আগামীকাল শুক্রবার মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স-রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরু ম্যাচ দিয়ে শুরু হচ্ছে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) ১৪তম আসর। ফ্র্যাঞ্চাইজিভিত্তিক এই টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণকারী আট দলকে নিয়ে তৈরি করা হয়েছে বিশেষ প্রতিবেদন। আজকের আয়োজনে থাকছে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স। টুর্নামেন্টে দলটির সম্ভাবনা, শক্তিমত্তা, দুর্বলতা, তথা মৌলিক বিষয়গুলো তুলে ধরা হলো টোয়েন্টিফোর লাইভ নিউজপেপারের পাঠকদের জন্য:

mumbi indians celebrationটিম মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের উদযাপনের দৃশ্য

আইপিএলের ইতিহাসে সবচেয়ে সফল দল মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স। প্লে-অফ পর্বে খেলা তাদের জন্য নৈমত্তিক ঘটনা হয়ে উঠেছে। আসলে দলটির চোখ সবসময়ই থাকে শিরোপার দিকে। সেই হিসেবে ফাইনাল তাদের জন্য ডাল-ভাত। বরাবরের মতো এবারো চ্যাম্পিয়নশিপের অন্যতম দাবিদার মহারাষ্ট্রের ফ্র্যাঞ্চাইজিটি।

শিরোপা দৌড়ে বরাবরই ফেভারিট মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স। আগের ১৩ আসরে মধ্যে সর্বোচ্চ পাঁচবার শিরোপা জিতেছে ফ্র্যাঞ্চাইজিটি। ট্রফি জয়ে তাদের নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী চেন্নাই সুপার কিংস। তিনবার শিরোপা জিতেছে তারা। এবারো শিরোপা জয়ের পথে মুম্বাইর সবচেয়ে বড় বাধা মনে করা হচ্ছে চেন্নাইকে। দুটো দল সবসময়ই থাকে আলোচনার কেন্দ্রে।

২০০৮ সালে গঠিত হয় মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স। যদিও প্রথম সাফল্যের জন্য তাদের অপেক্ষা করতে হয় ২০১৩ সাল পর্যন্ত। এরপর থেকে এক আসর বিরতি দিয়ে ট্রফি জিতে চলেছে নীল শিবির। গত মৌসুমে সেই ধারা থেকে বেরিয়ে আসে। টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় দল হিসেবে ব্যাক টু ব্যাক চ্যাম্পিয়ন হয়েছে তারা। এর আগে চেন্নাই পরপর দুবার শিরোপা জিতেছিল।

চেন্নাই টানা হ্যাটট্রিক শিরোপা জিতবে পারেনি। মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স পারবে তো ইতিহাস গড়তে? চ্যালেঞ্জ জিততে সম্ভাব্য সেরা দলই গঠন করেছে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নরা। বরাবরের মতো এই মৌসুমেও শক্তিশালী স্কোয়াড, রিজার্ভ বেঞ্চ, বিশ্বমানের কোচ আছে মুম্বাইর। এই দলটার নেতৃত্বের জোয়াল রোহিত শর্মার কাঁধে। ব্যাট এবং মস্তিষ্ক দুটোই সমানভাবে চলে তার।

গত আট মৌসুমের মধ্যে পাঁচবার শিরোপা জিতে আইপিএলকে কিছুটা পানসে বানিয়ে ফেলেছে মুম্বাই। অবস্থান এমন যে এবারের আসরটা অন্যদের জন্য ‘মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স ঠেকাও’র মিশন। কাজটা কঠিন। কারণ মুম্বাই খেলছে একটা দল হিসেবে। এর বাইরে সব টাকার খেলা। এই ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিকদের অর্থের অভাব নেই। আইপিএলের প্রথম দল হিসেবে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের ব্র্যান্ড ভ্যালু দাঁড়ায় এক শ মিলিয়ন ডলার। তাই চাইলেই মোটা অংক খরচ করে পছন্দসই খেলোয়াড়কে নিতে পারে তারা।

শক্তিমত্তা: ব্যাটিং এবং বোলিং দুই বিভাগেই যথেষ্ঠ শক্তিশালী মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স। এই দলে ফিনিশারের অভাব নেই। অন্তত ছয় জন। বিশেষ করে কাইরেন পোলার্ড ও হার্দিক পান্ডিয়ার কথা বলতেই হয়। এই দুজনের কারণে মুম্বাইকে নিয়ে একটার প্রচলন আছে। তা হচ্ছে, মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স ১৩ জন নিয়ে খেলে! আসলেই তাই। এই দুই অলরাউন্ডার দলে থাকা মানে বাড়তি দুজন খেলা। ব্যাটিং কিংবা বোলিং যে কোনোভাবেই প্রতিপক্ষকে ভাবনায় ফেলে দিতে পারেন তারা।

mumbi indians team membersমুম্বাই ইন্ডিয়ান্স টিম

পান্ডিয়া-পোলার্ড মুম্বাইর মিডল ও লোয়ার মিডল অর্ডারে শক্তিমত্তা বাড়িয়ে দেয় কয়েক গুণ। টপ অর্ডারে আছেন রোহিত শর্মা, কুইন্টন ডি কক, ক্রিস লিন, অ্যাডাম মিলনের মতো তারকা ব্যাটসম্যানরা। এ ছাড়া সূর্যকুমার যাদব, ইশান ‍কিশানের মতো ঘরোয়া ক্রিকেটের নিয়মিত পারফরমাররা তো আছেনই। বোলিংয়ে তাদের সবচেয়ে বড় শক্তি পেস বিভাগ।

