লাল দুর্গে রূপালি ট্রফি
- Details
- by খেলাধুলা ডেস্ক
আশা জাগিয়ে পারল না প্যারিস সেন্ট জার্মেই (পিএসজি)। প্রথমবারের মতো উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে উঠে শূন্য হাতে বিদায় নিতে হলো ফরাসি জায়ান্টদের। রোববার রাতে লিসবনের শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে পিএসজিকে ১-০ গোলে হারিয়ে বায়ার্ন মিউনিখ উদ্ধার করেছে ইউরোপের শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট। এনিয়ে ষষ্ঠবারের মতো টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হলো জার্মান জায়ান্টরা; দ্বিতীয়বারের মতো ট্রেবল।
ম্যাচটাও হয়েছে দুর্দান্ত। সেয়ানে সেয়ানে লড়াই চলল পুরো দেড় ঘণ্টা। দুই দলের রক্ষণ এবং গোলরক্ষককে দিতে হয়েছে কঠিন পরীক্ষা। স্নায়ুচাপের এই পরীক্ষায় জয় হলো বায়ার্ম মিউনিখের। কিংসলে কোম্যানের মাথাস্পর্শি বল খুঁজে নেয় পিএসজির জালের ঠিকানা। ৫৯ মিনিটে হজম করা গোলটার আর শোধ দিতে পারেননি নেইমার-এমবাপ্পেরা।
টুর্নামেন্টজুড়ে প্রতিপক্ষকে গোলবন্যায় ভাসিয়েছে পিএসজি এবং বায়ার্ন মিউনিখ। যা ফাইনালে জাগায় গোলবন্যার সম্ভাবনা। ম্যাচজুড়ে আক্রমণও হয়েছে যথেষ্ঠ। অথচ পুরো ম্যাচে গোল হলো কিনা মোটে একটা। পিএসজি রক্ষণভাগের ভুল গড়ে দিয়েছে ব্যবধান। জসুয়া কিমিখের ক্রস খুঁজে পায় ওঁৎ পেতে থাকা কোম্যানকে। ফাঁকায় দাঁড়িয়ে থাকা কোম্যান বেশ আরামেই হেড করেন; বল জড়ান পিএসজির জালে।
বায়ার্ন মিউনিখ ফরওয়ার্ডরা যেভাবে ত্রাস ছড়িয়েছে তাতে পিএসজি অন্তত দুই-তিনটা গোল হজম করতে পারতো। সেটা হয়নি থিয়াগো সিলভার সৌজন্যে। ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডার প্রায় একাই যেন লড়েছেন মুলার-লেভানডফস্কিদের সঙ্গে। গেল জুনে চুক্তির মেয়াদ পেরিয়ে যাওয়ার পরও এ জন্যই বোধহয় তাকে রেখে দিয়েছিল পিএসজি। বিদায়ী ম্যাচে অধিনায়ক সিলভার এমন পারফরম্যান্স সমর্থকদের আক্ষেপ বাড়িয়ে দিচ্ছে।
কম বেগ পেতে হয়নি বায়ার্ন মিউনিখ ডিফেন্ডারদেরও। তবে নেইমার-এমবাপ্পে-ডি মারিয়াদের বিরুদ্ধে আসল পরীক্ষা দিতে হয়েছে ম্যানুয়েল ন্যুয়ারকে। চার-পাঁচবার বায়ার্নকে গোলের হাত থেকে বাঁচিয়েছেন জার্মান গোলরক্ষক। ন্যুয়ার প্রমাণ করেছেন এখনো কেন বিশ্বসেরা তিনি। বায়ার্ন শেষ প্রহরী গড়ে তোলেন চীনের প্রাচীর।
