লিভারপুলকে উড়িয়ে দিল রিয়াল

সময়টা খুব একটা ভালো যাচ্ছিল না লিভারপুলের। সেই দলটাই মাদ্রিদে আসার আগে সম্ভাব্য সেরা প্রস্তুতি নিয়ে এসেছে। সবশেষ ম্যাচে আর্সেনালকে তাদেরই মাঠে ৩-০ গোলে বিধ্বস্ত করেছে অল রেডরা। কিন্তু রিয়াল মাদ্রিদের সামনে পড়তেই খেই হারিয়ে ফেলল। মঙ্গলবার রাতে চ্যাম্পিয়নস লিগের শেষ আটের প্রথম লেগের ম্যাচে লিভারপুল বিধ্বস্ত হলো ৩-১ গোলে।

দুর্দান্ত এই জয়ে সেমিফাইনালের পথটা সুগম করে ফেলল জিনেদিন জিদানের দল। আগামী সপ্তাহে অ্যানফিল্ড স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় লেগের ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। সেদিন রিয়ালকে ২-০ গোলে হারাতে পারলে শেষ চারের টিকিট পাবে লিভারপুল। কারণ রিয়ালের মাঠে মহামূল্য একটা অ্যাওয়ে গোল পেয়েছে অল রেডরা। কিন্তু ঘরের মাঠে গোল হজম করলেই বিপদ। সেক্ষেত্রে জিততে হবে ৪-১ গোলে!

টুর্নামেন্টের ইতিহাসের সেরা দলের বিপক্ষে এমন জয় আশা করা অমূলক। তা ছাড়া রিয়ালের সামনে পড়তেই কেমন যেন ছন্নছাড়া হয়ে পড়ে লিভারপুল। তিন বছর আগে দুটি ভুলের কারণে শিরোপা হাতছাড়া করেছে ইয়ুর্গেন ক্লপের দল। সেই হিসেবে এবারের সাক্ষাৎটা লিভারপুলের জন্য প্রতিশোধের উপলক্ষ্য ছিল। কিন্তু এদিনও ভুল করে বসল ইংলিশ জায়ান্টরা।

আলফ্রেডো ডি স্টেফানো স্টেডিয়ামে লিভারপুল যে তিনটি গোল হজম করেছে প্রতিটিতেই ছিল রক্ষণ কিংবা গোলরক্ষক অ্যালিসন বেকারের ভুল। যার মাসুল গুণতে হয়েছে বড় ব্যবধানে হেরে। রিয়ালের এই দাপুটে জয়ের নায়ক ভিনিচিয়াস ‍জুনিয়ার। ম্যাচে জোড়া গোল করেছেন এই তরুণ স্ট্রাইকার। অন্য গোলটা এসেছে মার্কো এসেনসিওর সৌজন্যে।

লিভারপুল ম্যাচ থেকে ছিটকে গেছে প্রথমার্ধেই; ৩৬ মিনিটের মধ্যে হজম করে দুই গোল। রিয়ালকে লিড এনে দিয়ে ইতিহাস গড়েন ভিনিচিয়াস। ক্লাবের দ্বিতীয় সর্বকনিষ্ঠ ফুটবলার হিসেবে চ্যাম্পিয়নস লিগের নক আউট পর্বে গোল করলেন ব্রাজিলিয়ান সেনসেশন। এদিন তার বয়স ছিল ২০ বছর ২৬৮ দিন। ১৯৯৬ সালে রাউল গঞ্জালেস জুভেন্টাসের বিপেক্ষ ছিল ১৮ বছর ২৫৩ দিন বয়সে গোল করেছিলেন।

ভিনিচিয়াসের গোলের নয় মিনিটের মধ্যে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন এসেনসিও। ম্যাচটা কার্যত শেষ হয়ে ওখানেই। লিভারপুল দারুণকিছু করতে পারে কিনা সেটাই দেখার ছিল। ৫১ মিনিটে মোহাম্মদ সালাহ রিয়ালকে একটা গোল ফেরত দেন। তাতে সমতায় ফেরার আশা জাগলেও তা হয়নি। বরং ৬৫ মিনিটে আরেকটা গোল হজম করে লিভারপুল। এবারও গোলদাতা ভিনিচিয়াস। ম্যাচজুড়ে অল রেড ডিফেন্ডারদের পুরোদস্তুর চাপে রেখেছেন তিনি।

পক্ষান্তরে দুই ডিফেন্ডার সার্জিও রামোস এবং রাফায়েল ভারানের অনুপস্থিতির পরও রিয়ালের বড় কোনো পরীক্ষা নিতে পারেনি লিভারপুল। বরং ভার্জিল ফন ডাইকের শূন্যতায় এদিনও ভুগেছে অল রেডরা। এই ভঙ্গুর রক্ষণের কারণে মৌসুমজুড়ে ভুগেছে লিভারপুল। যার কারণে শেষ হয়ে গেছে সব শিরোপাস্বপ্ন। বাকি ছিল চ্যাম্পিয়নস। কিন্তু এই অবলম্বনও হাতছাড়া হতে যাচ্ছে। বিদায় চোখ রাঙাচ্ছে তাদের।