মঙ্গলে প্রথম চলল নাসার রোভার

মার্কিন মহাকাশ সংস্থা নাসার মহাকাশযান ‘পারসিভেয়ারেন্স’ মঙ্গলপৃষ্ঠে ৬ দশমিক ৫ মিটারের (২১ দশমিক ৩ ফুট) একটি যাত্রা সম্পন্ন করেছে। ১৮ ফেব্রুয়ারি অবতরণের দুই সপ্তাহ পর প্রথমবারের মতো এ ড্রাইভ দিলো যানটি।

মঙ্গলে প্রথম চলল নাসার রোভার

মহাকাশযানটির প্রকৌশলী আনাইস জারিফিয়ান রোভারটির গতিবিধি নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেছেন, মঙ্গলে চলার পথে যানটি যে চিহ্ন রেখে এসেছে, তা এখনও দেখা যাচ্ছে।

গ্রহের বিষুব অঞ্চল ‘জেযেরো’র কাছে গভীর এক গহ্বরে এ রোবটকে নামানো হয়।

ছয় চাকার এ রোবটযান আগামী দুই বছর মঙ্গল থেকে নমুনা সংগ্রহের কাজ করবে। প্রাচীন হ্রদ এলাকার মাটিপাথরের মধ্যে খনন চালিয়ে এটি অতীত অণুজীবের অস্তিত্ব সন্ধান করবে।

ধারণা করা হয়, জেযেরোয় কয়েক শ কোটি বছর আগে বিশাল একটি হ্রদ ছিল। সেই হ্রদে ছিল প্রচুর পানি, খুব সম্ভবত সেখানে প্রাণের অস্তিত্বও ছিল।

নাসার বিজ্ঞানীরা জানান, রোবটযানটি জেযেরোর বদ্বীপের মতো চেহারার একটি অংশের দুই কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে অবতরণ করেছে। এ এলাকাতেই পারসিভেয়ারেন্স তার অনুসন্ধান কাজ চালাবে।

মঙ্গলে প্রথম চলল নাসার রোভার

পয়তাল্লিশ কিলোমিটার চওড়া জেযেরো’র নামকরণ করা হয় বসনিয়া-হার্জেগোভিনার একটি শহরের নামে। স্লাভিক অঞ্চলের কোনো কোনো দেশের ভাষায় ‘জেযেরো’ শব্দের অর্থ ‘হ্রদ’।

জেযেরোতে বিভিন্ন ধরনের পাথর রয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে মাটিপাথর এবং কার্বোনেটস।

বিজ্ঞানীদের উৎসাহের কারণ হলো, এ ধরনের পাথরের যে কোনো রকম অণুজীবের অস্তিত্ব সংরক্ষণের ক্ষমতা রয়েছে। ফলে সুদূর অতীতে এ গ্রহে যদি প্রাণের অস্তিত্ব থেকে থাকে, তাহলে এ পাথরের মধ্যে তার ইঙ্গিত মেলার আশা করছেন তারা।

প্রাচীন হ্রদের যেটা তীর ছিল, সেখানে পলির মতো যে সেডিমেন্ট রয়েছে, তাকে বলা হচ্ছে ‘বাথটাব রিং’। বিজ্ঞানীরা সেটা বিশ্লেষণ করতে বিশেষভাবে আগ্রহী। পৃথিবীতে যেটাকে স্ট্রোমাটোলাইট বলা হয়, এখানে তার সন্ধান চালাবে পারসিভেয়ারেন্স।

স্ট্রোমাটোলাইট হলো ব্যাকটেরিয়ার নিঃসরণ থেকে তৈরি জমাটবাঁধা পদার্থ। পৃথিবীতে প্রাণের প্রথম অস্তিত্ব পাওয়া গিয়েছিল স্ট্রোমাটোলাইটের জীবাশ্ম থেকে।