বায়ার্নের গোলবন্যায় ভেসে গেল বার্সা

অবিশ্বাস্য, অভূতপূর্ব, অকল্পনীয়, অনুনমেয় কিংবা অতুলনীয়। উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগের কোয়ার্টার ফাইনালে বার্সেলোনাকে বায়ার্ন মিউনিখ যেভাবে হারাল সেটার বিশেষণ হতে পারে এ রকম অনেককিছুই। কাল রাতে পর্তুগালের লিসবনে আকাশছোঁয়া বিস্ময় উপহার দিয়েছে বাভারিয়ান জায়ান্টরা।

সেমিফাইনালে ওঠার ম্যাচে বার্সেলোনাকে ৮-২ গোলে চূর্ণ করেছে বায়ার্ন মিউনিখ। দুঃস্বপ্নের এই হারে টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে গেলেন লিওনেল মেসি অ্যান্ড কোং। বার্সাকে পিষিয়ে জার্মান ক্লাবটি উঠে গেল সেমিফাইনালে। শেষ চারের ম্যাচে তাদের প্রতিপক্ষ অলিম্পিক লিওঁ কিংবা ম্যানচেস্টার সিটি।

দশ গোলের অবিশ্বাস্য ম্যাচের শুরুটা অমন একপেশে ছিল না। প্রথম সাত মিনিটে দেখেছে দুই গোল! বার্সার জাল কাঁপিয়ে লিড নেয় বায়ার্ন মিউনিখ। গোল করেন টমাস মুলার। সমতায় ফিরতে অবশ্য কাতালানরা খুব একটা সময় নেয়নি। গোলটাও বার্সার কেউ করেননি। তাদের উপহারসূচক আত্মঘাতী গোলটা দিয়েছেন ডেভিড আলাভা।

ব্যাক ভলি করতে গিয়ে নিজেদের জালে বল জড়িয়ে ফেলেন অস্ট্রিয়ান ডিফেন্ডার। বায়ার্ন গোলরক্ষক ম্যানুয়েল ন্যুয়ার হতভম্ব হয়ে দেখলেন শুধু। এমন স্নায়ুরুদ্ধ শুরুর পর ভোজবাজির মতো পাল্টে গেল সবকিছু। বার্সাকে নিয়ে ছেলেখেলায় মেতে ওঠেন হানসি ফ্লিকের শিষ্যরা। ম্যাচের আধঘণ্টার মধ্যে চার গোল করে ফেলে বায়ার্ন!

এরপর খানেকটা সময় গোলখরা। ৫৭ মিনিটে কাটে খরা। গোল করে বার্সার সম্মানজনক হারের প্রয়াস চালালেন লুইস সুয়ারেজ। এই গোলটা যেন আরো তাতিয়ে দিয়েছে বাভারিয়ানরা। পরের ৩২ মিনিটে জার্মান ক্লাবটি করল চার গোল। বিপর্যস্ত বার্সা। মৌসুমজুড়ে রক্ষণভাগ নিয়ে ভোগা মেসিরা শেষ ম্যাচে দেখলেন চূড়ান্ত পরিণতি!

শেষ আট মিনিটে বার্সা হজম করেছে তিন গোল। তাতেই দুঃস্মৃতির রেকর্ডের ঝড় বয়ে গেল মেসিদের ওপর দিয়ে। ৭৪ বছরের মধ্যে প্রথমবার এক ম্যাচে আট গোল হজম করল কাতালানরা। চ্যাম্পিয়নস লিগের মঞ্চে এটাই তাদের সবচেয়ে বড় হার। টুর্নামেন্টের কোয়ার্টার ফাইনালেও সবচেয়ে বেশি গোলের নজির গড়ল বায়ার্ন।

ফিলিপ্পে কুতিনহোকে ধারে খেলতে পাঠিয়েছিল বার্সা। সেই ঘরের ছেলেও শেষ দিকে বেঞ্চ ছেড়ে এসে মেরেছেন জোড়া ছোঁবল। ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডারের মতো অধিনায়ক মুলারের গোল সংখ্যা দুটি। বাকি চারটি গোল করেছেন ক্রিশ্চিয়ান পুলিসিচ, সার্জি জিন্যাব্রি, জশুয়া কিমিখ ও রবার্ট লেভানডস্কি।