হায়দরাবাদের আইপিএল সাফল্যের তিন নায়ক

প্রথমবার ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) ফাইনালে উঠেই শিরোপা জিতে নিলো হায়দরাবাদ। পক্ষান্তরে তিনবার ফাইনাল খেলেও শিরোপার স্বাদ নেয়া হলো না বেঙ্গালুরু রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্সের। হায়দরাবাদকে এমন কীর্তিমান করার পিছনে ভূমিকা রেখেছেন দলটির তিন খেলোয়াড়।

সেরা ভূমিকা রাখাদের মধ্যে তৃতীয় মুস্তাফিজুর রহমান। তরুণ এই পেসার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলেছেন ভারতের মাটিতে। ফলে তার জন্য ভারতের জল-হাওয়া তেমন অপরিচিত ছিলো না। কিন্তু অচেনা ছিলো ড্রেসিংরুমের আবহ। কারণ মুস্তাফিজ বাংলা ছাড়া অন্য কোনো ভাষায় কথা বলেন না। এই বাধাটা কোনো প্রভাবই খেলতে পারেনি মুস্তাফিজের পারফর্ম্যান্সে।

বাঁ হাতি পেসের চোখ ধাঁধানো শিল্পে মুস্তাফিজ আগেই মাত করেছিলেন বিশ্বকে। ফলে আইপিএলে তিনি কতোটা চমক দেখাবেন তা দেখতে মুখিয়ে ছিলেন সবাই। সবার মুখিয়ে থাকা আগ্রহ মুস্তাফিজ মিটিয়েছেন দারুণ ক্ষমতায়। প্রথম ম্যাচ থেকেই বৈচিত্রপূর্ণ বোলিং সৌন্দর্য দেখিয়েছেন তিনি। তার জন্য মাঠের বাইরে থাকতে হয়েছে বর্তমান বিশ্বের অন্যতম সেরা পেসার ট্রেন্ট বোল্টকে। একটি ম্যাচে ইনজুরির কারণে খেলতে পারেননি মুস্তাফিজ। বোল্ট সুযোগ পেয়েছিলেন কেবল ওই ম্যাচেই।

১৬ ম্যাচে মুস্তাফিজ তুলে নেন ১৭ উইকেট। তার বোলিংয়ে বিপদে পড়তে হয়েছে সব দলের সব ব্যাটসম্যানকেই। ১৬ ম্যাচে ৬১ ওভারে মুস্তাফিজের খরচ ৪২১ রান। অর্থাৎ ওভার প্রতি তিনি দিয়েছেন ৬.৯ রান করে। অন্তত ৫০ বা এর চেয়ে বেশি বোলিং করা বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে কম খরচ করেছেন মুস্তাফিজই। হায়দরাবাদের শিরোপা জয়ে অন্যতম ভূমিকা রেখে তার পারফর্ম্যান্স।

হায়দরাবাদের শিরোপা জয়ে দারুণ ভূমিকা রেখেছেন আইপিএলের সেরা বোলার ভুবনেশ্বর কুমার। ১৭ ম্যাচে ২৩ উইকেট নিয়েছেন তিনি। মুস্তাফিজ এবং ভুবেশ্বরের অনন্য পেস জুটিই মূলত অন্যান্য দলের চেয়ে এগিয়ে দিয়েছে হায়দরাবাদকে।

প্রথমবারের ফাইনালেই সানরাইজার্সের শিরোপা জয়ের এক নম্বর নায়ক নিঃসন্দেহে ডেভিড ওয়ার্নার। শুরুর দিকে তার অধিনায়কত্বে তেমন কোনো চমক না থাকলেও ধীরে ধীরে ঠিকই অসাধারণ নেতা হয়েছেন উঠেন তিনি। তবে অধিনায়ক ওয়ার্নারের চেয়েও চমকে দিয়েছেন ব্যাটসম্যান ওয়ার্নার। মারকুটে ব্যাটসম্যান হিসেবে এমনিতেই পরিচিত তিনি, সেটাই যেনো আবার প্রমাণ করেছেন এই অজি ক্রিকেটার। ১৭ ম্যাচের নয়টিতেই হাফ সেঞ্চুরি করেছেন তিনি। হায়দরাবাদের ব্যাটিং লাইনটাকে কখনোই শক্তিশালী কিছু মনে হয়নি। কিন্তু ওয়ার্নার দারুণ সব ইনিংস খেলে ঢেকে দিয়েছেন সেই দুর্বলতা।

এই দুই পেসার এবং ডেভিড ওয়ার্নার; হায়দরাবাদের স্বপ্নের আইপিএলের তিন প্রাণভোমরা এরাই। এ ছাড়াও হায়দরাবাদের সাফল্যগাথায় নাম আসতে বাধ্য টম মুডি ও ভিভিএস লক্ষ্মণের। দারুণ দক্ষতায় সাদামাটা একটি দলকে পথ দেখিয়ে শিরোপার স্বাদ পাইয়ে দিয়েছেন তারা।

আপনি আরো পড়তে পারেন

আইপিএলের সেরা উদীয়মান মুস্তাফিজ

মুস্তাফিজদের আইপিএল জয়

বেঙ্গালুরুকে হায়দরাবাদের ২০৯ রানের চ্যালেঞ্জ

আইপিএল ফাইনাল খেলছেন মুস্তাফিজ