‘আমি ইহুদি হয়েও চাই মানুষ ইসরাইলকে বর্জন করুক’

‘জিউস ভয়েস ফর পিস’- যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক একটি মানবাধিকার সংস্থা। নাম দেখেই নিশ্চয় বুঝতে পারছেন এটি ইহুদিদের পরিচালিত একটি প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী কর্মকর্তা রেবেকা ভিলকোমারসনের মন্তব্য, ‘আমি ইহুদি হয়েও চাই মানুষ ইসরাইলকে বর্জন করুক।’

ইসরাইল তাদের প্রতিবেশী ফিলিস্তিনের উপর ঠিক কী ধরনের অত্যচার করে তা স্বচক্ষে দেখেছেন ভিলকোমারসন। এমন কি তেলআবিবের রাস্তায় ইসরাইলের বিরুদ্ধে বিক্ষোভও করেছেন তিনি। নির্বিচারে ফিলিস্তিনের নারী- শিশুদের হত্যা তিনি সহ্য করতে পারেননি।

ভিলকোমার্সন সম্প্রতি ওয়াশিংটন পোস্টে ফিলিস্তিনিদের উপর ইসরাইলের অত্যচার নিয়ে একটি প্রবন্ধ লিখেছেন। প্রবন্ধটির শুরুতেই তিনি বলেছেন, ‘২০০৯ মালে অপারেশন কাস্টের সময় আমি তেল আবিবে ছিলাম। সে সময় ইসরাইলের হামলায় ১৪০০ ফিলিস্তিনি প্রাণ হারান। পরে আমরা কয়েকজন এর প্রতিবাদে তেল আবিবের রাস্তায় নেমেছিলাম। কিন্তু বেশির ভাগ আমাদের উপর ডিম নিক্ষেপ করে এবং ভয় দেখিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়।’

ভিলকোমারসন লিখেছেন, ‘এর কিছুদিন পর বাচ্চাকে নিয়ে স্কুলে গেলে অন্য অভিভাবকরা আমার দিকে কেমন ভাবে যেনো তাকালো। আমি তাদের জানালাম ৪০ মাইল দূরে চালানো হত্যাযজ্ঞ আমি মেনে নিতে পারছি না। তারা তখন ইসরাইলের পক্ষ নিয়ে আমাকে গালাগাল করতে লাগলো।’

ইসরাইলের বিরুদ্ধে একটা বৈশ্বিক জনমতের কথা উল্লেখ করে ভিলকোমারসন বলেন, ‘এরপর আমি বর্জন- পরিত্যাগ ও নিষেধাজ্ঞা আন্দলোনে যোগ দেই। ইসরাইলের পতনের জন্য বিশ্বের বহু মানুষ এই আন্দোলনে সম্পৃক্ত হন। কিন্তু বিডিএস নামে বিখ্যাত হয়ে যাওয়া এই আন্দোলন সরকারের কুনজরে পড়া শুরু করেছে। আমার স্টেট নিউইয়র্কের সরকারও এই আন্দোলনে যোগ দেয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের অনুমতি দিয়েছে।’

ভিলকোমারসন বলেন, ‘অপারেশন কাস্টের পরও ইসরাইল ফিলিস্তিনে বহু হামলা চালিয়েছে। এতে বহু ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন। অনেক ফিলিস্তিনিকে আবার ইসরাইল অত্যান্ত বাজেভাবে অবরুদ্ধ করে রেখেছে। এ ছাড়া ইসরাইলের অভ্যন্তরে যে সব ফিলিস্তিনিরা আছেন, তাদের সঙ্গে দ্বৈত আচরণ করা হয়। নানাভাবে তাদেরকে নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত করা হয়।’

ইসরাইল কিভাবে তাদের এমন চরিত্র বদলাবে, তার একটা পথ দেখিয়েছেন ভিলকোমারসন। তিনি বলেন, ‘বহির্বিশ্বের অসহ্য চাপে না পড়লে ইসরাইল তাদের চরিত্র বদলাবে না। বিডিএস হলো এ রকম একটি চাপের নাম। ২০০৫ সালে এই আন্দোলন শুরুর পর ধীরে হলেও ইসরাইল নিজেদের বদলে ফেলেছে। যদিও এখনো বাতাসে কান পাতলেই নির্যাতিতের হাহাকার শোনা যায়। তবে বিডিএসের মাধ্যমে ইসরাইলের নীতিনির্ধারকদের টনক নড়েছে এবং বিশ্ব নতুন কিছু উপলব্ধি করেছে।’

বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য ইসরাইলকে বর্জন করার কথা বলে ভিলকোমারসন লিখেছেন, ‘আমি বিশ্বাস করি ফিলিস্তিন একদিন স্বাধীন হবে। বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য ইসরাইলকে পরিত্যাগ করা দরকার। আসুন সবাই মিলে সেটাই করি।’

আপনি আরো পড়তে পারেন

'লিভ' ভোট দেয়ার আগে জানতাম না 'ইইউ' কী!

ক্যামেরনের পর কে হচ্ছেন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী?

ব্র্রিটেনকে ছাড়াই বসতে যাচ্ছে ইইউ সভা

ইইউ ছাড়ার সিদ্ধান্তে ব্রিটিশ মুদ্রায় ধস

পদত্যাগের ঘোষণা দিলেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ক্যামেরন