ভারত পেরিয়ে বিশ্ববাজারে চোখ কলকাতা নাইট রাইডার্সের

লোকে বলে ভারতে নাকি দুটি ধর্ম— হলিউড এবং ক্রিকেট। আর এই দুই “ধর্মের” মধ্যে সংযোগ স্থাপন করেছেন শাহরুখ খান। বলিউডের এই সুপার স্টার একের পর এক হিট চলচ্চিত্র দিয়ে বছরের পর বছর ধরে কাঁপিয়ে যাচ্ছেন বক্সঅফিস, আবার ক্রিকেট মাঠে কলকাতা নাইট রাইডার্স নামেও তার অবিশ্বাস্য দাপুটে বিচরণ।

ভারতের বাজার পেরিয়ে নাইট রাইডার্স ব্রান্ড পৌঁছে ক্যারিবিয়ান অঞ্চলেও। সেখানে আছে ত্রিনবাগো নাইট রাইডার্স। ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগের গত ছয় আসরের চারটিতেই চ্যাম্পিয়ন তারা। এবার আরো দূরে চোখ রাখছে নাইট রাইডার্স ব্রান্ড।

নাইট রাইডার্নসের প্রধান নির্বাহী ভেনকি মহিশুর জানিয়েছেন ভারত ও ক্যারবিয়ান বাজার মাতিয়ে নাইট রাইডার্স এখন চোখ রাখছে দক্ষিণ আফ্রিকা, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের বাজারেও। সেখানেও নাইট রাইডার্স ব্রান্ডের চোখ ধাঁধানো উপস্থিতি নিশ্চিত করতে কাজ করছেন তারা।

ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগকে মনে করা হয় দুনিয়ার সবচেয়ে লাভজনক ক্রিকেট আসর। আসরের গত আয়োজন থেকে প্রায় সাড়ে তিনশ মিলিয়ন ইউরো কামিয়েছে বিসিসিআই— ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড।

শুধুমাত্র উদ্যোক্তরাই নন, আইপিএল থেকে কাড়ি কাড়ি অর্থ কামান ক্রিকেটাররাও। চলতি আসরেই যেমন বেশ কয়েকজন ক্রিকেটার দুই মাসের আসর থেকে কামিয়ে নেবেন ১০ কোটিরও বেশি রুপি! এক, দুই বা চার-পাঁচ কোটি তো কামাবেন বহু ক্রিকেটার।

নাইট রাইডার্স নাম নিয়ে ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগে খেলে ত্রিনিদাদ ও টোব্যাগোর একটি দল— ত্রিনবাগো। তাদের সাথে কলকাতা নাইট রাইডার্সের শুধু নামেই মিল নয়, বরং দুটি দলে কোচিং করান নিউজিল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক ব্রেন্ড্যান ম্যাককালাম। দুটি দলেই খেলেন এমন ক্রিকেটারও বেশ কয়েকজন। অর্থাৎ শুধু নামে নয়; কলকাতার সাথে ত্রিনবাগোর মিলও অনেক।

সিপিএলে ত্রিনবাগো নাইট রাইডার্সের টিভি দর্শক ছিলো মাত্র ২০ মিলিয়নের মতো। গত কয়েক বছরে এই সংখ্যা পৌঁছেছে ১৫০ মিলিয়নে। নাইট রাইডার্সের প্রধান নির্বাহী মনে করেন এটি সম্ভব হয়েছে দুটি ব্রান্ডের অসাধারণ ফ্যানবেজের জন্য।

দক্ষিণ আফ্রিকার টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টে কেপটাউন নাইট রাইডার্স নামে একটি দলের মালিকানা নেওয়ার পরিকল্পনা আছে নাইট রাইডার্স গ্রুপের। হয়তো আগামী বছরই এই পরিকল্পনা বাস্তবতার মুখ দেখবে।

নাইট রাইডার্স এখানেই থামতে চায় না। আগামী বছর শুরু হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের টি-টোয়েন্টি লিগ মেজর ক্রিকেট লিগ। সেখানে লস অ্যাঞ্জেলেস নাইট রাইডার্স নামে একটি দল নেওয়ার চেষ্টা করছে কলকাতা নাইট রাইডার্স কর্তৃপক্ষ। এই চেষ্টা সফল হওয়ার খুব কাছে গিয়েই পৌঁছেছে বলে দাবি করেছেন নাইট রাইডার্সের প্রধান নির্বাহী।

ক্রিকেটের এই বৈশ্বিক ফেরিওয়ালা গ্রুপটি এবার চোখ রাখছে যুক্তরাজ্যের প্রতিযোগিতা দ্য হান্ড্রেডসও। যদিও সেখানে দলগুলোর মালিকানা কী হবে, তা এখনো নিশ্চিত নয়। যদি বেসরকারি মালিকানার বিষয়টি থাকে, তাহলে লর্ডস নাইট রাইডার্স নামে দল নিতে চায় কলকাতা নাইট রাইডার্স গ্রুপ।

ভারতের বাজার থেকে কলকাতা নাইট রাইডার্স বিশ্ব বাজারে পা ফেলেছে অনেক দিনই হয়। কিন্তু এখানেই সন্তুষ্ট নন ভেনকি মহিশুর বা শাহরুখ খান। তারা বিশ্ব বাজারে তাদের আধিপত্যও বিস্তার করতে চান আরো দৃঢ়ভাবে। ধীরে ধীরে সে দিকেই এগিয়ে যাচ্ছে কলকাতা নাইট রাইডার্স।