বেশ কয়েকদিন হয়ে গেলো ইহলোক ত্যাগ করেছেন আর্জেন্টাইন ফুটবল সুপারস্টার দিয়েগো ম্যারাডোনা। দুর্দান্ত এক ঘটনাবহুল জীবন কাটিয়ে হৃদযন্ত্রের জটিলতায় মৃত্যুবরণ করেন তিনি। এর মধ্যেই আর্জেন্টাইন পুলিশ তার মৃত্যুতে কোনো পক্ষের অবহেলা ছিলো কি না; তা তদন্ত করছে। অন্য দিকে আলোচনা শুরু হয়েছে ম্যারাডোনার সম্পত্তি ভাগাভাগি নিয়ে।

who will get the fortune of maradona

ম্যারাডোনার সম্পদ ভাগাভাগি নিয়ে একটি জটিল পরিস্থিতি সৃষ্টি হচ্ছে— এমন পূর্বাভাস দিয়েছেন আর্জেন্টিনার একজন আইনজীবী। এই পরিস্থিতি যেনো ফুটবল তারকার জীবনের প্রতিবিম্বই হয়ে উঠেছে।

আর্জেন্টাইন এই ফুটবল আইকনের মৃত্যুর পর থেকেই তার সম্পদের ভাগ কারা পাবেন, কীভাবে পাবেন; সে বিষয়ে শুরু হয়েছে জোর সমালোচনা। যে সমালোচনার বড় একটি অংশ দখল করে আছেন ম্যারাডোনার সন্তান দাবিকারি কয়েকজন। জীবদ্দশায় কখনোই যাদেরকে সন্তান হিসেবে ম্যারাডোনা স্বীকৃতি দেননি।

ব্যক্তিগত জীবনে উচ্ছৃঙ্খলতার প্রতিশব্দ হয়ে উঠা ম্যারাডোনা অন্তত আটজন সন্তান রেখে গেছেন। ছয়জন ভিন্ন নারীর গর্ভে এই সন্তানদের জন্ম হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, এই সন্তানদের মধ্যেই ম্যারাডোনার সম্পত্তি সমান ভাগে ভাগ করে দেওয়া হবে।

যেহেতু ম্যারাডোনা তার সম্পত্তি ভাগ-বাটোয়ারা করার বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক দলিল এখে যাননি, সেহেতু তার সম্পত্তির ভাগাভাগির কাজটি অত্যন্ত জটিল হতে যাচ্ছে; এমন ধারণা সম্পত্তি বিশেষজ্ঞদের।

ম্যারাডোনার সন্তান আসলে কতোজন এবং তারা কারা?

নারীঘটিত কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে পড়া, বান্ধবীদের সন্তানের বাবা হওয়া যেনো ম্যারাডোনার বর্ণময় জীবনের সবচেয়ে বড় বিষয় ছিলো। আর্জেন্টাইন সংস্কৃতিতে এই ধরনের ঘটনা খুব একটা বড় ব্যাপার না হলেও, ম্যারাডোনার মতো একজন আইকনের এ রকম উচ্ছৃঙ্খল জীবন পৃথিবীর নানা প্রান্তে সমালোচনার অন্যতম প্রধান বিষয়।

who will get the fortune of maradona 1

ম্যারাডোনার এ বিষয়টি এতোটাই জটিল হয়ে উঠেছিলো যে— একবার তার মেয়েরাই তার এ বিষয়টির উল্লেখ করে কৌতুক করে বলেছিলেন, “বাবা তো চাইলে তার সন্তানদের দিয়েই একটি ফুটবল দল গঠন করে ফেলতে পারেন!”

