা অনুযায়ী রসুলুল্লাহ (সা.) এর আদর্শ।
সেদিন দেখলাম এক লেখক কোনো কর্মকাণ্ডের পক্ষে যুক্তি দিয়ে বলছেন যে, সহিংসতা ছাড়া কোনো আন্দোলন হয় না। এটাই নাকি এদেশের ঐতিহ্য। সুবহানাল্লাহ! ইসলামী কার্যক্রমের জন্য কুরআন-সুন্নাহ্র সাথে সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার দায়টুকুও আমরা আজ হারিয়ে ফেলছি। আদর্শ নিচ্ছি প্রচলিত রাজনীতি বা উগ্রবাদী কর্মকাণ্ড থেকে। এখানেই সুন্নাহর অপরিহার্যতা। কিছু ভাই সুন্নাহ্ সম্পর্কে প্রাচ্যবিদ বা ওরিয়েন্টালিস্টদের তৈরী করা মনগড়া বিভ্রান্তির শিকার হয়ে পড়েছেন। আল্লাহপাক তো তাঁর কিতাবের ব্যাখ্যা রসুলকেই শিক্ষা দিয়েছেন। (সুরা কিয়ামাহ ৭৫: ১৬-১৯)
সুন্নাহ্ ছাড়া তারা নামায-রোজাই বা করেন কিভাবে, যাকাত কিভাবে দেন, হজ্জই বা কিভাবে আদায় করেন বোধগম্য নয়। সুন্নাহ্ অনুসরণের নির্দেশনা যখন কুরআনেই দেয়া হয়েছে (নিসা ৪: ৬৫) তখন সুন্নাহ্ আল্লাহপাকের ব্যবস্থাপনাতেই সংরক্ষিত রয়েছে। ডিকশনারী দেখে জাহেল কবিদের ব্যবহৃত অর্থ দিয়ে কুরআনের অর্থ ও ব্যাখ্যা করা ও তা অনুসরণ করার নির্দেশনা কি কুরআন থেকে পাওয়া যায়? আল্লাহতা’য়ালা ভাইদের অন্তরগুলি হেদায়াতের জন্য খুলে দিন।
বলছিলাম, কুরআন-ভিত্তিক ও সুন্নাহ নির্দেশনা অনুযায়ীই ইসলামী দাওয়াহ কার্যক্রমসহ সবধরনের কাজ চালাতে হবে। আজকাল হলো lebelling-এর জামানা। কারো কথা পছন্দ না হলে তাকে একটা লেবেল লাগিয়ে দিন। তারপর ইচ্ছামত গাল-মন্দ ও কোনঠাসা করুন। অথচ আমাদের ইতিহাস কিন্তু ভিন্ন শিক্ষা দেয়। ইমাম হোসেইন (রা.) ইয়াজিদের বিরুদ্ধে জিহাদে গেলন, আব্দুল্লাহ্ বিন আব্বাস (রা.), ইবনে ওমর (রা.) কেউই তার এ পদক্ষেপ সমর্থন করলেন না। কিন্তু কেউ কাউকে lebelling করলেন না। এটিই ইসলামের শিক্ষা।
জাতিকে ইসলামের শিক্ষা না জানিয়ে; কুরআন-হাদীস না শিখিয়ে, জাহেলী ও ভোগবাদী চরিত্র থেকে ত্যাগী মানসিকতায় উন্নত না করে যারা ইসলাম প্রতিষ্ঠার জন্য আহ্বান জানান তারা বারবার হঠকারীতার শিকার হয়েছেন। কুরআনী নির্দেশনা বাস্তবায়নে সুন্নাহ্র শিক্ষা কতইনা জরুরী। দ্বীনের প্রতিটি বিধান বাস্তবায়নে ধারাবাহিকতা ও প্রস্তুতি পর্ব রয়েছে। মাদানী জিন্দেগীর জন্য রয়েছে ১৩ বছরের মক্কী জীবন। মনে রাখা দরকার এই ১৩ বছর রসুলের (সা.) নেতৃত্বে সাহাবা (রা.) এর ঈমানী ও নৈতিক তালিম ও প্রশিক্ষণ হয়েছে। তারপরও মদ হারামের জন্য মাদানী জীবনে মোটামোটি ৬ বছরে ৩ ধাপে নির্দেশনা এসেছে। সুদ হারাম ঘোষণার জন্য অপেক্ষা করা হয়েছে মাদানী জীবনের শেষ পর্যায় পর্যন্ত। আকীদা সংশোধন না করে হুকুম নাযিল ও বাস্তবায়নের নির্দেশ আসেনি। রামাদানের মাধ্যমে নৈতিকতার পরিশুদ্ধির আগে বদরে যাওয়ার নির্দেশও আসেনি। অতএব, তাড়াহুড়া না, অস্থিরতা না, আন্দোলনের নামে সন্ত্রাস ও উগ্রতা নয়। মুসলমানদের মধ্যে বিভেদ ও বিদ্বেষ নয়, কল্যাণকার ও তাকওয়ার পথে ঐক্য, সহযোগিতা ও সহমর্মিতার মনোভাব সৃষ্টি করতে হবে। (মায়িদা ৫: ২) সবর! সবর! এবং সবর! এটাই ইসলামী দাওয়াহ কার্যক্রমের মূলনীতি ও পাথেয় হিসেবে গ্রহণ করা জরুরী হয়ে পড়েছে।
