ক্লাব ফুটবল: রোনালদোর চেয়েও সফল তারা
- Details
- by খেলাধুলা ডেস্ক
একজন ফুটবলার সত্যিকারের ফুটবলার হয়ে ওঠেন ক্লাব ফুটবলের মঞ্চ থেকে। বিশ্বকাপ না জিতেও এই মঞ্চে আলো ছড়িয়ে অনেকেই পেয়েছেন কিংবদন্তির মর্যাদা। ক্লাব ফুটবলের ইতিহাস ঘাঁটলে এমন অনেক খেলোয়াড়কেই পাওয়া যায়। কেউ কেউ সফল হয়েছেন ক্লাব এবং জাতীয় দল দুই জায়গাতেই। তবে আজকের আলোচনা শুধুই ক্লাব ফুটবলের দলীয় সাফল্য ঘিরে। যেখানে ট্রফির সংখ্যাকে সাফল্যের মানদণ্ড হিসেবে ধরে নেওয়া হয়েছে। এই হিসেবে ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো কিছুটা পিছিয়ে আছেন। ক্লাব ক্যারিয়ারে তার শিরোপা ২৯টি। রোনালদোর সমান শিরোপা কিংবদন্তি জাভি হার্নান্দেজেরও। দলীয় সাফল্যের এই হিসেবে রোনালদো-জাভির চেয়ে এগিয়ে আছেন বেশ কয়েকজনই। সংক্ষেপে দেখে নেওয়া যাক সেসব ফুটবলারকে:
ভিটর বাইয়া: ক্লাব ফুটবল ক্যারিয়ারে ৩৪টি ট্রফি জিতেছেন ভিটর বাইয়া। বার্সেলোনায় খেললেও তাকে কিংবদন্তির খ্যাতি দিয়েছে পোর্তো। পর্তুগিজ এই ক্লাবটির হয়েই ক্যারিয়ারের বড় একটা অংশ খেলেছেন বাইয়া। তিনি উঠে এসেছেন পোর্তোর একাডেমি থেকে। পোর্তোতে দুই মেয়াদে খেলেছেন এই গোলরক্ষক। ১৯৮৮ সালে পেশাদার ফুটবলার হিসেবে অভিষেক হয় তার।
পোর্তোতে প্রথম মেয়াদে পর্তুগিজ জায়ান্টদের হয়ে ৩১৫টি ম্যাচ খেলেছেন তিনি। আট বছর পর বার্সেলোনায় যোগ দেন বাইয়া। পরে ১৯৯৯ সালে পুরনো ক্লাবে ফিরে আসেন এই কিপার। দ্বিতীয় মেয়াদে পোর্তোর হয়ে ২১০টি ম্যাচ খেলেছেন বাইয়া। ২০০৭ সালে অবসরে যাওয়ার আগে পোর্তোর হয়ে ১০টি পর্তুগিজ লিগ ও একটি চ্যাম্পিয়নস লিগ জিতেছেন তিনি। বার্সার জার্সিতে তার অর্জন একবার লা লিগার ট্রফি।
জেরার্ড পিকে: ক্লাব ক্যারিয়ারে ৩৫টি শিরোপা জিতেছেন জেরার্ড পিকে। পিকে তার সময়ে সেরা ডিফেন্ডারদের একজন। বার্সেলোনার গুরুত্বপূর্ণ একজন খেলোয়াড়। বার্সায় দুই মেয়াদে খেলছেন তিনি। মাঝে ২০০৮ সালে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড থেকে ন্যু ক্যাম্পে ফিরে আসেন বিশ্বজয়ী এই তারকা। কাতালানদের হয়ে সবধরনের প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ৫৫৯টি ম্যাচ খেলেছেন পিকে। এ সময়ে বার্সার হয়ে মৌলিক শিরোপার মধ্যে আটটি লা লিগা, তিনটি চ্যাম্পিয়নস লিগ জিতেছেন তিনি। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের জার্সিতে তার অর্জন একটি করে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ ও চ্যাম্পিয়নস লিগ শিরোপা।