দীর্ঘদিন সাবেক স্ত্রী ক্লডিয়া ভিলাফেইর গর্ভে জন্মগ্রহণ করা দুই মেয়ে জিয়ান্না ও ডালমার বাইরে কোনো সন্তানকে স্বীকৃতি দেননি ম্যারাডোনা। ২০০৩ সালে ২০ বছরের দাম্পত্য শেষে ক্লডিয়ার সঙ্গে ম্যারাডোনার বিবাহবিচ্ছেদ ঘটে।

এ দুজন ছাড়াও আরো ছয়জনকে নিজের সন্তান হিসেবে স্বীকৃতি দেন ম্যারাডোনা। দীর্ঘ আইনি জটিলতা শেষে ২০১০-এর দশকে দিয়েগো জুনিয়র ও জানাকে নিজের সন্তান হিসেবে স্বীকৃতি দেন এই ফুটবল আইকন। দিয়েগো ও জানার মায়েদের সাথে ম্যারাডোনার প্রেমের সম্পর্ক ছিলো।

২০১৩ সালে জন্মগ্রহণ করেন ম্যারাডোনার দ্বিতীয় ছেলে দিয়েগো ফার্নান্দো। এরপর আর পিতৃত্ববিষয়ক জটিলতায় ম্যারাডোনার নাম সেভাবে আসেনি। কিন্তু ২০১৯ সালে এসে আবার এক বিস্ময়কর খবর বেরিয়ে আসে। এ সময় ম্যারাডোনার আইনজীবীরা জানান যে, কিউবায় জন্মগ্রহণ করা তিনজন সন্তানকে স্বীকৃতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ম্যারাডোনা। ২০০০ সাল থেকে তিনি কিউবায় মাদকের নেশা থেকে চিকিৎসা নেওয়া শুরু করেন। এ সময়ই তিনি ওই তিন সন্তানের জন্ম দেন। এই হলো ম্যারাডোনার স্বীকৃতি পাওয়া আট সন্তান।

এরপরও অন্তত দুজন দাবি করেছেন যে ম্যারাডোনা তাদের জন্মদাতা পিতা। দুজনই আর্জেন্টাইন। একজনের নাম সান্টিয়াগো লারা এবং অন্যজন মাগালি গিল। তারা দুজনই জন্মদাতার স্বীকৃতি পেতে আইনি লড়াই লড়ছেন। ডিএনএ টেস্টের জন্য ম্যারাডোনার মরদেহ উত্তোলন করার দাবি করেছেন তারা। শেষ পর্যন্ত ডিএনএ টেস্টে যদি তাদের দাবি সত্য হয়, তাহলে ম্যারাডোনার সম্পদের অংশীদার তারাও হবেন।

ম্যারাডোনার সম্পদ কিভাবে ভাগ হবে?

ফুটবল ছাড়ার পর ম্যারাডোনার জীবনজুড়ে দুটি বিষয় সবচেয়ে বেশি আলোচিত ছিলো— তার স্বাস্থ্য ও তার সম্পদ। ম্যারাডোনা, তার স্ত্রী-বান্ধবী ও সন্তানরা দীর্ঘদিন ধরে সম্পদ নিয়ে নানা তর্কে-বিতর্কে জড়িয়েছেন।

মেয়ে জিয়ান্না একবার সম্পদ নিয়ে দুশ্চিন্তা প্রকাশ করার পর ম্যারাডোনা এ বিষয়ে প্রথমবার খোলাখুলি কথা বলেন। ইউটিউবে প্রকাশিত এক ভিডিওতে ম্যারাডোনাকে বলতে শোনা যায় যে, “আমি একটা কথা বলতে চাই; সেটা হলো আমার সম্পদ কিছুই রেখে যাবো না— আমি সব দান করে দিবো।”

কিন্তু আর্জেন্টাইন সম্পত্তি আইন অনুসারে কোনো ব্যক্তি কেবল তার সম্পদের এক তৃতীয়াংশ দান করতে পারেন। বাকি অংশ তার সন্তান ও স্ত্রীদের মধ্যে ভাগ হয়ে যাবে। যেহেতু ম্যারাডোনা সম্পত্তি ভাগ করার কোনো ইঙ্গিত রেখে যাননি, এবং মৃত্যুর সময় তার কোনো স্ত্রীও ছিলো না; সেহেতু আইন অনুসারে তার সন্তানদেরই সম্পদের সমান ভাগ পাওয়ার কথা।

গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...

খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর

Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.

Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.