কুরআন বুঝে পড়ার তাগিদ সম্পর্কে আজ এতটুকুই। মসলিম জাতির বর্তমান দুরাবস্থা নিয়ে সবাই আমরা আন্তরিকভাবে চিন্তিত- এ বিষয়ে কোনোই প্রশ্ন নেই। তবে সব বিষয়েই আমাদের আল-কুরআন নবীর (সা.) আদর্শ এবং বাস্তবতার আলোকে চিন্তা করতে হবে। এক ভাই সেদিন বললেন, আমরা বিজ্ঞান চর্চা করি না বলে এ অবস্থা হয়েছে। আরেকজন বললেন, জ্ঞান চর্চা থেকে পিছিয়ে থাকাই এর কারণ। প্রশ্ন হল- কোন জ্ঞান চর্চা করবো আমরা? বিভ্রান্ত ও বিকৃত মানবাধিকার প্রাচ্যবিদদের রেখে যাওয়া জ্ঞান, যা বৃটিশ শাসনের উত্তরাধিকার হিসেবে আমরা সবাই পাচ্ছি! কুরআন-সুন্নাহ্র বিশুদ্ধ শিক্ষা থেকে দূরে সরানোর জন্যই কি এই তথাকথিত জ্ঞানের বিস্তার ও চর্চা শুরু করেননি উপনিবেশবাদীরা? এই জ্ঞান তো মানসিক গোলামী তৈরীর জন্যই সর্বস্তরে চালু করা হয়েছিল। তাহলে এ পথ ধরে কিভাবে সে-ই কুরআন বুঝবো যা নাযিলই হয়েছে “(গোলামীর) গুরুভার ও শৃঙ্খল থেকে মুক্তির জন্য।” (আরাফ ৭: ১৫৭)
এই জ্ঞান শিক্ষা করে কি সেই মানুষ তৈরী হবে যে পারস্য সাম্রাজ্যের প্রবল প্রতাপ জেনারেলের সামনে বলতে পারে- “আমরা এসেছি আল্লাহ্র বান্দাদের গোলামদের গোলামী থেকে মুক্ত করে শুধু আল্লাহ্র বান্দায় পরিণত করার জন্য।” (রিবঈ ইবনে আমের (রহ.) কাদেসিয়ার যুদ্ধের পূর্বে পারস্য সেনাপাতি রুস্তমের প্রতি)
গোলাম তৈরীর কারখানা থেকে স্বাধীন মানুষ তৈরী হয় না। মুসলমানরা আগে তাওহীদে ঈমান এনেছে, কুরআনকে আকড়ে ধরেছে নবীর (সা.) সুন্নাহ্র অনুসরণে তা বাস্তবায়ন করেছে। অতঃপর আল্লাহতা’য়ালা জ্ঞান-বিজ্ঞানের সমস্ত দরজা তাদের সামনে খুলে দিয়েছেন। সে পথেই আজকের মুসলমানদের এগুতে হবে।
রমজানে কে কতটুকু কুরআন বুঝে পড়লাম মূল্যায়ন করি। মার্কার দিয়ে দাগিয়ে দাগিয়ে যত্ম সহকারে কুরআন পড়ি। সহীহ হাদীসের মৌলিক গ্রন্থগুলি (যেমন- বুখারী বা মুসলিম) বা কোনো সহীহ সংকলন যেমন- আল লু’লু ওয়াল মারজান বা ইমাম নববীর রিয়াদুস সালেহীন পাঠ করি। আত্মসমালোচনা করি। আমার জীবনে ইসলামের ছাপ কতটুকু মূল্যায়ন করি। দুর্বলতার জন্য তাওবা করি এবং সংশোধনে এগিয়ে আসি। আল্লাহ্ তা’য়ালা আমাদের সকলকে তাওফীক দান করুন।
গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...
খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর
Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.
Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.