স্যার কেনি ডালগ্লিস: পিকের মতো সমান ৩৫টি শিরোপা জিতেছেন স্যার কেন ডালগ্লিস। ক্লাব ক্যারিয়ারের পুরোটা সময় দুটি ক্লাবের হয়ে কাটিয়েছেন তিনি। তার যাত্রা শুরু হয় স্কটিশ ক্লাব সেল্টিকের হয়ে। এই ক্লাবের হয়ে চারটি স্কটিশ লিগ জিতেছেন তিনি। সেল্টিকের হয়ে ৩৩৮ ম্যাচে ১৭৩টি গোল করেছিলেন এই স্ট্রাইকার। ১৯৭৭ সালে লিভারপুলে যোগ দেন ডালগ্লিস। অল রেডদের জার্সিতেই বিশ্বের অন্যতম সেরা স্ট্রাইকার হয়ে ওঠেন তিনি। ইংলিশ ক্লাবটির হয়ে ৫১৫টি ম্যাচে ১৭২টি গোল করেন ডালগ্লিস। ১৯৯০ সালে অবসরে যাওয়ার আগে ছয়টি ইংলিশ লিগ শিরোপা জেতেন তিনি। খেলোয়াড়ি জীবনকে বিদায় জানানোর পর দুই মেয়াদে লিভারপুলের কোচ হিসেবে কাজ করেছেন তিনি।
রায়ান গিগস: ম্যানচেস্টার ইউনাটেডের কিংবদন্তি ফুটবলার রায়ান গিগস। তার সময়ের অন্যতম সেরা উইঙ্গার ছিলেন এই ওয়েলস তারকা। ক্লাব ক্যারিয়ারের পুরোটা সময় ওল্ড ট্রাফোর্ড চত্বরেই কাটিয়েছেন গিগস। রেড ডেভিলসদের হয়ে ১৯৯০ সালে অভিষেক হয় তার। অবসরে যাওয়ার আগে ম্যানইউর পক্ষে ৯৬৩টি ম্যাচ খেলেছেন গিগস। গোল করেছেন ১৬৮টি। ম্যানইউর হয়ে ১৩টি ইংলিশ লিগ, দুটি চ্যাম্পিয়নস লিগসহ সর্বমোট ৩৬টি ট্রফি জিতেছেন গিগস। অবসরে যাওয়ার আগে এই ক্লাবের ভারপ্রাপ্ত কোচ হিসেবেও দেখা গেছে তাকে। একই ম্যাচে কোচ এবং খেলোয়াড় দুই ভূমিকায় হাজির হয়ে একটা দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিলেন গিগস। বর্তমানে ওয়েলস জাতীয় দলের প্রধান কোচ হিসেবে নিযুক্ত আছেন তিনি।
লিওনেল মেসি: তর্কসাপেক্ষে সর্বকালের সেরা ফুটবলার লিওনেল মেসি। ক্লাব ক্যারিয়ারে তার কোনো কিছু জেতাই বাকি নেই। তার ক্যারিয়ারের পুরোটা সময় বার্সেলোনায় কাটছে। কাতালানদের হয়ে সর্বমোট ৩৭টি ট্রফি জিতেছেন মেসি। সবশেষ গেল শনিবার অ্যাথলেটিক বিলবাওকে উড়িয়ে কোপা ডেল রের স্বাদ নিয়েছেন আর্জেন্টাইন সুপারস্টার। খুব সম্ভবত বার্সার হয়ে শেষ ট্রফিটি জিতে ফেলেছেন তিনি। কারণ মৌসুম শেষে বার্সেলোনা ছাড়তে চান মেসি। সব ধরনের প্রতিযোগিতা মিলিয়ে এ পর্যন্ত বার্সার হয়ে ৭৭১টি ম্যাচ খেলেছেন তিনি। গোল করেছেন ৬৬৫টি।