যা ভাঙতে পারেননি পিএসজি ফরওয়ার্ডরা। ওই ন্যুয়ারের কারণেই ফাইনালের গল্পটা অন্যরকম হয়নি। ম্যাচ শুরুর কয়েক মিনিটে বায়ার্ন মিউনিখের দুর্গ কাঁপিয়ে দিয়েছিলেন নেইমার। ব্রাজিলিয়ান স্ট্রাইকার সেরা ছন্দে না থাকলেও খারাপ খেলেননি একেবারে। তবে নিষ্প্রভ ছিলেন কিলিয়ান এমবাপ্পে। নেইমারকে পুরোপুরি আটকাতে পারেননি বায়ার্ন ফুটবলাররা। দুই-চারজন যেন তাকে নিয়েই ব্যস্ত ছিলেন।
তবু প্রতিপক্ষের ফাঁক গলে কয়েকবারই সতীর্থদের গোলের সুযোগ তৈরি করে দিয়েছিলেন। বায়ার্ন মিউনিখ ফুটবলারদের লক্ষ্যবস্তুও হয়ে উঠেছিলেন নেইমার। বাভারিয়ানদের শারীরী ফুটবল কয়েকবার চোট শঙ্কা জাগিয়েছিল তার। ইনজুরিতে পড়ার শঙ্কা হয়েছিল এমবাপ্পেরও। সেটাও পেছন থেকে ট্যাকলের কারণে। দ্বিতীয়ার্ধের মাঝামাঝিতে তো বায়ার্নের ডি-বক্সে পেছন থেকে ফাউল হয়েছিলেন ফরাসি তারকা।
যা এড়িয়ে গেছে রেফারির চোখ। ভিএআরের সহায়তা নিলে হয়তো পেনাল্টি পেতে পারতো পিএসজি। এ ছাড়া ম্যাচে কয়েকটা মুহূর্তে রেফারির নীরব ভূমিকা হতাশ করেছে পিএসজিকে। এনিয়ে রেফারিকে ধুয়ে দিয়েছেন দলটির কোচ টমাস টুখেল। স্ক্যাচে ভর করে হাঁটতে দেখা গেছে তাকে। ডাগ আউটে ম্যাচের সিংহভাগ সময় আইস-বাক্সের ওপর বসা ছিলেন তিনি।
তার চেষ্টা বৃথা গেছে। স্বপ্নপূরণের খুব কাছে গিয়েও হাতছোঁয়া দূরত্বে ফিরে এলো টুখেলের পিএসজি। বায়ার্নের ভাগ্য যে খুব ভালো ছিল তাও কিন্ত নয়। ম্যাচ শুরুর দিকে লেভানডফস্কির শট ফিরে আসে পিএসজির পোস্টে লেগে। সেই দুঃখ বাতাসে মিলিয়ে গেছে সাত বছর পর ফের বায়ার্ন চ্যাম্পিয়ন হওয়ায়। পিএসজির জন্য সান্ত্বনার উপলক্ষ্য হয়ে থাকল প্রথমবার ফাইনালে ওঠাটা।
সেমিফাইনালের লাইন আপ নিশ্চিত করে দিয়েছে ট্রফি যাচ্ছে ফ্রান্স কিংবা জার্মানিতে। আক্ষরিক অর্থে সেমিফাইনালে লড়াই হয়েছে দুই দলের। যেখানে ছিল ১-১ সমতা। ফাইনালে কি হয় সেটাই দেখার অপেক্ষা ছিল। শ্বাসরুদ্ধকর ফাইনালে ফরাসি সৌরভ ছড়ায়নি। পিএসজির স্বপ্নটা অধরা থেকে গেল। জয় হলো জার্মান যন্ত্রের।
এই জয়ের সঙ্গে দুর্দান্ত একটা রেকর্ড হয়েছে বায়ার্ন মিউনিখের। চ্যাম্পিয়নস লিগের প্রথম দল হিসেবে এক মৌসুমের সবকটি ম্যাচ জিতে শিরোপা জিতেছে বাভারিয়ানরা। তবে থেমেছে পিএসজির গোলযাত্রা। রেকর্ড টানা ৩৫ ম্যাচে গোল করার পর জালের ঠিকানা খুঁজে পেল না পিএসজি। ফরাসি জায়ান্টদের জন্য সান্ত্বনা, রিয়াল মাদ্রিদের টানা ৩৪ ম্যাচে গোল করার রেকর্ড ভাঙাটা।
গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...
খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর
Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.
Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.