এই দলেই খেলছেন বিশ্বসেরা দুই পেসার জাস্প্রিত বুমরাহ ও ট্রেন্ট বোল্ট। মুস্তাফিজুর রহমানও ছিলেন। যদিও এই মৌসুমে কাটার মাস্টারকে ছেড়ে দিয়েছে তারা। তাতে করে বাংলাদেশিদের বড় একটা অংশের সমর্থন হারাচ্ছে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স। তবে শচীন টেন্ডুলকার ভক্তরা নতুন করে সমর্থন দিতে পারেন দলটাকে। কারণ এবারের আইপিএল মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের জার্সিতে অভিষেক হচ্ছে শচীন-পুত্র অর্জুন টেন্ডুলকারের।

আসলে রোহিতের ইচ্ছেতেই ফিজকে ছেড়ে দেওয়া এবং অর্জুনকে দলে নেওয়া। তার কথা শুনতেই হয়। কারণ রোহিত দলের জন্য শুধু বিধ্বংসী একজন ব্যাটসম্যানই নন, টুর্নামেন্টের ইতিহাসে সবচেয়ে সফল অধিনায়ক। যেমনটা বিপিএলে মাশরাফি বিন মর্তুজা। মুম্বাইর শক্তির বড় উৎস হচ্ছে পঞ্চপাণ্ডব। রোহিত, পোলার্ড, বুমরাহ এবং দুই পান্ডিয়া এই দলটাতে কয়েক বছর ধরে এক সঙ্গে খেলে যাচ্ছেন।

মুম্বাইর কোচিং স্টাফদের মধ্যে শচীন টেন্ডুলকার ও লাসিথ মালিঙ্গা বান্ডারার কথা আলাদাভাবে বলতেই হয়। দুজনই দলটির সাবেক খেলোয়াড়। খেলোয়াড়ি ভূমিকায় শিরোপা জেতানোর পর পরামর্শক হিসেবেও মুম্বাই শিবিরে কার্যকর ভূমিকা রাখছেন। বর্তমানে মালিঙ্গা বোলিং পরামর্শক এবং শচীন ব্যাটিং পরামর্শক হিসেবে কাজ করছেন।

দুর্বলতা: মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের শক্তির বিপরীতে কিছুটা দুর্বলতা আছে। এখানে অবশ্য কারোর হাত নেই। দলটির দুজন কোচিং স্টাফ করোনভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। ইনজুরিতে ভুগছেন দলের অন্যতম সেরা বোলার বুমরাহ। তার বিকল্প হিসেবে ধাওয়ান কুলকারনি, মহসিন খান কিংবা অর্জুন টেন্ডুলকার দারুণ কিছু করতে পারবেন কিনা এনিয়ে সংশয় রয়েছে ঢের।

মুম্বাইর আরেকটা সমস্যা হচ্ছে একাদশ গঠনে মধুর সমস্যা। দলটিতে বিদেশি তারকা ও অলরাউন্ডারের অভাব নেই। সেক্ষেত্রে কাকে রাখে কাকে খেলাবে তারা। এতে করে অধিক সন্ন্যাসীতে গাজন নষ্ট হওয়ার ভয় আছে। মুম্বাইর আরেকটা দুর্বলতা হচ্ছে বিশেষজ্ঞ কোনো রিস্ট স্পিনার নেই। যদিও অন্য কয়েকটা দলে রিস্ট স্পিনার আছে। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে এ ধরনের বোলাররা খুব কার্যকর।

মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স স্কোয়াড: রোহিত শর্মা (অধিনায়ক), কুইন্টন ডি কক (অধিনায়ক), সূর্যকুমার যাদব, ইশান কিশান (উইকেটরক্ষক), ক্রিস লিন, আনমলপ্রিট সিং, সৌরভ তিওয়ারি, আদিত্য তারে, কাইরেন পোলার্ড, হার্দিক পান্ডিয়া, ক্রুনাল পান্ডিয়া, অনুকূল রায়, জাস্প্রিত বুমরাহ, ট্রেন্ট বোল্ট, রাহুল চাহার, জয়ন্ত যাদব, ধাওয়াল কুলকারনি, মহসিন খান, নাথান কল্টার নিলে, অ্যাডাম মিলনে, পিযূষ চাওলা, জেমস নিশাম, যুদ্ভির চারাক, মার্কো জ্যানসেন ও অর্জুন টেন্ডুলকার।

মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স কোচিং স্টাফ:

প্রধান কোচ: মাহেলা জয়াবর্ধনে

ক্রিকেট পরিচালনা অপারেশনস: জহির খান

ব্যাটিং কোচ: রবিন সিং

ব্যাটিং পরামর্শক: শচীন টেন্ডুলকার

বোলিং কোচ: শেন বন্ড

বোলিং পরামর্শক: লাসিথ মালিঙ্গা

ফিল্ডিং কোচ: জেমস প্যামেন্ট

ফিজিওথেরাপিস্ট: নিতিন প্যাটেল

কন্ডিশনিং কোচ: পল চ্যাপম্যান

গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...

খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর

Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.

Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.