ম্যাক্সওয়েল: খুব বড় মাপের ফুটবলার নন ম্যাক্সওয়েল। কিন্তু তার অর্জন হার মানিয়েছে অনেক কিংবদন্তিকে। এই ডিফেন্ডার খেলেছেন কয়েকটা বিখ্যাত ক্লাবে। বর্তমানে তিনি খেলছেন প্যারিস সেন্ট জার্মেইতে (পিএসজি)। এখানে আসার আগে আয়াক্স, ইন্টার মিলান ও বার্সেলোনার জার্সিতে আলো ছড়িয়েছেন তিনি। চারটি ক্লাবের হয়েই ঘরোয়া শীর্ষস্থানীয় লিগ জিতেছেন ম্যাক্সওয়েল। বার্সার হয়ে চ্যাম্পিয়নস লিগ জয়ের স্বাদ পেয়েছেন তিনি। সবমিলিয়ে চারটি ক্লাবের হয়ে ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডার ৩৭টি ট্রফি জিতেছেন।
আন্দ্রেস ইনিয়েস্তা: বার্সেলোনার সর্বকালের সেরা ফুটবলারদের একজন আন্দ্রেস ইনিয়েস্তা। আন্তর্জাতিক ফুটবলের সর্বোচ্চ সাফল্য বিশ্বকাপ জেতা এই স্প্যানিশ মিডফিল্ডার ক্লাব ফুটবলেও সফল। সর্বকালের সেরা মিডফিল্ডারদের একজন ভাবা হয় তাকে। বার্সার একাডেমি লা মাসিয়া থেকে উঠে এসেছেন তিনি। ২০০২ সালে কাতালানদের জার্সিতে অভিষেক হয় তার। অনেকেই ধরে নিয়েছিলেন বার্সার হয়েই অবসরে যাবেন তিনি।
কিন্তু ক্যারিয়ারের অন্তিমলগ্নে ঠিকানা পাল্টায় তার। ন্যু ক্যাম্প ছেড়ে জাপানি ফুটবল ক্লাব ভিসেল কোবেতে নাম লেখান তিনি। বর্তমানে এই ক্লাবেই খেলছেন তিনি। ক্লাব ক্যারিয়ারে সর্বমোট ৩৭টি ট্রফি জিতেছেন স্প্যানিশ কিংবদন্তি। বার্সার হয়ে ৬৭৪টি ম্যাচ খেলে নয়টি লা লিগা, চারটি চ্যাম্পিয়নস লিগ জিতেছেন তিনি। এ ছাড়া জাতীয় দল স্পেনের হয়ে দুটি ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ ও একটি বিশ্বকাপ জিতেছেন ইনিয়েস্তা।
দ্যানি আলভেজ: বার্সেলোনার সর্বকালের সেরা যে দলটা ছিল তার অন্যতম সদস্য ছিলেন ড্যানি আলভেজ। মেসি, পিকে, ইনিয়েস্তাদের মতো এই ব্রাজিলিয়ান তারকার গুরুত্ব ছিল বার্সায়। আধুনিক যুগের অন্যতম সেরা রাইট-ব্যাক হিসেবে ধরা হয় তাকে। ২০০৮ সালে স্প্যানিশ আরেক ক্লাব সেভিয়া থেকে বার্সেলোনায় যোগ দেন আলভেজ। এখানে ৩৯১টি ম্যাচ খেলেছেন তিনি। তবে ডিফেন্ডার হলেও আক্রমণেও পারদর্শী ছিলেন ২১টি গোল করা আলভেজ। ক্যারিয়ারের শেষলগ্নে বার্সা ছেড়ে জুভেন্টাস ও প্যারিস সেন্ট জার্মেইর জার্সিতে আলো ছড়িয়েছেন তিনি। ইউরোপিয়ান ফুটবলের পাঠ চুকিয়ে আলভেজ ফিরে গেছেন জন্মভূমি ব্রাজিলে। সেখানে সাও পাওলোর হয়ে খেলছেন তিনি।
গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...
খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর
Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.
Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.